এবারের ঈদে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ যেন সত্যিই তাণ্ডব চালাচ্ছে দেশের সিনেমা হলে। দর্শকের ঢল, টিকিটের লাইন, সিট না পাওয়ার অভিযোগ—সব মিলিয়ে অনেকদিন পর এমন জমজমাট চিত্র দেখা গেছে প্রেক্ষাগৃহে। ঈদের ছুটির মধ্যে দর্শক টানার দিক থেকে ছয়টি মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার মধ্যে সর্বাধিক সাড়া পেয়েছে ‘তাণ্ডব’। শুধু দেশেই নয়, এবার এই ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক পর্দায়ও।
ইতোমধ্যে ইউরোপ, কানাডা এবং আমেরিকার ৬০টিরও বেশি সিনেমা হলে ‘তাণ্ডব’ মুক্তির প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিদেশি বাজারে ছবিটির পরিবেশনার দায়িত্বে রয়েছে প্রযোজনা সংস্থা আর এইচ ফিল্মস ও গ্লোবাল এন্টারটেইনমেন্ট, যার কর্ণধার রাজ হামিদ ও রুবনা রশীদ খান।
তারা জানিয়েছেন, ‘শাকিব খানের সিনেমা মানেই বড় আয়োজন। তার দর্শক শুধু বাংলাদেশেই নয়, প্রবাসে ছড়িয়ে থাকা লক্ষ লক্ষ ভক্ত অপেক্ষায় থাকেন তার ছবি দেখার জন্য। সেই চাহিদা মাথায় রেখেই আমরা প্রথম সপ্তাহেই অন্তত ৬০টি হলে ‘তাণ্ডব’ মুক্তি দিচ্ছি। এটি একসঙ্গে ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডার বিভিন্ন শহরে চলবে।’
‘তাণ্ডব’ আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তির ক্ষেত্রে এবার ভিন্ন রিলিজ স্ট্র্যাটেজি নেওয়া হয়েছে। সাধারণত ঢাকার কোনো একটি হলে প্রিমিয়ার বা একক প্রদর্শনীর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের প্রচলন থাকলেও, এবার একযোগে বিভিন্ন দেশে মুক্তির পরিকল্পনা নিয়েছে পরিবেশকরা।
রাজ হামিদ জানান, ‘আমরা চেয়েছি ছবিটিকে একটি গ্লোবাল টাচ দিতে। একসঙ্গে কয়েকটি দেশে মুক্তির মধ্য দিয়ে আমরা একটি আলোচনার জায়গা তৈরি করতে চাই। বিদেশি বাংলা প্রেক্ষাগৃহগুলোতে এই স্ট্র্যাটেজি খুব কার্যকর হচ্ছে।’
‘তাণ্ডব’ পরিচালনা করেছেন মালেক আফসারী। অ্যাকশন ও থ্রিলারধর্মী এই গল্পে শাকিব খানকে দেখা গেছে একদম নতুন এক অবয়বে। সহশিল্পী হিসেবে আছেন নুসরাত ফারিয়া, তারিক আনাম খান ও ইলিয়াস কাঞ্চন। ছবিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একজন ন্যায়পরায়ণ পুলিশ কর্মকর্তার সংগ্রাম এবং প্রতিশোধের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলা সিনেমার আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ‘তাণ্ডব’ হতে পারে এক নতুন মাইলফলক। প্রবাসে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি এবার লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভারতীয় বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যেও আগ্রহ। ইউরোপের লন্ডন, বার্মিংহাম, রোম, প্যারিস এবং কানাডার টরন্টো, ভ্যাঙ্কুভার থেকে শুরু করে নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, শিকাগোতেও ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে ছবিটি ঘিরে।
সাধারণত বিদেশে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা সিনেমা কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্রদর্শিত হলেও ‘তাণ্ডব’ তার ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র বিশ্লেষকেরা।