টালিউডের আলোচিত মুখ, বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানকে ঘিরে ফের দানা বাঁধছে বিতর্ক। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী ও কলকাতা পৌরসভার কাউন্সিলর জুঁই বিশ্বাস সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন— ‘যখন বলিউডে পাকিস্তানি শিল্পীদের নিষিদ্ধ করা হয়, তখন টালিউডে একজন বাংলাদেশি অভিনেত্রী কীভাবে নিয়মিত অভিনয়ের সুযোগ পান?’
জুঁই বিশ্বাস শুধুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি টালিউডের সংগঠন ফেডারেশনের সভাপতির (স্বরূপ বিশ্বাস) স্ত্রী, তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এবং একজন দলীয় মুখপাত্র। তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে চলচ্চিত্র ও রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা— এটি এক ধরনের সাংস্কৃতিক বৈষম্য?
এই বিতর্কের আগুন যেন আরও জ্বালিয়ে দিয়েছে জয়া আহসান অভিনীত নতুন সিনেমা ‘ডিয়ার মা’, যা মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গজুড়ে। সিনেমাটি মুক্তির প্রাক্কালে জুঁই বিশ্বাসের মন্তব্য অনেকেই দেখছেন ‘টাইমিং-সচেতন রাজনৈতিক বার্তা’ হিসেবে।
জুঁই বিশ্বাস তার পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমাদের শিল্পীরা বাংলাদেশে কাজ করতে পারেন না, অথচ জয়ার মতো কাউকে আমরা রেড কার্পেট দিচ্ছি!’ তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের কি কোনো শিল্পী নেই, যারা ওই চরিত্রটি করতে পারত?’
তার এই বক্তব্য রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়, এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া জন্ম দেয়।কেউ বলছেন, এটি পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি রক্ষার সৎ উদ্বেগ।আবার কেউ বলছেন, ‘এটি এক ধরনের নরম xenophobia’— বিদেশি শিল্পীর প্রতিভাকে ভয়, গ্রহণ করতে না চাওয়ার সংকীর্ণতা।
সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মন্তব্যে ভক্তরা বলছেন— ‘জয়া শুধু বাংলাদেশি নন, তিনি বাংলার একজন কন্যা, দুই বাংলার আবেগ। তার প্রতিভা ও পরিশ্রমের ওপর দাগ লাগানো অন্যায়।’
এই বিতর্কে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে—দুই বাংলার শিল্পচর্চায় আদান-প্রদান কি একতরফা হবে? ভারতের শিল্পীরা বাংলাদেশে কাজ করেন না ঠিকই, তবে তার বড় কারণ রাজনৈতিক বা বাণিজ্যিক জটিলতা।অন্যদিকে, জয়া আহসান তার প্রতিভা ও প্রফেশনালিজম দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র অঙ্গনে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন, সে কথা কেউ অস্বীকার করতে পারছেন না।