ভরসা যখন ‘যদি’!
২৮ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৪০
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে দীর্ঘশ্বাস বেড়েই চলেছে। সিনেমার সুতিকাগার এফডিসিতে কান পাতলেই শোনা যায় হতাশার কথা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই হতাশা যেন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। দিনকে দিন কমছে সিনেমা নির্মাণের সংখ্যা। নতুন প্রযোজক আসছেন না। প্রেক্ষাগৃহগুলো সিনেমা সংকটে ভুগছে। এরকম নানা সমস্যায় প্রবাহিত হচ্ছে সিনেমা শিল্পের শিরায়-উপশিরায়।
আরও পড়ুন : অস্ট্রেলিয়ায় হবে বিবাহ বার্ষিকী
সিনেমা সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক সিনেমা হল। সব সিনেমা হল যেনো বন্ধ না হয়ে যায় সেজন্য আমদানি করা হচ্ছে ভারতীয় বাংলা সিনেমা। দেশী সিনেমার পাশপাশি ভিনদেশি সিনেমা মুক্তি দিয়ে যদি প্রেক্ষাগৃহ সচল রাখা যায় তাতে দেশের সিনেমা শিল্পের জন্য ভালো। এমনটাই মনে করেন হল মালিকরা।
তবে যেসব ভারতীয় বাংলা সিনেমা বাংলাদেশে মুক্তি দেয়া হচ্ছে সেসব সিনেমা কি আদৌ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে? প্রশ্নটি করা হয় বাংলাদেশ বুকিং এজেন্ট সমিতির সভাপতি সারোয়ার আলি দীপুর কাছে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘যেসব ভারতীয় সিনেমা আমদানি করা হচ্ছে সেসব সিনেমা একদমই চলে না। এদেশের মানুষ দেখেই না বলা চলে।’
তবুও কেন এ ধরণের কম মানসম্পন্ন সিনেমা আমদানি করা হচ্ছে। এমনকি তুলনামূলকভাবে বেশি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে? এর উত্তর নেই কারও কাছে। সম্প্রতি সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে ভারতীয় বাংলা সিনেমা ‘ভিলেন’। শোনা যাচ্ছে দেশের সিনেমা ‘দহন’ মুক্তির দিন অর্থাৎ ত্রিশ নভেম্বর মুক্তি পাবে ছবিটি। এও জানা গেছে, দহন সিনেমার চেয়ে বেশি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে বিদেশি ছবি ‘ভিলেন’।
এ প্রসঙ্গে দীপু সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশের নতুন সিনেমার চেয়ে অর্ধেক খরচে সাফটা চুক্তির আওতায় আমদানি করা কলকাতার বাংলা সিনেমা পাওয়া যায়। তাই অনেক হল মালিক ও বুকিং এজেন্ট দেশের সিনেমা না নিয়ে কলকাতার সিনেমা নিতে আগ্রহী হন। সেকারণে দেশের সিনেমার চেয়ে অধিকাংশ সময় বিদেশি সিনেমা বেশি হল পায়।
দীপু আরও বলেন, ‘ভারতীয় বাংলা সিনেমা চলছে না তবুও এটা বেশি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে, আমরাও চালাচ্ছি। কারণ, আমরা মনে করি ‘যদি’ কোন সিনেমা ভালো চলে! বলতে পারেন ‘যদি’র ওপর ভরসা করে আছে অনেকে।’
এদিকে বুকিং এজেন্ট সভাপতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কনটেন্ট নেই। তাই ভারতীয় সিনেমা আমদানি করছি। যেসব ভারতীয় সিনেমা আমদানি করা হচ্ছে সেসব সিনেমা সেন্সর ছাড়পত্র দিতে দীর্ঘসূত্রিতা করছে। শিল্পী সমিতি ও পরিচালক সমিতি আমদানিকৃত সিনেমা মুক্তির বিষয়ে সরাসরি বাধা দিয়ে যাচ্ছে। সিনেমাগুলো যদি ঠিক সময়ে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়ে যেত তাহলে মানুষ দেখতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুকিং এজেন্ট সভাপতি যে বলছেন ভারতীয় সিনেমা চলে না, তার সঙ্গে আমি একমত না। বুকিং এজেন্টরা ঠিকমতো প্রযোজকের টাকা দেয় না। তাদের কারণেই আমাদের দেশের সিনেমার এই অবস্থা।’
দেশের সিনেমা দিয়ে কি সিনেমা হল টিকিয়ে রাখা সম্ভব না? নওশাদ বলেন, ‘একদম না। ইদানিংকালে যেসব সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে তা দেখার মতো নয়। সেসব সিনেমার ওপর ভরসা করে সিনেমা হল চলবে না। তাই বাধ্য হয়ে ভারতীয় বাংলা সিনেমার ওপর ভরসা করতে হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ভারতীয় বাংলা সিনেমা আমদানি করা হয়েছে। সেগুলো যদি ঠিক সময়ে মুক্তি পায় তাহলে মানুষ দেখবে। আর যদি সিনেমা অনলাইনে চলে আসার পর বাংলাদেশে সেন্সর ছাড়পত্র দেয়া হয় তাহলে কেনো মানুষ হলে গিয়ে দেখবে?’
এদিকে বাংলা সিনেমার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবো শিগগিরই। সিনেমার সমস্যার সব কথা তার কানে পৌঁছায় না। বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলো ডিজিটালাইজড করার পাশপাশি বেশকিছু বিষয় নিয়ে কথা বলবো।’
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ/পিএম
আরও পড়ুন :
কনটেম্পোরারি ডান্স ফেস্টিভ্যাল- ১ম দিন [ফটো স্টোরি]
আসিফের গানে তানহা তাসনিয়া
অপূর্ব-মেহজাবিনের ‘সুখে দুঃখে’
চিত্রনাট্যকারদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর পক্ষে আমির খান
‘হক এর ঘর’ মুক্তি পাচ্ছে ইউটিউবে
নিকিয়াঙ্কার পর বিয়ের লাইনে কপিল শর্মা
আরও দেখুন :
৭ প্রশ্নে ইন্দ্রনীল [ভিডিও স্টোরি]