ঢাকা: অবশেষে ঢাকাবাসীর জন্য এক প্রশান্তির সকাল। দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরের তালিকায় থাকা রাজধানী আজ নিঃশ্বাসের জন্য নিরাপদ।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের প্রকাশিত তথ্যমতে, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) মাত্র ৪৪— যা বিশুদ্ধ বাতাসের পর্যায়ে পড়ে।
গত রাতের বৃষ্টির পর ঢাকার বাতাসে এই বিরল পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। শুধু তাই নয়, আজকের তালিকায় দূষিত শহরের ক্রম অনুযায়ী ঢাকার অবস্থান ৮৫তম, যা একদিন আগেও ছিল ৬০তম। এদিন ঢাকার বাতাস ছিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির চেয়েও বিশুদ্ধ।
বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা (একিউআই ১৭১)। এরপর রয়েছে জাকার্তা, কুচিং, বাগদাদ এবং দিল্লি—যাদের বায়ুমান ১৫০-১৭০-এর মধ্যে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎস হলো অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (PM2.5), যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। নিয়মিত এই দূষণের ফলে বাড়ে শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা, হৃদরোগ এবং এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বিশ্বে বছরে প্রায় ৬৭ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। ২০২৩ সালে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা মতে, শুধুমাত্র জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন বায়ুদূষণে প্রতিবছর মারা যায় ৫২ লাখ মানুষ।
বায়ু বিশুদ্ধ হলেও সচেতনতা জরুরি বলে মনে করছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, ইটভাটা, শিল্পকারখানা ও নির্মাণস্থলে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দূষণ বাড়ে। এজন্য নির্মাণকাজে ছাউনি দেওয়া, পানি ছিটানো এবং ধোঁয়া সৃষ্টি করে এমন যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বিশুদ্ধ বাতাসের এই বিরল দিনটি যেন বারবার ফিরে আসে— এমনটিই এখন প্রত্যাশা সচেতন ঢাকাবাসীর।