মেটাল জগতের কিংবদন্তি, আবার একইসাথে বিতর্কিত চরিত্র ওজি ওসবোর্ন আর নেই। ২৩ জুলাই, মঙ্গলবার ৭৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই ব্রিটিশ শিল্পী। তার মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে বিশ্ব সংগীত অঙ্গনে। তবে ওজির মৃত্যু যেন তার বিতর্কিত অতীতকেও আবার সামনে নিয়ে এসেছে—বিশেষ করে ১৭টি বিড়াল হত্যার সেই ভয়াবহ কাহিনি।
১৯৮০ সালের ঘটনা। নিজের জীবনের এক কঠিন সময় পেরোচ্ছিলেন ওজি। তিনি নিজেই একাধিক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছিলেন, সে সময় তিনি চরম মাত্রার মাদকাসক্ত ছিলেন। নিজের হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। সেই সময় তিনি নিজের পোষা ১৭টি বিড়াল গুলি করে হত্যা করেছিলেন।
“আমি ছিলাম পুরোপুরি মাদকে ডুবে। মাদকাসক্তির শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়ে একদিন আমাদের বাড়ির সব বিড়াল গুলি করে মেরে ফেলি,”—এই ছিল ওজির নিজের স্বীকারোক্তি।

ওজি ওসবোর্ন
ঘটনার সময় তার বাড়িতে কেউ ছিলেন না। দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যারন তখন বাইরে ছিলেন। ফিরে এসে তিনি দেখেন, ওজি এক হাতে বন্দুক, আরেক হাতে ছুরি নিয়ে পিয়ানোর নিচে বসে আছেন— চারপাশে ছড়িয়ে আছে মৃত বিড়ালের নিথর দেহ।
১৯৮০ সালেই প্রথম স্ত্রী থেলমা রাইলির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শ্যারনের সঙ্গে নতুন দাম্পত্য শুরু করেছিলেন ওজি। আর তার ঠিক কয়েক দিনের মধ্যেই ঘটে যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা।
ওজি ওসবোর্নকে অনেকেই রক ও হেভি মেটাল সংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি বলে জানতেন। ‘ব্ল্যাক সাবাথ’ ব্যান্ডের মূল কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। তবে তার জীবনজুড়ে মাদকাসক্তি, মানসিক অসুস্থতা এবং বিতর্ক যেন ছায়ার মতো অনুসরণ করেছে।

ওজি ওসবোর্ন
ওজির মৃত্যুর পর তাকে ঘিরে একদিকে যেমন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার ঢল নেমেছে, অন্যদিকে তার জীবনের অন্ধকার অধ্যায় নিয়েও চলছে জোর আলোচনা। প্রাণীদের প্রতি নির্মম আচরণের এমন ঘটনার খবর নেটদুনিয়ায় বিস্তর প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
তার শিল্পীসত্তার মর্যাদা যেমন অনস্বীকার্য, তেমনি তার জীবনের বিপথগামী অংশগুলোও মানুষের মননে প্রশ্ন তুলছে—একজন ‘লিজেন্ড’ কি আদৌ এসব থেকে দায়মুক্ত থাকতে পারেন?