ফিলিস্তিনি শিশু হিন্দ রজবের হৃদয়বিদারক কাহিনী এবার বড় পর্দায়। ইসরায়েলি হামলায় নিহত এই শিশুর জীবনকাহিনীকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে সিনেমা ‘দ্য ভয়েস অব হিন্দ রজব’, যা ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক ফিল্ম জগতে আলোড়ন তৈরি করছে।
এই সিনেমার পরিচালক তিউনিসিয়ার কুসারু বিন হানিয়া, যিনি একাধিকবার অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম বিভাগে তিউনিসিয়া থেকে এই সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে। ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এটি ৩ সেপ্টেম্বর প্রিমিয়ার হবে।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন হলিউডের দুই সুপরিচিত অভিনেতা ব্র্যাড পিট ও হোয়াকিন ফিনিক্স। তারা এখানে নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করবেন। এছাড়া মেক্সিকোর ‘রোমা’খ্যাত আলফোনসো কুরায়ন, ‘দ্য জোন অব ইন্টারেস্ট’খ্যাত জোনাথন গ্লেজার, অভিনেত্রী রুনি মারা এবং প্রযোজক জেরেমি ক্লেইনারও সিনেমার সঙ্গে নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে যুক্ত হয়েছেন।
সিনেমাটি সত্য ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি গাজার রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবীরা একটি পরিবারের কাছ থেকে ফোন পান। ফোনে পাওয়া বার্তায় জানা যায়, একটি গাড়িতে আটকে আছে একটি পরিবার। গাড়িটিতে ছিলেন ছয় বছর বয়সী হিন্দ রজব, তার চাচা-চাচি এবং চার ভাই-বোন। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বের হলেও ইসরায়েলি বাহিনীর গুলির শিকার হয় পুরো পরিবার। প্রথম হামলায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা প্রাণ হারান, বেঁচে থাকে শুধুমাত্র হিন্দ। কিন্তু পরদিনই, রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবীরা পৌঁছানোর আগেই শিশুটিও নিহত হয়।
এই ঘটনায় ব্যবহৃত ফোন কলের অডিও সিনেমায় সংরক্ষিত আছে, যা হিন্দ রজবের চাহিদা, ভয় ও নিঃশ্বাসের সঙ্গে দর্শককে সরাসরি সংযুক্ত করে। ফরেনসিক আর্কিটেকচার, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, স্কাই নিউজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তদন্তে দেখা গেছে, গাড়িতে শিশুদের থাকার বিষয়টি ইসরায়েলি বাহিনী জানলেও তারা লক্ষ্য করে কমপক্ষে ৩৩৫টি গুলি চালায়।
ব্র্যাড পিট ও হোয়াকিন ফিনিক্স এই হৃদয়বিদারক গল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করেননি। তাদের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি সিনেমা, কেবল ফিলিস্তিনি শিশুদের কষ্টকে তুলে ধরবে না, বরং যুদ্ধের ভয়াবহতা ও মানবতার ওপর প্রভাবকেও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাবে।
সিনেমাটি দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। শুধু বিনোদন নয়, এটি মানবিকতা, ন্যায় ও শান্তির প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করছে। চলচ্চিত্রজগতে এ ধরনের উদ্যোগ নতুন মাত্রা যোগ করছে।