ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি এবার একটি ভিন্ন ভূমিকায় হাজির হয়েছেন—একজন সচেতন মা হিসেবে। সম্প্রতি নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেইজে তিনি একটি দীর্ঘ পোস্টে তুলে ধরেছেন মা হিসেবে তার অভিজ্ঞতা, দুশ্চিন্তা এবং সন্তানকে কেন্দ্র করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা।
পোস্টটির কেন্দ্রে রয়েছে এক কার্টুন চরিত্র— ‘Booba’। কার্টুনটির ছবি তিনি নিজেই মন্তব্যে দিয়েছেন। প্রথমবারের মতো তার ছোট ছেলের পরিচয় হয় এই চরিত্রটির সঙ্গে কাজিন মিমের হাত ধরে। কিন্তু সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তিনি খেয়াল করতে শুরু করেন ছেলের আচরণে পরিবর্তন।
পরীমনি জানান, তার সন্তানদের জন্য মোবাইল ফোন বা যেকোনো ডিজিটাল গ্যাজেট নিষিদ্ধ। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে টিভি পর্যন্ত দেখার অনুমতি নেই। কিন্তু ‘বুবা’ নামের এই নিরব কার্টুনটি তার ছোট ছেলের মধ্যে এমন কিছু আচরণ জন্ম দেয়, যা তিনি আগে কখনো দেখেননি।
কার্টুনটি ভাষাহীন এক চরিত্রকে কেন্দ্র করে, যার আচরণ অনেকটাই এলোমেলো—কখনো হঠাৎ কিছু ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া, কখনো অদ্ভুত সব শব্দে কমিউনিকেট করা। পরীমনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘এটা আমার সন্তানের স্বাভাবিক আচরণে ছিল না।’
তার বক্তব্যে উঠে আসে একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য— শুধু মোবাইল বা স্ক্রিন টাইম নয়, শিশুর জন্য উপযুক্ত না হওয়া কনটেন্টই হচ্ছে প্রধান ক্ষতির উৎস। অনেকেই মোবাইল দিচ্ছেন, আবার কিছু অভিভাবক সময় নিয়ন্ত্রণ করেও ভুল কার্টুন বা ইউটিউব ভিডিও চালিয়ে দিচ্ছেন, যা শিশুদের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আজকাল শিশুদের দেরিতে কথা বলা, মনোযোগহীনতা বা হঠাৎ রাগ-হতাশা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ এ ধরনের ভুল ভিডিও কনটেন্ট।
দুই সপ্তাহ সময় নিয়ে, ধৈর্য আর ভালোবাসা দিয়ে নিজের সন্তানকে তিনি বোঝাতে পেরেছেন— ‘বুবা তোমার জন্য উপযুক্ত নয়।’ আজ তার ছেলে নিজেই বলে, ‘বুবা স্কিপ করো!’ এটা পরীমনির জন্য এক বিজয়ের মুহূর্ত।
পরীমনির এই স্ট্যাটাসটি কোনো হঠাৎ আবেগ নয়, বরং সব অভিভাবকের জন্য একটি বাস্তব শিক্ষা। কার্টুনকে বিনোদনের বাহন ভাবলেই চলবে না—সেটি শিশু বয়সের মানসিক গঠন, সামাজিক আচরণ এবং ভাষাগত বিকাশে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, তা বুঝতে হবে।
এই পোস্টের মাধ্যমে পরীমনি যেন সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন— ‘শিশুদের হাতে মোবাইল নয়, সময় দিন; কথা বলুন, পাশে থাকুন।’