এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া বাংলা সিনেমার মধ্যে একটি ছিল আদর আজাদ ও পূজা চেরি অভিনীত ‘টগর’। সিনেমাটি ঘিরে ছিল কিছুটা প্রত্যাশা, বিশেষত তরুণদের মাঝে। তবে মুক্তির পরই সেই প্রত্যাশা ভেঙে পড়ে বাস্তবতার মুখে। স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার, এবং লায়ন সিনেমা—সব মাল্টিপ্লেক্স থেকেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে ‘টগর’।
এই সিদ্ধান্ত দর্শক অনুপস্থিতির কারণে, না কি কৌশলগত সিদ্ধান্ত—তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
সিনেমাটির নায়ক আদর আজাদ নিজেই সামাজিক মাধ্যমে হল লিস্ট শেয়ার করে জানিয়েছেন, “আমরাই মাল্টিপ্লেক্স থেকে ছবিটি এক সপ্তাহের জন্য তুলে নিয়েছি। ঈদের অন্য ছবিগুলোর কারণে ‘টগর’-এর উপযোগী সময়সূচি দেওয়া যাচ্ছিল না। আগামী সপ্তাহে আমরা সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে আবার ফিরব।”
তবে বিশ্লেষক ও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা বিষয়টিকে দেখছেন ভিন্নভাবে। ঈদের মতো সময়ে সিনেপ্লেক্সে দর্শক না পাওয়া মানেই সিনেমাটি বাকিদের তুলনায় দুর্বল পারফর্ম করেছে—এটা চলচ্চিত্রাঙ্গনে একপ্রকার অলিখিত স্বীকৃতি।
সিনেমাটি নিয়ে দর্শকের প্রতিক্রিয়াও খুব একটা ইতিবাচক নয়। ফেসবুক ও ইউটিউব জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে হতাশা ও সমালোচনা। অনেক দর্শক লিখেছেন: ‘টগর সিনেমা দেখে সময় ও টাকা—দুইটাই নষ্ট করলাম।’
কেউ লিখেছেন ‘নির্মাণ দুর্বল, গল্প ছাপোষা, অভিনয়ে আবেগের অভাব—সব মিলিয়ে হতাশ!’
কিছু দর্শক আবার বলেন, ছবির প্রচারণাও ছিল অপর্যাপ্ত। ‘একটা সিনেমার চলার জন্য শুধু মুখচেনা অভিনয়শিল্পী নয়, দরকার গল্প, গতি আর ভালো প্রচারণা।’
যদিও মাল্টিপ্লেক্সে জায়গা হারিয়েছে ‘টগর’, তবে এখনো কিছু একক হলে ছবিটি চলছে। দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকার আজাদ সিনেমা হল, নীলফামারীর বাবু টকিজ, এবং নওগাঁর ফাইভ স্টার সিনেমা হলে প্রদর্শিত হচ্ছে সিনেমাটি।
প্রযোজনা সংস্থা এআর মুভি নেটওয়ার্ক বলছে, তারা দর্শকের চাহিদা বুঝে এবং সময়সূচির ভারসাম্য বজায় রাখতে সিনেমাটি মাল্টিপ্লেক্স থেকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করেছে।
পরিচালক আলোক হাসান ও অভিনেত্রী পূজা চেরির প্রতি দর্শকের প্রত্যাশা ছিল বেশি। কিন্তু ফিল্ম ক্রিটিকরা বলছেন, সিনেমাটির স্ক্রিপ্ট, পরিচালনা ও সম্পাদনায় অসংগতি থাকায় এটি দর্শক ধরে রাখতে পারেনি।
নায়ক আদর আজাদ আশাবাদী—তারা নতুন পরিকল্পনায় মাল্টিপ্লেক্সে ফিরবেন এবং সিনেমাটি দর্শকের মন জয় করবে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় সেই প্রত্যাবর্তন কতটা সফল হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।