শহীদ মিনারে সাইদুল আনাম টুটুলকে শেষ শ্রদ্ধা
২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:০০
।। এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন বরেণ্য নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল। সম্মিলিত সংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আজ (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত শহীদ মিনারের পাদদেশে তার মরদেহ রাখা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী ও দুই কন্যা।
আরও পড়ুন : বিশ্বাসই করবো না আপনি নেই
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পাশপাশি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। তাদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম, মুস্তাফা মনোয়ার, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, তারিক আনাম খান, গোলাম কুদ্দুস, মাসুম রেজা, কবি মুহম্মদ সামাদ, ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ডা. ইয়াসমিন হক, আফরোজা বানু, নির্মাতা এস এ হক অলীকসহ শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের আরও অনেকে।
এ সময় সাইদুল আনাম টুটুল সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নাট্য ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম। তিনি বলেন, ‘টুটুল আমার খুব কাছের মানুষ ছিলেন। অসাধারণ গুনী মানুষ তিনি। তার মৃত্যু আমাদের ভেতর শূণ্যতা তৈরী করে দিয়ে গেল। আমরা সবাই জানি তিনি একটি সিনেমার কাজ করছিলেন। সেই সিনেমাটি যেন ভালোভাবে শেষ হয় সেজন্য আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে।’
এর আগে গত মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী ও চিত্র সম্পাদক সাইদুল আনাম টুটুল।
সাইদুল আনাম টুটুল ১৯৫০ সালের পহেলা এপ্রিল পুরোনো ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। সেখানকার মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন। উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রাবস্থায় চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন টুটুল।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন খুলনা অঞ্চলে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ শেষে স্বাধীন বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন টুটুল। কিন্তু তার মাথায় চলচ্চিত্রের নেশা। সেই নেশায় নেশায় ১৯৭৪ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে পুনে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে চলচ্চিত্র সম্পাদনা বিষয়ে পড়তে যান।
‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ ছবিটি সম্পাদনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পাওয়া টুটুল মূলত ছবিই বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু খুব বেশি ছবি বানাতে পারেননি। ‘আধিয়ার’ নামে একটি ছবিই পরিচালনা করেছেন। সরকারি অনুদানে নির্মিত আধিয়ার বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার দ্বিতীয় ছবি ‘কালবেলা’র কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এই ছবিটিও সরকারি অনুদানের।
কর্মজীবনে অসংখ্য নাটক এবং টেলিভিশন বিজ্ঞাপন বানিয়েছেন সাইদুল আনাম টুটুল। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে নাল পিরান, দায় মার সন্তানেরা, বখাটে, সেকু সেকান্দর, নিশিকাব্য, ৫২ গলির এক গলি, আপন পর, গোবর চোর, হেলিকপ্টার, মৃতের প্রত্যাবর্তন, অপরাজিতা। তাঁ সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে আছে ঘুড্ডি, দহন, দীপু নাম্বার টু, দুখাই।
সাইদুল আনাম টুটুল নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক ছিলেন।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম
আরও পড়ুন :
. এশিয়ান ফিল্ম স্কুলে দেশের দুই তরুণ
. শুক্রবার দেশে আসবে আমজাদ হোসেনের মরদেহ
. নির্বাচনের পর বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের কাজ শুরু : শ্যাম বেনেগাল
আফরোজা বানু কবি মুহম্মদ সামাদ গোলাম কুদ্দুস ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ডা. ইয়াসমিন হক তারিক আনাম খান নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু মাসুম রেজা মুস্তাফা মনোয়ার শেষ শ্রদ্ধা সাইদুল আনাম টুটুল সৈয়দ হাসান ইমাম