বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এমন এক নায়ক আছেন, যিনি খুব অল্প সময়েই দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ার, অথচ তার জনপ্রিয়তা আজও অম্লান। তিনি সালমান শাহ— যাকে ভক্তরা এখনও বলেন বাংলা চলচ্চিত্রের অমর নায়ক।
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ থাকলেও বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৩ সালে, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন এই নায়ক। শাবনূরের সঙ্গে তার জুটি বাংলা সিনেমার এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে আছে এখনো।
মাত্র চার বছরে অভিনয় করেছেন ২৭টিরও বেশি সিনেমায়। ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘তোমাকে চাই’, ‘সুজন সখী’, ‘প্রেমযুদ্ধ’, ‘বিক্ষোভ’—প্রতিটি ছবিতেই তিনি প্রমাণ করেছেন নিজেকে। তার স্টাইল, সংলাপ বলার ভঙ্গি, ফ্যাশন আর ক্যারিশমা সেই সময়ের তরুণদের জন্য হয়ে উঠেছিল অনুপ্রেরণা। বলা হয়, সালমান শাহ-ই মূলত বাংলা সিনেমায় আধুনিকতার ছোঁয়া এনে দিয়েছিলেন।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে পর্দা নামল এই তারকার জীবনের। হঠাৎ মৃত্যু ভক্তদের হৃদয়ে যে শূন্যতা তৈরি করেছে, তা আর কোনোদিন পূর্ণ হওয়ার নয়। মৃত্যুর প্রায় তিন দশক পরও তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে—সত্যিকারের শিল্পী কখনো হারিয়ে যান না।
আজ তার মৃত্যু দিবসে ভক্তরা স্মরণ করছেন এক অপূর্ণ নায়ককে। সালমান শাহ নেই, কিন্তু রয়ে গেছে তার সিনেমা, তার অভিনয়ের আলো, আর কোটি ভক্তের ভালোবাসা। যতদিন বাংলা চলচ্চিত্র থাকবে, ততদিন তিনি থাকবেন কিংবদন্তি হয়ে—চিরকালীন নায়ক হয়ে।