আড্ডায় উঠে এলো ‘যদি একদিন’-এর গল্প
২৭ জুন ২০১৮ ১৫:০৫
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট।।
মঙ্গলবার, চলচ্চিত্রাঙ্গন এমন অনেক মঙ্গলময় দিন পার করলেও বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়ার জন্য মঙ্গলবার বয়ে এনেছে মঙ্গলবার্তা। একইসঙ্গে দিনটি ছিল তাদের জন্য নতুন এবং আনন্দের। কারণ, প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো তাদের নাম লিখিয়েছে চলচ্চিত্র প্রযোজনায়।
আর প্রথম ছবিতেই প্রতিষ্ঠানটি ভরসা রেখেছে এ প্রজন্মের জনপ্রিয় নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ওপর। গতকাল (২৬ জুন) রাতে রাজধানীর বেঙ্গল স্টুডিওতে ছবির শিল্পী ও কলাকুশলিদের নিয়ে এক আড্ডা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘যদি একদিন’ ছবিতে একসঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করবেন সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত তাসকিন রহমান এবং কলকাতার জনিপ্রয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। ছবির কাহিনী যে রুপকথা নামের শিশুটিকে নিয়ে বিস্তৃত হয়েছে সেই চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিশুশিল্পী আফরিন। গল্প লিখেছেন আসাদ জামান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিচালক রাজ, ছবি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারনা দেন। শোনান ছবিটি শুরু হওয়ার গল্প। ‘ছবিটি শুরু করার আগে আমি বেশকিছু চিত্রনাট্য পাঠিয়েছিলাম শ্রাবন্তীকে। ওনার গল্প পছন্দ হচ্ছিলো না। বেশ কয়েকটি চিত্রনাট্য পাঠানোর পর ‘‘যদি একদিন’’ সিনেমার চিত্রনাট্য পছন্দ করেন তিনি। তখন আমি কলকাতা যাই। শ্রাবন্তী তখন শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আমি শুটিং স্পটে গিয়ে মেক-আপ রুমে বসে তাকে গল্পটি শোনাই। তারপর তিনি বাংলাদেশে শুটিং করতে আসেন। তখন মনেই হয়নি তার সঙ্গে আমার এটি প্রথম কাজ। এর আগে তাহসানকে গল্প শুনিয়েছি। তিনি গল্প শুনেই অভিনয় করতে রাজি হয়ে যান। শুধু তাই নয় এই ছবির জন্য তার অনেক অবদান রয়েছে। আর তাসকিনকে আমি প্রথম দেখি ঢাকা অ্যাটাক ছবিতে। মুখোমুখি দেখা হয় শুটিংয়ের আগেরদিন।’
ছবির গুরত্বপূর্ণ শিশুশিল্পী চরিত্রে অভিনয় করা আফরিনকে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মেধাবী হিসেবে উল্লেখ করেন পরিচালক। ‘শিশুশিল্পী চরিত্রে অভিনয় করার জন্য আমরা অনেক শিশুর অডিশন নিয়েছিলাম। অনেককে কথাও দিয়েছিলোম। কিন্তু হঠাৎ একদিন টেলিভিশনে আফরিনের অভিনয় দেখি। ওকে নির্বাচিত করি। যদিও আফরিনকে দেখে আমার মেন হয়েছিল পারবে না। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সে রিহার্সেল ছাড়াই ক্যামেরার সামনে অসাধারণ অভিনয় করেছে।’
সংগীত শিল্পী হলেও তাহসান এখন অভিনয়ের পরিচিত মুখ। অভিনয়ে তার নাম বাঁচিয়ে রাখবে এই সিনেমা, আশা তাহসানের। ‘আমরা মানে শিল্পীরা অনেক ধরনের কাজই করে থাকি। তার অধিকাংশ কাজই মানুষ ভুলে যায়। অল্প কিছু কাজই আছে, যা মানুষ যুগ যুগ মনে রাখে। ‘‘যদি একদিন’’ ছবিটি আমিসহ আমাদের পুরো টিমকে চিরকাল বাঁচিয়ে রাখবে। ছবির গল্প শোনার প্রথম দিন থেকেই আমি গল্পের প্রেমে পড়ে ছিলাম। একজন শিল্পী হিসেবে চিন্তা করি, আমার কাজটি যেনো সবার কাছে পৌঁছায়। সবার মনে জায়গা করে নেয়। আমার জীবনের ইচ্ছা ছিল, যদি জীবনে একটি ছবি করি তাহলে সেটা যেনো মানসম্মত হয়। আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে’।
‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত অভিনেতা তাসকিন রহমানের কাছে তার ক্যারিয়ারের জন্য এই ছবিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘যদি একদিন’ ছবিকে তিনি বলেছেন ভালোবাসার ছবি। ‘ছবিটি নির্মিত হয়েছে ভালোবাসা নিয়ে। আমার মতে রাগ, অভিমান, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, হিংসা-এই সবকিছুই থাকে ভালোবাসার মধ্যে। এই ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে আমি ভালোবাসা পেয়েছি। আমিও চেষ্টা করেছি আমার চরিত্র সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে। আমি নিজেকে অনেক ধন্য মনে করছি।’
অনুষ্ঠানে সবার আগ্রহ ছিল কলকাতা থেকে উড়ে আসা শ্রাবন্তীর কথা শোনার। যৌথ প্রযোজনার বাইরে বাংলাদেশের কোনো ছবিতে প্রথম অভিনয় করলেন তিনি। ‘যদি একদিন’ ছবিকে নিজের খুব কাছের মনে করছেন এই অভিনেত্রী। ‘অনেকদিন ধরে ছবিটি নিয়ে পরিকল্পনা করছি। একটি ছবির গল্পটাই আসল। গল্প ভালো হলে ছবি ভালো হবে। এই ছবিটির গল্প এতোটাই সুন্দর যে, রাজ কলকাতায় যখন আমাকে গল্পটি শোনায় তখন আমি রাজি হয়ে যাই।’
অনুষ্ঠানে ছবির অভিনয় শিল্পী, কলাকুশলীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ছবির প্রযোজক ও আরটিভির প্রধান নির্বাহি সৈয়দ আশিক রহমান, নির্বাহী প্রযোজক দেওয়ান শামসুর রকিব, কিংবদন্তী অভিনেতা ফারুক, জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ, নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহন, জাকির হোসেন রাজুসহ আরও অনেকে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন সেপ্টেম্বরে মুক্তি পেতে পারে ছবিটি।
ছবি: আশীষ সেনগুপ্ত
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ
তাসকিন রহমান তাহসান খান মুহম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ যদি একদিন শ্রাবন্তী