জামালপুরে সমাহিত হবেন আমজাদ হোসেন
২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:২১
।। এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
ব্যাংককে জটিলতা কাটিয়ে শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) দেশে আনা হচ্ছে বরেণ্য নির্মাতা আমজাদ হোসেনের মরদেহ। মৃত্যুর ঠিক আট দিনের মাথায় দেশে ফিরছে তার প্রাণহীন নিথর দেহ।
গত শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুর খবর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে দেশ জুড়ে। এরপর থেকে আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী থেকে শুরু করে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা উদগ্রীব হয়ে আছেন প্রিয় মানুষটিকে শেষবারের মতো দেখার অপেক্ষায়।
আমজাদ হোসেনের পরিবার থেকে পাওয়া তথ্যমতে, আজ সন্ধ্যা ৭টায় তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বাংলাদেশের মাটি স্পর্শ করবে। সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে আদাবরে নিজ বাসভবনে। সেখানে আত্মীয় স্বজনরা তাকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ পাবেন। রাতেই তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে স্থানীয় বায়তুল আমান জামে মসজিদে। এরপর তার মরদেহ সংরক্ষণের জন্য বারডেম হাসপাতালের হিমাগরে নিয়ে যাওয়া হবে।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারের পাদদেশে রাখা হবে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদেনের জন্য। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এই কিংবদন্তির মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হবে এটিএন বাংলায়। তারপর তার প্রিয় কর্মস্থল এফডিসিতে নেয়া হবে। যেখানে তিনি জীবদ্দশায় বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন। সৃষ্টি করেছেন কালজয়ী সব চলচ্চিত্র। এফডিসিতে বাদ যোহর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষ তাকে চ্যানেল আইতে নেয়া হবে।
আমজাদ হোসেনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী জামালপুরে নিজ জন্মস্থানে সমাহিত করা হবে। এ প্রসঙ্গে তার বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করার। এ নিয়ে খবর বেরিয়েছিল পত্রিকায়। তারপর একটি ছেলে স্বঃপ্রণোদিত হয়ে একটি অডিও রেকর্ড নিয়ে এসে শোনায়। সেই অডিওতে বাবা স্পষ্ট বলেছেন মৃত্যুর পর যেন তাকে জামালপুরে সমাহিত করা হয়। কারণ তিনি মনে করতেন জামালপুরের মানুষই তাকে যুগ যুগ ধরে মনে রাখবে। সেখানকার মানুষ তাকে যতটা ভালোবাসা দেবেন তার থেকে বেশি ভালোবাসা কেউ দিতে পারবে না। বাবা বলেছেন, প্রথম কবিতা লিখে তিনি জামালপুরেই সুনাম অর্জন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবার আত্মার সঙ্গে জামালপুর কবরস্থান মিশে আছে। তিনি তার গোলাপী এখন ট্রেনে সিনেমায় কিন্তু জামালপুরের কবরস্থানকে দেখিয়েছেন। অডিও শোনার পর আমরা সিদ্ধান্ত বদলেছি। কারণ আমি শুনেছি ধর্মমতে মৃত্যুর আগে মানুষের বলে যাওয়া শেষ ইচ্ছা পূরণ করা উচিত।’
দোদুল বলেন, ‘আমজাদ হোসেনের মতো বুদ্ধিজীবী জামালপুরে প্রথমবারের মতো সমাহিত হবেন। আগামী কয়েক বছরে তার মতো মানুষ সমাহিত হবে কিনা সন্দেহ! আমরা তারা ছেলেরা আদৌ হয়ত তার মতো পর্যায়ে যেতে পারবো না। জামালপুরের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আমজাদ হোসেনকে বাঁচিয়ে রাখবেন সম্মানের সাথে।’
এদিকে জামালপুরে সমাহিত করা হলে শনিবার দাফন করা সম্ভব হবে না। সেজন্য রোববার (২৩ ডিসেম্বর) দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানান দোদুল।
সারাবাংলা/আরএসও/এসএমএন