এক সময়ের বলিউডের ‘দেশি গার্ল’ এখন পুরোদস্তুর হলিউডের নাগরিক। তবে অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার পরিচয় শুধু তার অভিনয়জগতে আটকে নেই— তিনি কখনো পরিবেশ নিয়ে সোচ্চার কণ্ঠ, আবার কখনো নারীশক্তির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান। কিন্তু এইসব আদর্শের বিপরীতে দাঁড়িয়ে যখন নিজের কর্মকাণ্ড ঘিরে বিতর্কে জড়ান, তখন প্রশ্ন জাগে— এ কি আদর্শের দ্বৈততা, না কি বাস্তবতার অনিবার্য পরাজয়?
গত ৪ জুলাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। লস অ্যাঞ্জেলসের আকাশজুড়ে আতশবাজির রঙিন আভায় উৎসবে মেতেছিলেন অনেকেই, তাদের মধ্যে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও তার স্বামী নিক জোনাস। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, ককটেল গ্লাস হাতে, রঙিন পোশাকে হাস্যোজ্জ্বল প্রিয়াঙ্কা উল্লাস করছেন হাজারো মানুষের সঙ্গে।
দৃশ্যটা নিঃসন্দেহে ঝলমলে। কিন্তু এই উল্লাসই তাকে এনে দিয়েছে নেটিজেনদের কটাক্ষ।
২০১৮ সালে দীপাবলি উপলক্ষে প্রিয়াঙ্কা এক ভিডিও বার্তায় দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন যেন বাজি না ফোটানো হয়। কারণ? তার হাঁপানির সমস্যা। তিনি বলেছিলেন, দীপাবলিকে যেন ‘আলোর উৎসব’ হিসেবেই উদযাপন করা হয়। পরের বছর দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন, বলেছিলেন—’এখানে শ্বাস নেওয়াই দায়!’
এমন একজন পরিবেশ সচেতন অভিনেত্রী যখন আবার বাজির উৎসবে অংশ নেন, তখন প্রশ্ন তুলতে পিছপা হন না অনেকেই। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘বাজি মানেই খারাপ? নাকি ভারতেই খারাপ? হিপোক্রেসির লেভেল চরম!’ আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘এবার হাঁপানি গেল কোথায়?’
এই বিতর্ক কি শুধুই প্রিয়াঙ্কাকে ঘিরে? নাকি তার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠছে বৃহত্তর এক সামাজিক অসঙ্গতি—সেলিব্রিটিদের আদর্শচর্চা কেবল সুবিধাবাদী পরিবেশে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে কি না?
নাকি ভিন্ন সংস্কৃতিতে থেকে তাদের ভাবনার গঠনে এক ধরনের ‘পশ্চিমা অনুগ্রহ’ গেঁথে যায়, যেখানে একই কাজ ভারতীয় সংস্কৃতিতে ‘দূষণ’ হলেও আমেরিকায় তা হয় ‘উৎসব’?