মেয়ের আকুতি, তোমরা একসঙ্গে থাকো
১ আগস্ট ২০১৮ ১৪:৩৩
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
আট বছর আগের কথা। জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইপসিতা শবনম শ্রাবন্তী বিয়ে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলমকে। সুখেই কাটছিলো তাদের সংসার। মাঝে তাদের ঘর আলো করে আসে দুই কন্যা সন্তান। এক সময় উন্নত জীবনের আসায় তারা পাড়ি জমান আমেরিকায়।
কিন্তু তাদের সেই সুখের সংসারে হঠাৎকরেই ঝড় শুরু হয়। একসময় খোরশেদ আলম শ্রাবন্তীকে ডিভোর্স লেটার পাঠান। শ্রাবন্তী তার স্বামীর এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করতে থাকেন তিনি। এক সময় বাধ্য হয়ে ডিভোর্সের বিপক্ষে গত ২৬ জুন খিলগাঁও থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন। এরপর ২২ জুলাই ডিভোর্স নোটিশকে অবৈধ দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে ‘দাম্পত্য সত্ত্ব পুনরুত্থান’ মামলা করেন শ্রাবন্তী।
আরও পড়ুন : বিদ্যা বালান মা হতে যাচ্ছেন?
গতকাল (৩১ জুলাই) ঢাকার পারিবারিক আদালত খোরশেদ আলমের দেওয়া তালাক নোটিশের কার্যকারিতা শ্রাবন্তীর দ্বিতীয় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পযর্ন্ত স্থগিত করে দেন। এসময় শ্রাবন্তী আর খোরশেদ আলম দুজনেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আইনজীবীর দীর্ঘসময় কথাও হলেও তারা পরস্পর কোনও কথা বলেননি।
তালাক নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে শ্রাবন্তী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালত ডিভোর্স স্থগিতের নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশ মেনেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমন নয় যে আমি ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ডিভোর্সে রাজি হচ্ছি না। আমি কেবলমাত্র বাচ্চা দু’টির জন্য একসঙ্গে থাকতে চাই। মামলা করে আসলে অধিকার আদায় করা যায় না। সেজন্য নিজেরা বসে পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা উচিত।’
শুনানির সময় স্বামীর সঙ্গে তার কোনরকম কথা না হলেও বাচ্চাদের সঙ্গে খোরশেদ আলম কথা বলেছেন বলে জানান তিনি। শ্রাবন্তী বিশ্বাস করেন ডিভোর্সের বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে খোরশেদ আলমের ওপর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোরশেদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখনও রায়ের কপি হাতে পাইনি। আমি জানিনা এর পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে! হয়তো রায়ের কপি পেলে বুঝতে পারব। তবে আবেগ নয় আইনিভাবে বিষয়টি সুরাহা হবে।’
এদিকে ডিভোর্সের বিষয়টির মিমাংসা খোরশেদ আলমের ওপর নির্ভর করছে-শ্রাবন্তীর এমন মন্তব্যের বিপরীতে খোরশেদ আলম বলেন, ‘শ্রাবন্তী ২৫ জুন যখন আমার বাসায় আসেন তখন আমার বাবা-মা বলেছিলেন, এরকম রাগারাগি না করে তোমার অবিভাবকদের নিয়ে আসো তাদের সঙ্গে বসি। আলোচনা করি। তখন তিনি বলেছিলেন, আমার কোন অবিভাবক নেই। আমিই আমার অবিভাবক। এটা বলেই তিনি আমার বাড়ি থেকে চলে গিয়ে পরের দিন ২৬ জুন মামলা করেন। মামলা করার আগের রাতে পারিবারিকভাবে বসার প্রস্তাবটি আমার পরিবার থেকে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করার পর এখন কেন এই কথা বলছেন বুঝতে পারছি না।’
আরও পড়ুন : অক্ষয়-কারিনার ‘গুড নিউজ’
অন্যদিকে এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রাবন্তী বলেন, ‘আলম সম্পূর্ণ মিথ্য বলছেন। তার যদি আমার সঙ্গে সংসার করার ইচ্ছা থাকতো ১১ জুন ডিভোর্স পেপারের ছবি আমার বড় বোনকে মেসেঞ্জারে পাঠাতেন না। তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে? ২৫ জুন আলোচনা করার আগে আমাকে ডিভোর্স দেয়া হয়েছে। আমার তো মানসস্মান আছে। সে তো মেসেঞ্জারে এভাবে ডিভোর্স পেপারের ছবি পাঠাতে পারে না। তিনি যদি সংসার করতে না চান, সেটা আমাকে সরাসরি বলতে পারতেন। আমাকে তার যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার টিকিট পাঠানোর কথা। দেশে ফিরে তিনি কেনো ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলেন সেটা আমি বঝতে পারছি না।’
তবে সবকিছুর পরে শ্রাবন্তীর প্রত্যাশা অন্তত মেয়ে দু’টির জন্য হলেও ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন খোরশেদ আলম। কারণ মেয়েরা চায় বাবা-মা যেনো একসঙ্গে থাকে। আদালতে সাত বছরের মেয়ে রাবিয়াহ আলম জজকে উদ্দেশ্য করে এমন ইচ্ছার কথাই বলেছে। যে কথা শুনে উপস্থিত সকলে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ/পিএম