বর্ষার মাস আষাঢ়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করেছে মাসব্যাপী ‘আষাঢ়ের উৎসব’। মঙ্গলবার (৩ জুন) গণমাধ্যমকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে নানা আয়োজন আর সংস্কৃতির বৈচিত্র্যে ভরপুর এ উৎসব চলবে জুন মাস জুড়ে। আয়োজনগুলোতে স্থান পেয়েছে লোকজ ঐতিহ্য, আধুনিক নাট্যচর্চা, সঙ্গীত, চলচ্চিত্র, ভাস্কর্য, চারুকলা ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড।
মাসজুড়ে সারা দেশে কর্মসূচি _
আষাঢ়ের উৎসবের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে বিভিন্ন থিয়েটার ও প্রযুক্তিনির্ভর কর্মশালা, যেমন ‘সাউন্ড ও লাইট সংক্রান্ত যন্ত্রপাতির নিরাপত্তামূলক ব্যবহারের কর্মশালা’। জেলা ও কেন্দ্রীয় মিলনায়তন সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অংশগ্রহণে ১৫-১৮ জুন পর্যন্ত জাতীয় নাট্যশালায় এই কর্মশালাগুলো হবে।
বিভিন্ন জেলায় ৩ দিনব্যাপী পুতুল নাট্য উৎসব, যাত্রাপালা নির্মাণ ও প্রদর্শনী, মুকাভিনয় উৎসব, এবং নাট্য রচনা ও নির্মাণ কর্মশালা আয়োজনের মধ্য দিয়ে থিয়েটারপ্রেমীদের জন্য থাকছে নান্দনিক অভিজ্ঞতা।
শিল্প, গবেষণা ও শিশু-কিশোরদের নিয়ে আলাদা আয়োজন _
শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতা বিকাশে ১৬টি স্কুলে নাট্যপ্রশিক্ষণ ও উপস্থাপনার আয়োজন করেছে একাডেমি। এছাড়া, ‘লাঠিখেলায় নাট্যভাষা’ শীর্ষক নাট্য নির্মাণ কর্মশালা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ১২-২৭ জুন পর্যন্ত।
চারুকলা বিভাগ আয়োজন করছে ছাপচিত্র কর্মশালা, বাঁশ ও বেত শিল্প প্রশিক্ষণ, এবং স্বদেশনামা শীর্ষক সেমিনার। পাশাপাশি ‘আর্ট অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স’ ও কাইয়ুম চৌধুরীর শিল্পকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী ও সেমিনারও রয়েছে জুনের কর্মসূচিতে।
গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ আয়োজন করেছে আলোচিত আলোকচিত্রশিল্পী আমানুল হক, নওয়াজেশ আহমেদ, রশিদ তালুকদার ও আফতাব উদ্দীনকে নিয়ে দুটি পৃথক সেমিনার।
সংগীত, নৃত্য ও ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক সংযোগ _
সুফি ও কাওয়ালি সংগীতের ওপর জেলা পর্যায়ে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ কর্মশালা। ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবস উদযাপনের পাশাপাশি থাকছে মনিষীদের স্মরণ অনুষ্ঠান ও কম্পোজিশন ভিত্তিক প্রযোজনা।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল-এর উদ্যোগে মির্জাপুর, শেরপুর, বগুড়া, কক্সবাজার ও রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত হবে ভাষা ও সংস্কৃতিভিত্তিক লেকচার ওয়ার্কশপ এবং ‘সমতল ও পাহাড়ী সম্প্রীতি উৎসব ২০২৫’।
নতুন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা _
প্রযোজনা বিভাগ আয়োজন করেছে ভিজুয়াল রিয়ালিটি (VR) প্রদর্শনী—যেখানে থাকছে জাতীয় ভাস্কর্য, পোস্টার ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক থিম। ঝিনাইদহ, যশোর, নড়াইল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও কুমিল্লা জেলায় প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ১৬-২৬ জুনের মধ্যে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এ ব্যতিক্রমী আয়োজন দেশের সাংস্কৃতিক জগতকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলেই আশা করা যায়। আষাঢ়ের বৃষ্টিস্নাত দিনে সংস্কৃতির রঙে রাঙানো এই আয়োজন উৎসবে রূপ নেবে সাধারণ মানুষের জন্যও।
