হলিউডের আলোচিত তরুণ অভিনেত্রী সিডনি সুইনি— শুধু পর্দার পারফরম্যান্সেই নয়, ব্যক্তিগত জীবন ও প্রেমের খবরে নিয়মিতই শিরোনামে থাকেন। মাত্র ২৮ বছর বয়সেই তিনি অর্জন করেছেন বিপুল সাফল্য, সম্পদের মালিকানা এবং বিশ্বব্যাপী ভক্তদের ভালোবাসা। তবে এবার আলোচনায় তার নতুন সম্পর্ক— ৪৪ বছর বয়সী সংগীত উদ্যোক্তা স্কুটার ব্রাউন-এর সঙ্গে।
এর আগে দীর্ঘ সাত বছর সিডনি ছিলেন ব্যবসায়ী জনাথন দাভিনোর সঙ্গে সম্পর্কে। শুধু সম্পর্কই নয়, এই যুগল মিলে গড়ে তুলেছিলেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ফিফটি-ফিফটি ফিল্মস’, যা সম্প্রতি নারী মুষ্টিযোদ্ধা ক্রিস্টি-র জীবনীচিত্র নির্মাণ করেছে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাঙলেও, পেশাদার জোট এখনও অটুট রেখেছেন তারা।
তবে নতুন প্রেমিকের বয়সে পার্থক্য নিয়েই বেশি সরব হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। কেউ প্রশংসা করছেন পরিণত সম্পর্কের সাহসী সিদ্ধান্তকে, আবার কেউ তুলছেন প্রশ্ন— ‘সিডনি কি সবসময় বয়সে বড় পুরুষদের প্রতিই আকৃষ্ট?’
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও যৌন-মনোবিজ্ঞানী সোফি রোস, যিনি প্রায় ১৮ বছর ধরে মানবসম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তার মতে, বয়স নয়, মূল কারণ হলো মানসিক নিরাপত্তা ও আবেগীয় পরিপক্বতার প্রতি আকর্ষণ।
রোস ব্যাখ্যা করেন, ‘অনেক সময় কেউ বয়সে ছোট হলেও মানসিকভাবে বেশি পরিণত হয়। আবার কেউ ছোটবেলা থেকে অনিশ্চয়তা ও দায়িত্বে বেড়ে উঠলে পরবর্তীকালে স্থির, নির্ভরযোগ্য মানুষকে সঙ্গী হিসেবে চান। বড় বয়সের মানুষ অনেক সময় সেই স্থিতি দিতে পারেন।’
সিডনি নিজেও একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তার শৈশবের সংগ্রামের কথা—মা-বাবার বিচ্ছেদ, আর্থিক অনিশ্চয়তা, এমনকি ১৬ বছর বয়সে পুরো পরিবার নিয়ে এক রুমের হোটেলে থাকা। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এমন অভিজ্ঞতা একজনের সম্পর্কের ধরন ও বেছে নেওয়ার মানদণ্ডে গভীর প্রভাব ফেলে।
তবে সোফি রোস আরও একটি দিকের কথা বলেন— ‘কখনও কখনও, যারা ছোটবেলায় পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন, তারা পরিণত বয়সে এমন সম্পর্ক খোঁজেন যেখানে অন্যকে যত্ন দিতে পারেন। মূল কথা হলো সচেতনতা— যদি সম্পর্কটি পারস্পরিক সম্মান, সমান মর্যাদা ও খোলামেলা যোগাযোগের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে বয়স কোনো বাধা নয়।’
বর্তমানে প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলারের মালিক সিডনি সুইনি নিজেই নিজের সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রক। তিনি প্রযোজক, অভিনেত্রী, উদ্যোক্তা— সব মিলিয়ে এক আত্মনির্ভর নারী। সোফির ভাষায়, ‘এই সম্পর্কগুলো ক্ষমতা বা নির্ভরতার নয়, বরং আবেগীয় ভারসাম্যের ওপর দাঁড়ানো।’
সম্প্রতি সাবেক প্রেমিক দাভিনোর সঙ্গে প্রকাশ্যে মতবিরোধের দৃশ্য ভাইরাল হলেও, সিডনি এখনো তার পেশাগত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পূর্ণ উদ্যমে। সম্পর্কের ওঠানামার মধ্যেও তিনি যেন বলছেন— ভালোবাসা আসতে পারে, যেতে পারে; কিন্তু নিজের স্বপ্ন আর আত্মসম্মান— তা কোনোদিন হারিয়ে যায় না।