বিশ্বজুড়ে মানবিক কাজের জন্য যিনি বরাবরই প্রশংসিত, সেই হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আবারও আলোচনায়। তবে এবার আলোচনার কারণটা কিছুটা ভিন্ন— একটু বিপাকও বলা যায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে মানবিক সহায়তার উদ্দেশ্যে গোপনে সফরে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন এই অস্কারজয়ী অভিনেত্রী।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে জোলির এটাই ইউক্রেনে দ্বিতীয় সফর। ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর তিনি প্রথমবার গিয়েছিলেন লভিভে। কিন্তু এবার তিনি আরও সাহসী পদক্ষেপ নেন— সরাসরি প্রবেশ করেন দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসনসহ সম্মুখসারির শহরগুলোতে।
তিনি শিশু হাসপাতাল, প্রসূতি ওয়ার্ড এবং উদ্ধারকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরে শিশুদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জোলির ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যুদ্ধের ভয়াবহতার মাঝেও তার হাসিমুখ যেন এক ঝলক মানবতার আলো ছড়িয়ে দেয়।
তবে সফরের এক পর্যায়ে ঘটে যায় অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, জোলির দলের এক সদস্য—যিনি তার ড্রাইভার ছিলেন বলে জানা যায়—তাকে একটি চেকপোস্টে আটকে সরাসরি ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়!
আরও জানা গেছে, জোলির সফরটি ইউক্রেন সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সমন্বিত ছিল না। তিনি পায়ে হেঁটে সীমান্ত অতিক্রম করেন, যা ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের জন্য বিস্ময়ের ছিল। পরে ইউক্রেনীয় স্থলবাহিনী এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিলেও তা দ্রুতই মুছে ফেলা হয়।
অ্যাঞ্জেলিনা জোলির এমন সাহসী সফর যেমন মানবিক বার্তা দেয়, তেমনি আন্তর্জাতিক রাজনীতির সূক্ষ্ম বাস্তবতাও সামনে আনে। যুদ্ধক্ষেত্রে মানবিক কাজ করতে গিয়ে তিনি শুধু ঝুঁকি নিচ্ছেন না, বরং প্রমাণ করছেন—সহানুভূতি কোনো সীমান্ত মানে না।
জোলি আগেও সিরিয়া, আফগানিস্তান ও মিয়ানমারের শরণার্থী শিবিরে গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইউক্রেন সফরের এই অভিজ্ঞতা হয়তো তার মানবিক অভিযাত্রায় নতুন এক অধ্যায় যোগ করবে।