দু’জনের জগৎ সম্পূর্ণ আলাদা— একজন ছিলেন কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, যিনি নিজের রাজনৈতিক মেধা ও ক্যারিশমায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলো ছড়িয়েছেন। অন্যজন বিশ্ববিখ্যাত পপ তারকা, ‘Roar’ আর ‘Firework’-এর কণ্ঠশিল্পী কেটি পেরি— যিনি মঞ্চে যেমন উজ্জ্বল, বাস্তব জীবনেও তেমনি রঙিন।
কিন্তু এখন এই দুই তারকার নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে এক অন্য কারণে— রোম্যান্সের গুঞ্জনে সরগরম গোটা দুনিয়া!
মন্ট্রিয়েল থেকে শুরু প্রেমের ফিসফিসানি। জুলাই মাসেই প্রথম দেখা গিয়েছিল তাদের একসঙ্গে— কানাডার মন্ট্রিয়েলের এক অভিজাত রেস্টুরেন্টে, রাতের নৈশভোজে মুখোমুখি ট্রুডো ও কেটি। সেদিনও তাদের নিয়ে উত্তাপ ছড়িয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু তখন বিষয়টিকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ বলেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন অনেকেই। তবে এবার দৃশ্যপট একেবারে অন্যরকম।
বিলাসবহুল ইয়টে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত— সেই একই শহর, কিন্তু এবার স্থানটা আরও গোপনীয়— একটি লাক্সারি ইয়টের ডেকে। রোদ মিশে আছে হালকা কুয়াশায়, চারপাশে নীল জলরাশি… আর মাঝখানে দুই বিশ্বতারকা, একে অপরের বাহুডোরে আবদ্ধ।
চোখে সূর্যের ঝলক, বাতাসে এক অনুচ্চারিত উষ্ণতা। কেটির পরনে কালো রঙের সাঁতারের পোশাক, মাথার উপরে বাঁধা চুল— অবসরময় এক রূপে ধরা দিয়েছেন তিনি। আর ট্রুডো, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হয়েও যেন এক নির্ভার প্রেমিক— ঊর্ধ্বাঙ্গ উন্মুক্ত, শুধু জিন্স ট্রাউজারে।
ক্যামেরার ক্লিকের শব্দে ধরা পড়েছে সেই মুহূর্ত— কেটির হাত ট্রুডোর গলায়, তাদের ঠোঁট একে অপরের খুব কাছাকাছি… ছবিগুলো প্রকাশ হতেই যেন বিস্ফোরণ ঘটেছে ইন্টারনেটে।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, কেটির নির্দেশেই ইয়টটি সরিয়ে নেওয়া হয় অন্য এক নৌকার আড়ালে— যাতে তাদের একান্ত সময়টি লোকচক্ষুর আড়ালে থাকে। কিন্তু প্রেম লুকানো কি এত সহজ? ক্যামেরা তো থেমে থাকে না, আর একবার ছবি বেরোলে বিশ্বজুড়ে আগ্রহও থামে না।
ফলাফল— টুইটার (X), ইনস্টাগ্রাম, টিকটক— সবখানেই ট্রুডো ও কেটির রোম্যান্টিক মুহূর্ত ভাইরাল। কেউ বলছেন, ‘অবিশ্বাস্য জুটি!’ আবার কেউ কটাক্ষ করছেন, ‘রাজনীতি ছেড়ে রোম্যান্সে মজেছেন ট্রুডো!’
এখন পর্যন্ত কেউই মুখ খোলেননি— না কেটি, না ট্রুডো। তবে কানাডার সংবাদমাধ্যম বলছে, এই ছবিগুলো নাকি কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।
অস্বস্তি হোক বা না হোক, জনমত এখন তুঙ্গে। কারণ দু’জনেরই ব্যক্তিগত জীবনে পরিবর্তন এসেছে সম্প্রতি।
ট্রুডো গত বছর আগস্টে স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার–এর সঙ্গে ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন। অন্যদিকে, কেটি পেরির দীর্ঘদিনের বাগদত্তা অরল্যান্ডো ব্লুম–এর সঙ্গে সম্পর্কটিও এখন বেশ দূরত্বে। পশ্চিমা মিডিয়ায় তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন চলছিলই—এবার সেই ফাঁকা জায়গায় কি ট্রুডো এসে পড়লেন?
নতুন প্রেম নাকি শুধুই বন্ধুত্ব?
সোশ্যাল মিডিয়ায় একদল বলছেন, এটি নিছক বন্ধুত্ব। অন্যরা মনে করছেন, মন্ট্রিয়েলের আকাশে নতুন এক প্রেমের গল্প লিখছে এই যুগল।
কেউ বলছেন, ‘দু’জনেই সিঙ্গেল, ভালোবাসা তো হঠাৎই আসে।’ আবার অনেকে মনে করছেন, ‘এটি হয়তো সাময়িক এক ক্লোজ বন্ডিং, যার পেছনে মিডিয়া-স্ট্র্যাটেজিও থাকতে পারে।’
শেষ কথা হলো— এই সম্পর্কের প্রকৃত সত্য কী, তা সময়ই বলবে। তবে একথা নিশ্চিত— জাস্টিন ট্রুডো আর কেটি পেরি এখন বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত জুটি।
তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি ছবি এখন খবরের শিরোনাম।
ভালোবাসা, বিতর্ক, কৌতূহল—সব মিশে যেন এক রোমান্টিক রাজনৈতিক থ্রিলার! আর দর্শক? তারা এখন অপেক্ষায়— এই গল্পের পরবর্তী অধ্যায় দেখার।