বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওনকে আজ শুধু গ্ল্যামার বা আলোচিত ক্যারিয়ারের জন্য নয়, মাতৃত্বের ভিন্ন অভিজ্ঞতার জন্যও চিনে রাখা হয়। তিনি এখন তিন সন্তানের মা— প্রথম সন্তান দত্তক, আর পরের যমজ সন্তান এসেছেন সারোগেসির মাধ্যমে। এই যাত্রায় তিনি সমাজকে দেখিয়েছেন, মাতৃত্ব মানেই কেবল গর্ভধারণ নয়, বরং এটি ভালোবাসা, দায়িত্ব আর সম্পর্কের এক বিশেষ বন্ধন।
সানি ছোটবেলা থেকেই দত্তক নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতেন। সেই ভাবনারই বাস্তব রূপ ২০১৭ সালে, যখন স্বামী ড্যানিয়েল ওয়েবারের সঙ্গে মিলে তিনি কন্যা নিশাকে দত্তক নেন। শিশুটিকে গ্রহণের আগেই ১১টি পরিবার নিশাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু সানি-ড্যানিয়েলের স্নেহময় সংসারে সে পেল স্থায়ী আশ্রয়।
পরের বছরই সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেয় তাদের যমজ ছেলে নোয়া ও অ্যাশর। সানি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, তিনি কখনো গর্ভধারণ করতে চাননি। মাতৃত্বের অনুভূতি পাওয়ার জন্য সন্তানকে গর্ভে ধারণ করাই একমাত্র উপায়—এই সামাজিক ধ্যানধারণা তিনি ভাঙতে চেয়েছেন। তাই সারোগেসির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সচেতনভাবেই।
এই যাত্রায় একজন সারোগেট মা ছিলেন, যিনি সাপ্তাহিক একটি নির্দিষ্ট অর্থ পেতেন। সেই টাকায় তিনি নিজের জন্য একটি বাড়ি কিনে ফেলেন, এমনকি বিয়েও করেন। সানির মতে, এই অভিজ্ঞতা শুধু তার জন্য নয়, সারোগেট মায়ের জীবনেও ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে।
পডকাস্টে উপস্থিত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ কিরণ কোয়েলহো জানান, সন্তান আসুক যেকোনো পথে, মায়ের অনুভূতি সব ক্ষেত্রেই সমান। সানিও একমত হয়ে বলেন, ‘পরিবার গঠনের পথ আলাদা হলেও ভালোবাসা আর দায়িত্বে কোনো ভেদাভেদ নেই।’
২০১১ সালে ড্যানিয়েল ওয়েবারকে বিয়ে করেন সানি। তখন দু’জনই প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্ট ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ধীরে ধীরে মূলধারার বলিউডে কাজ শুরু করেন সানি এবং আজ তিনি কেবল অভিনেত্রী নন, একজন নিবেদিত মা।
সানি লিওনের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়— মাতৃত্ব কোনো একরকম নয়। দত্তক, সারোগেসি কিংবা গর্ভধারণ— সব পথই সমানভাবে মূল্যবান। গুরুত্বপূর্ণ হলো সেই ভালোবাসা, যা সন্তানকে ঘিরে গড়ে ওঠে।
সানির সিদ্ধান্ত হয়তো অনেকের কাছে অচেনা বা বিতর্কিত। কিন্তু তার অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে, মাতৃত্বের স্বপ্ন পূরণের জন্য একাধিক দরজা খোলা থাকে। তিনি সেই দরজাগুলো খুঁজে নিয়েছেন সাহসিকতা আর ভালোবাসার আলোয়।