হলিউডের রঙিন পর্দায় তিনি ছিলেন আতঙ্কের নাম। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, ভারী কণ্ঠ আর নিখুঁত ভিলেনি অভিব্যক্তিতে দর্শকদের মনে কাঁপন ধরানো সেই মানুষটি— পিটার গ্রিন— এবার চিরতরে নেমে গেলেন নীরবতায়। ‘দ্য মাস্ক’ সিনেমায় ডোরিয়ান টাইরেলের চরিত্রে যিনি হয়ে উঠেছিলেন অমর, সেই অভিনেতার বিদায়ে যেন ৯০–এর দশকের এক টুকরো হলিউডও হারিয়ে গেল।
নিউ ইয়র্কের লোয়ার ইস্ট সাইডে নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই থেমে গেছে তার জীবনের গল্প। বাইরে থেকে যাকে মনে হতো কঠিন, ভয়ংকর—ভেতরে ভেতরে তিনি ছিলেন ঠিক তার উল্টো। সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠজনদের ভাষ্যে, পিটার ছিলেন নরম মনের, নিঃশব্দে সাহায্য করতে ভালোবাসা এক মানুষ। ক্যামেরা বন্ধ হলেই যেন খুলে যেত তার আরেকটি মুখোশ—যেখানে ছিল মানবিকতা, দয়া আর আন্তরিকতা।
‘দ্য মাস্ক’-এর ডোরিয়ান টাইরেল শুধু একটি খলচরিত্র নয়; এটি ছিল এক সময়ের দর্শক-ভয়ের প্রতীক। জিম ক্যারির উন্মাদ হাসির বিপরীতে পিটার গ্রিনের ঠান্ডা, হিসেবি ভিলেনি উপস্থিতি সিনেমাটিকে দিয়েছিল আলাদা ভারসাম্য। আবার ‘পাল্প ফিকশন’-এ জেড চরিত্রে তার সংক্ষিপ্ত উপস্থিতিও হয়ে আছে কাল্ট ক্লাসিক ভক্তদের স্মৃতিতে গেঁথে থাকা এক অধ্যায়।
তবে এই সাফল্যের আলোচনার আড়ালেই ছিল একান্ত ব্যক্তিগত সংগ্রাম, একান্ত নিঃসঙ্গতা— যা অনেক শিল্পীর জীবনেই নীরবে বাসা বাঁধে। হয়তো তাই, তার বিদায়টাও হলো নিঃশব্দ, প্রচারের বাইরে। শুধু পড়ে রইল তার অভিনয়ের রেশ, আর সহকর্মীদের চোখে জল।
সামাজিক মাধ্যমে ভক্তরা লিখছেন, “তিনি আমাদের ভয় দেখিয়েছিলেন পর্দায়, কিন্তু ভালোবাসা দিয়ে জিতে নিয়েছিলেন বাস্তবে।” পিটার গ্রিন হয়তো আর নেই, কিন্তু সিনেমার সেই অন্ধকার কোণে, যেখানে ভিলেনরা বাস করে— সেখানে তিনি থেকে যাবেন বহুদিন।