দুই বাংলার সবচেয়ে প্রশংসিত ও সম্মানিত অভিনেত্রীদের তালিকা করতে গেলে প্রথম সারিতে থাকবেন জয়া আহসান। বাংলা চলচ্চিত্রে একধরনের সৌন্দর্য, সংবেদনশীলতা আর শিল্পমনস্কতা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি, যা তাকে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতের বাংলা চলচ্চিত্র জগতেও এক সুপ্রতিষ্ঠিত অবস্থান এনে দিয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত দুটি ছবি— ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’। উভয় সিনেমাই দর্শকপ্রিয়তা ও প্রশংসা কুড়িয়েছে। এর রেশ না কাটতেই জয়া ফিরে গেলেন কলকাতায়, কৌশিক গাঙ্গুলীর নতুন সিনেমা ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’–এর শুটিংয়ে।
২০১৯ সালে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছবিতে জয়া আহসান, কৌশিক সেন ও চূর্ণী গাঙ্গুলীর পারফরম্যান্স দর্শক-সমালোচক সবার হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল। সেই গল্পের ধারাবাহিকতায় এবার শুরু হলো ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’—যেখানে সেই মূল চরিত্রগুলো ফিরছে নতুন বাঁকে, নতুন বাস্তবতায়। এবার দলে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছেন ইন্দ্রাশিস রায়।
মহরতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই ছবির কেন্দ্রেও থাকবে সম্পর্ক, আবেগ, মানুষের ভেতরের দ্বন্দ্ব এবং সহাবস্থানের সংগ্রাম।
এই সিনেমা প্রসঙ্গে কলকাতার টিভি ৯ বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়া বলেন, ‘শিল্পীদের কোনো সীমারেখা থাকা উচিত নয়। আমরা যে বাংলায় কথা বলি, সেই ভাষা, আবেগ, সংস্কৃতি আমাদের এক করে রেখেছে। তাই দুই বাংলার শিল্পীদের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।’
জয়ার এই বক্তব্য শুধু অভিনয়ের পরিধিকেই প্রসারিত করে না, বরং এটি এক ধরনের সাংস্কৃতিক দায়িত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ। দুই দেশের রাজনৈতিক ব্যবধান বা সীমান্তের বেড়ার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে মানুষের সঙ্গে মানুষের সংযোগ—এটাই তার বার্তা।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পটভূমির বিষয়গুলো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের। কিন্তু জনগণের হৃদয়ে কোনো বিভাজন নেই, থাকাও উচিত নয়। আমাদের কাজ—ভাষা ও শিল্পের মাধ্যমে সংযোগ গড়ে তোলা।’
জয়া আহসান শুধু অভিনেত্রী নন, তিনি দুই বাংলার একটি সেতু। যিনি তার অভিনয়, চিন্তা ও ব্যক্তিত্ব দিয়ে এই অঞ্চলের শিল্প ও সংস্কৃতিকে এক ক্যানভাসে তুলতে চেয়েছেন। ‘গেরিলা’ থেকে শুরু করে ‘বিনিসুতোয়’, ‘বিসর্জন’ থেকে ‘তারে নাম’—প্রতিটি চরিত্রে তিনি নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন, নিজের সীমাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।