ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে জাতীয় পার্টি মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলছেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরিবেশ মোটেই ভালো ছিল না। সিটি নির্বাচনে মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেনি। ভোটের পরিবেশ সুন্দর করতে হবে। যদি ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনেও একই অবস্থাই চলে তাহলে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে আমরা অংশ নেব কি না ভাবতে হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা-১৭ আসনে দলটির প্রার্থী মেজর (অব.) সিকদার মো. আনিসুর রহমানের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কাউকে লিখিত দিয়ে রাজনীতি করে না। আমরা কারও এজেন্ট নই, কারও পক্ষে কাজ করা আমাদের রাজনীতি নয়। আমরা আমাদের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমার ৩০০ আসনেই নির্বাচন করার সাহস রাখি। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। সকল ভোটার যেন নির্ভয়ে কেন্দ্রে আসতে পারে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে হবে। অবস্থান কর্মসূচি নয়, মারামারি নয়— ভোটের মাধ্যমে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের প্রতিবাদ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এমন পরিবেশ সৃষ্টি করে যাতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে না পারে। সিলেট সিটি নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত ছিল। আওয়ামী লীগ সারাদেশ থেকে গুণ্ডাপাণ্ডা নিয়ে ও বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। অবস্থা যেন এমন, আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ভোট দিতে গেলে সুরক্ষিত থাকবে, আর এর বাইরে যারা তাদের সমস্যা হবে। ভোটাররা নির্ভয়ে কেন্দ্রে না গেলে তাকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলা যায় না। আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি না হলে সুষ্ঠু পরিবেশ সম্ভব নয়। বরিশাল সিটি নির্বাচনে লাঙ্গলের অনেক সমর্থককে আটক করে ৮ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শাসক দলের কারও নামে মামলা থাকলে আটক করা হয় না। কিন্তু অন্য দলের কারও নামে মামলা থাকলে তাদের নির্বাচনের আগে আটক করা হয়।’
জাতীয় পার্টি মহাসচিব আরও বলেন, ‘ঢাকা-১৭ আসন জাতীয় পার্টির। এই আসনে আমাদের প্রিয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচিত ছিলেন। এই আসনে বিজয়ী হতে আমাদের পক্ষে অনেক ইতিবাচক দিক আছে।’
ঢাকা-১৭ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মেজর (অব.) সিকদার মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা-১৭ আসনে আমাদের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংসদ সদস্য ছিলেন। এই এলাকার উন্নয়ন ও বাসিন্দাদের সুখের জন্য পল্লীবন্ধুর অনেক স্বপ্ন ছিল। আমরা সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত একটি সুখি-সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। সত্য, ন্যায় ও উন্নয়নের প্রতীক লাঙ্গল।’ এ সময় সবাইকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিতে আহবান জানান তিনি।
এ সময় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মো: সামছুল হক ও সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু বক্তব্য দেন।