‘ও মাই গড! এটা করা যাবেনা’
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৯:৪৫
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচিত নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। রুচিশীল সিনেমা নির্মাণে তার আলাদা সুনাম রয়েছে। সেই সুনামকে তিনি মানুষের ভালোবাসা হিসেবে দেখেন। এই ভালোবাসা তাকে আরও সামনে ভালো ছবি নির্মাণে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে মনে করেন।
ঈদুল আজহায় মানিক পরিচালিত ‘জান্নাত’ ছবি মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির পর ছবিটি দর্শক বেশ ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। সেকারনে সপ্তাহ পেরোতেই আবারও হলসংখ্যা বাড়ছে ছবিটির। ছবির এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তিনি। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে মানিক সেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন। জানালেন নিজের অনুভূতির কথা।
- ‘জান্নাত’ কেমন গ্রহণ করলো দর্শক?
ছবিটি এখন পর্যন্ত যারা দেখেছেন তারা সবাই ভালো বলেছেন। কেউ সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে বলেনি যে,ছবিটি খারাপ লেগেছে। বড় বড় চলচ্চিত্র সমালোচকরা ইতিবাচক রিভিউ লিখেছেন। এখন হল সংখ্যা বাড়ছে। দর্শক দেখছে বলেই হলসংখ্যা বাড়ছে। বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য এটি ইতিবাচক।
- এ ধরনের কাহিনীর সিনেমা নির্মাণ যথেষ্ট ঝুঁকির কাজ। নির্মাণের সময় কি আপনার কাছে কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়েছিল?
এই ধরনের ছবি বানানো কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশে জঙ্গি ইস্যু নিয়ে এ ধরনের বাণিজ্যক ছবি নির্মিত হয়নি। সিনেমার কনসেপ্ট বেশ সেন্সেটিভ। দর্শক গ্রহণ করবে কি করবে না,এটা নিয়ে তো এটা দোটানা ছিল। মুক্তি পাওয়ার পর দর্শক সাদরে গ্রহণ করেছে। এটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। এখন মনে হচ্ছে আমি ঝুঁকি নিয়ে ভুল করিনি।
- সিক্যুয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন শুনলাম।
আমি আর একটু অপেক্ষা করতে চাই। এ সপ্তাহে আরও চল্লিশটি প্রেক্ষাগৃহে ’জান্নাত’ মুক্তি পাচ্ছে। নতুন মুক্তি পাওয়া হলগুলো থেকে কেমন সাড়া পাই সেটা দেখতে চাই! আসলে আমি চাইলে হবেনা। দর্শকদেরও চাইতে হবে।
অনেকে বলছেন সিক্যুয়াল নির্মাণ করতে। আমারও ইচ্ছা আছে। এখন আরও দুই এক সপ্তাহ দেখি। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।
- সেটার গল্প কি এই সিনেমার সূত্র ধরে এগোবে?
সম্পূর্ণ অন্যধরনের গল্পে সিক্যুয়াল নির্মিত হবে। এই গল্পের ধারাবাহিক কিছু করতে চাচ্ছি না। তবে এতটুকু বলতে পারি সিক্যুয়ালেও নতুন ধরনের মৌলিক গল্প দেখতে পাবে দর্শক।
- তাহলে কি বলতে পারি সিক্যুয়ালেও সায়মন-মাহি থাকছেন?
‘জান্নাত’ ছবিতে সায়মন-মাহি জুটিকে দর্শক গ্রহণ করেছে। তাদের অভিনয় ভালো লেগেছে। সে হিসেবে ‘জান্নাত-২’ তে তাদের থাকার সম্ভাবনা বেশি। কারন আমি দর্শক হারাতে চাইনা। ছবিতে এই জুটি যে হাইপ তৈরী করেছেন সেই হাইপটা ধরে রাখতে চাই।
- পরিচালক হিসেবে সায়মন এবং মাহির মধ্যে কাকে বেশি নম্বর দিবেন?
ও মাই গড! এটা করা যাবেনা। দু’জন প্রচন্ড রকমের মাইন্ড করবেন। দেখা গেলো তারা আমার পরের ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হলো না (হাসি)। আমার কাছে দু’জনেই ভালো অভিনয়শিল্পী। ছবিতে তাদের চরিত্র তারা ভালোভাবে ফুঁটিয়ে তুলেছেন। পরিচালক হিসেবে আমি তাদের অভিনয়ে খুশি। শুধু আমি না। অনেক দর্শক বলছেন,এটি সায়মনের ক্যারিয়ারের সেরা ছবি। মাহি গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে সেরা অভিনয় করেছেন। দু’জনের জন্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি বলে আমি মনে করি।
- গতানুগতিক প্রশ্ন। সামনে কি কি ছবি আসছে?
‘আনন্দ অশ্রু’ ছবির কাজ পঞ্চাশ শতাংশ করা আছে। এছাড়া ‘এতো প্রেম এতো মায়া’ আসছে। আরও একটি ছবির বিষয়ে কথাবার্তা চলছে।
একটু ভিন্ন প্রশ্ন করতে চাই। অনেক বছর ধরে পরিচালনা করছেন। কখনও অভিনয় করার ইচ্ছা জাগেনি?
কখনওই করেনি। আমাকে অনেকে অভিনয় করতে বলেন। আমি আসলে অভিনয় করতে পারবো না। ক্যামেরার পেছনে থাকতেই পছন্দ করি। ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে লজ্জা অনুভব করি।
ব্যক্তি এবং পরিচালক মানিক- এই দুইয়ের ভেতর কোন পার্থক্য দেখেন?
কোন পার্থক্য খুব নেই বললেই চলে। ব্যক্তি এবং পরিচালক- দুই রকম মানিকই সৎ। কাউকে কোন ক্ষতি করেনা। মানুষের উপকার করতে পারলে আনন্দবোধ হয়।
সারাবাংলা/আরএসও