Sunday 14 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শান্তিতে থাকুন — প্রিয় শিল্পী

সানজিদা যুথী
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:০৬ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১৯

সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে বাংলাদেশ হারালো তার এক অমূল্য রত্নকে। লালনের গান যিনি আমাদের আত্মায় শেকড় গেড়ে দিয়েছিলেন, যিনি প্রতিটি কথায় ভালোবাসা, সাম্য আর মানবতার আলো জ্বেলে গেছেন— সে সুরেলা কণ্ঠ আজ চিরতরে থেমে গেছে। ফরিদা পারভীন আর নেই।

তিনি শুধু একজন শিল্পী ছিলেন না, ছিলেন বাংলার গানের প্রাণ, লালনগীতি-জগতের রাণী। তার কণ্ঠে ছিল আকাশের মতো বিশালতা, নদীর মতো বিস্তার, আবার মাটির মতোই আপন টান। আজ সেই কণ্ঠ থেমে গেলেও, তার সুরের ঢেউ চিরকাল বয়ে যাবে আমাদের হৃদয়ের ভেতর।

১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নওগাঁ জেলার শাঁওল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ফরিদা পারভীন। ছোটবেলা থেকেই গান ছিল তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রথমে নজরুলগীতি দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তীতে লালনগীতিতেই খুঁজে পান তার আত্মার পরিচয়। উস্তাদ ইব্রাহিম, রবীন্দ্রনাথ রায়, ওসমান গনি— অসংখ্য গুণীজনের কাছ থেকে তিনি গান শিখেছেন। আর লালনগীতির দীক্ষা নিয়েছিলেন মকসেদ আলী শায়ীর কাছে।

বিজ্ঞাপন

তার কণ্ঠে লালনের দর্শন যেন নতুন প্রাণ পেত। ভেদাভেদ ভুলে মানুষকে ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে দিত প্রতিটি গান। দেশপ্রেমের গান হোক বা আধ্যাত্মিক সাধনার সুর—ফরিদা পারভীনের গলা হয়ে উঠেছিল মানুষের মনে এক অনন্ত আশ্রয়। এজন্যই তিনি পেয়েছেন ‘লালনগীতির রাণী’ উপাধি।

কিন্তু জীবনের শেষ প্রহরে তাকে লড়তে হয়েছে নীরব যুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন, সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার সমস্যা। নিয়মিত চিকিৎসা, ডায়ালাইসিস সব কিছুর পরও শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে শনিবার রাত ১০টার কিছু পর ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

আজ তার চলে যাওয়ায় কেঁদে উঠেছে ভক্তদের হৃদয়। দেশ হারালো এক মহার্ঘ ধন, হারালো এক অনন্য কণ্ঠস্বর। তবে তার গান, তার দর্শন, তার সুরের আলো আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবে।

ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় বলি—
ফরিদা পারভীন, শান্তিতে থাকুন।
আপনার গানের সুর কখনও থামবে না, সেটাই আপনার চিরন্তন জয়।

সারাবাংলা/এসজে/এএসজি

ফরিদা পারভীন

বিজ্ঞাপন

সিলেটের ডিসি সারওয়ার আলমকে শোকজ
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:৩০

আরো

সম্পর্কিত খবর