সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় খ্যাতি আসে চোখের পলকে, আবার বিতর্কও ঝড় তোলে একই গতিতে। পাকিস্তানি ইনফ্লুয়েনসার ও টিকটক তারকা সামিয়া হিজাব সম্প্রতি সেই ঝড়ের কেন্দ্রবিন্দুতে। এক সময় তার হাসিখুশি ভিডিও ও ফ্যাশন সেন্স মাতিয়ে তুলেছিল তরুণ প্রজন্মকে; কিন্তু এখন আলোচনার কেন্দ্রে তিনি অন্য কারণে— দেশত্যাগ।
ছোট পোশাক, বড় বিতর্ক
সবকিছুর শুরু একটি ভিডিও থেকে। সামিয়া বলেছিলেন, ‘আমার পোশাক ছোট হচ্ছে না, বরং সমাজের চিন্তাভাবনাই সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’ এই একটি বাক্যই যেন পাকিস্তানি অনলাইন জগতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নেটিজেনদের কেউ তাকে ‘সংস্কৃতি বিরোধী’ বললেন, কেউ বা ‘নতুন প্রজন্মের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে পাশে দাঁড়ালেন।
ভিডিও ভাইরাল হতে না হতেই নানামুখী সমালোচনায় ক্লান্ত সামিয়া হিজাব জানালেন— এই মানসিক চাপ, সমাজ ও সরকারের বিচারপ্রবণ আচরণ তাকে বাধ্য করেছে দেশ ছাড়তে।
সমাজের আয়নায় নারীর পোশাক
সামিয়া বলেন, সময়ের সঙ্গে পোশাকের ধরন বদলানো স্বাভাবিক। কিন্তু সমাজের প্রতিক্রিয়া? এখনও আগের মতোই কঠোর। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছেন, ‘এটা আমার নয়, জাতির দোষ।’ তার ভাষায়, সরকারের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ— সবাই মিশে গেছে এক সংকীর্ণ মানসিকতায়।
এই বক্তব্যের পর থেকেই তার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলোতে সমালোচনার ঝড়, কটূ মন্তব্য, এমনকি হুমকিও আসতে থাকে। ফলে, নিরাপত্তার স্বার্থেই সামিয়া দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রবাসে এক নতুন শুরু?
তিনি এখন বিদেশে আছেন— কিন্তু এটি সাময়িক ভ্রমণ নাকি স্থায়ী দেশত্যাগ, তা এখনও স্পষ্ট করেননি। তবে তার অনুসারীদের ধারণা, তিনি আপাতত পাকিস্তানের বাইরেই থাকতে চান, যতদিন না পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া বনাম বাস্তব জীবন
টিকটক, ইনস্টাগ্রাম বা ইউটিউবের পর্দায় সব কিছু রঙিন দেখালেও, সেই পর্দার আড়ালে থাকে তীব্র চাপ, সমালোচনা ও মানসিক ক্লান্তি। সামিয়া হিজাবের ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, অনলাইন খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ‘ডিজিটাল বিচারসভা’র সংস্কৃতি— যেখানে সবাই বিচারক, কিন্তু সহানুভূতির স্থান খুবই ছোট।