একটা সময় যিনি ছিলেন লাখো তরুণীর স্বপ্নপুরুষ, গলায় ঝরতো রোমান্টিক গানের সুর—সেই ববি শারম্যান আর নেই। ৮১ বছর বয়সে গত ২৪ জুন পৃথিবীর মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি। তবে রেখে গেছেন অসংখ্য স্মৃতি, সুর আর ভালোবাসার ছায়া।
১৯৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের পপ সংস্কৃতিতে ববির ছিল রাজত্ব। হিট গান, টিভি সিরিজ আর স্টাইলিশ চেহারায় এক সময়ের টিন আইকনে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। তবে কেবল স্টারডমই নয়, জীবনের এক পর্যায়ে এসে তিনি বেছে নিয়েছিলেন আরও গুরুত্বপূর্ণ এক পথ—মানবসেবা।
শুধু গায়ক ও অভিনেতা নন, ববি ছিলেন একাধিক প্রতিভার মানুষ। ‘Little Woman’, ‘Julie, Do Ya Love Me’ সহ একাধিক হিট গান তাকে পৌঁছে দেয় পপ সংস্কৃতির অন্যতম মুখ হিসেবে। অভিনয়ের পাশাপাশি গান দিয়ে তৈরি করেন এক নিজস্ব ভুবন। তবে ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে থাকা অবস্থায় তিনি একরকম ‘পিছু হটেন’—গ্ল্যামার ছাড়েন নিজের শর্তে।
তিনি যুক্ত হন জরুরি চিকিৎসা সেবায়। হয়ে ওঠেন প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক ও পুলিশ অফিসার। অনেকটা ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মানবিক কাজের জন্য একাধিকবার ভূষিত হন পুরস্কারে। হলিউড যেখানে কখনো ফিকে হতে দেয় না তারকাদের আলো, সেখানে ববি নিজেই নিজেকে নিভিয়ে দিয়ে আলো ছড়িয়েছেন আরেকভাবে।
ববির স্ত্রী ব্রিজিট পুয়েবলন শারম্যান ইনস্টাগ্রামে শোকবার্তায় লেখেন, ‘তার হাতে হাত রেখে তিনি আমাদের ভালোবাসার ২৯ বছরের সংসারকে সম্মান জানিয়ে বিদায় নিয়েছেন। তিনি ছিলেন সাহসী, কোমল আর আলোয় ভরা মানুষ।’
শারম্যান দীর্ঘদিন ধরে লড়ছিলেন মারণরোগ ক্যানসারের সঙ্গে। শেষদিকে কিডনি থেকে শরীরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে স্টেজ-৪ ক্যানসার। তিনি জানতেন শেষটা কাছেই, কিন্তু সরে যাননি। নিজের মতো করেই নীরবে, সাহসিকতার সঙ্গে লড়েছেন তিনি।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে পশ্চিমা মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে নানা প্রতিক্রিয়া। অনেক তারকা, সহকর্মী এবং ভক্ত শারম্যানের জীবনের এই অনন্য যাত্রাকে শ্রদ্ধা জানান।