Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছবিটি দেখলে শুভকে ‘অপু’ বলেই মনে হবে: শুভ্রজিৎ মিত্র


১৪ মার্চ ২০১৯ ১৪:৪৮

ছয় দশক আগে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট চরিত্র ‌‘অপু’কে রূপালী জগতে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। বিখ্যাত ওই ঔপন্যাসিকের ‘পথের পাঁচালি’ ও ‘অপরাজিত’ উপন্যাসকে তিনভাগে ভাগ করে ট্রিলজি নির্মাণ করেছিলেন সত্যজিৎ।

এবার কলকাতার পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র ‘অপরাজিত’ উপন্যাসের শেষ ১০০টি পাতার ওপর নির্ভর করে ‘অভিযাত্রিক’ নামে একটি ছবি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। আর ওই ছবিতে পরিচালক ‘অপু’ চরিত্রের জন্য বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের চিত্রনায়ক আরিফিন শুভকে।

বিজ্ঞাপন

অপুকে বড় পর্দায় আনার পরিকল্পনা, আরিফিন শুভকে নির্বাচনের কারণসহ ছবির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুভ্রজিৎ মিত্র কথা বলেছেন সারাবাংলার সঙ্গে। তার কথা শুনেছেন রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ।


‘অপু’কে বড় পর্দায় ফিরিয়ে আনা সাহসের ব্যাপার বলা যায়। সত্যজিৎ রায়ের এই কালজয়ী চরিত্রকে ছয় দশক পর আবারও পর্দায় ফিরিয়ে আনার ইচ্ছা কেনো জাগলো?
বাঙালিকে ‘অপু’ চরিত্রটি প্রবলভাবে স্পর্শ করে। দুই বাংলার মানুষের মননের সাথে চরিত্রটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সিনেমায় অপুর জার্নিটা পুরোপুরি শেষ হয়নি। অথচ উপন্যাসে অপুর জার্নিটার শেষ আছে। এটি একটি বাবা–ছেলের বন্ধনের গল্প। তখন যে ছোট্ট অপু ছিল, সেই অপু এখন নিজেই বাবা।

আমি যখন সাহিত্য নিয়ে চর্চা করেছি, তখন মনে হয়েছিল অপুর শেষাংশের জার্নিটা দেখতে পারলে ভালো হতো। সেই মনে হওয়া থেকে আজ এটা নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করছি।

এটা তো আপনার জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ বটে।
তা তো অবশ্যই। শুধু আমার জন্য না। আমাদের পুরো টিমটার জন্যই চ্যালেঞ্জ। অপুর ট্রিলজিতে যে সব মহীরূহরা কাজ করেছেন তাদের মতো কাজ করতে পারাটা কঠিন। সংগীতে ছিলেন পন্ডিত রবি শংকর, ডিওপি ছিলেন সুব্রত মিত্র, শিল্প নির্দেশনায় বংশী চন্দ্র গুপ্ত, অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শর্মিলা ঠাকুর। তারা প্রত্যেকেই বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি।
তবে চ্যালেঞ্জ জীবনে থাকবে। আমরা আমাদের মহীরূহদের কাছ থেকে যা শিখেছি তা এই ছবিতে প্রয়োগ করব। আর একজন পরিচালক হিসেবে ভালো ছবি বানানোর চেষ্টা তো থাকবেই।

বিজ্ঞাপন

এ ধরনের পিরিয়ডিক্যাল ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেক সময় সমালোচনার সম্মুখিন হতে হয়।
মানুষ সমালোচনা করবেই। আপনি ভালো ছবি বানালেও করবে, খারাপ ছবি বানালেও করবে। আমি বিশ্বাস করি, যদি আমি ও আমার ইউনিট সততার সঙ্গে ভালোভাবে কাজটি শেষ করতে পারি তাহলে সমালোচনার চেয়ে আশীর্বাদ বেশি পাবো।

‘অপু’ চরিত্রে বাংলাদেশের আরিফিন শুভকে নির্বাচন করেছেন। ঠিক কি কারণে তাকে নির্বাচন করলেন?
আরিফিন শুভর ‘আহা রে’ ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের সময় আমি তার কিছু ফুটেজ দেখি। আমার কাছে মনে হয়েছে ‘অপু’র চেহারার সঙ্গে আরিফিনের চেহারা ভীষণ মিলে যায়। তাছাড়া ওর অভিনয়, নিষ্ঠা, একাগ্রতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি অনেকবার আমার বাড়িতে এসেছেন। চিত্রনাট্য নিয়ে আমরা বসেছি। কথা বলার সময় বুঝেছি, শুভ কাজের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। কোনকিছু শেখার ক্ষুধা আছে তার ভেতর।
এছাড়া আরও একটা বিষয় আছে। বিভূতিভূষণ দুই বাংলার, আপামর বাঙালির। আগের ছবিতে এ বাংলার (কলকাতা) নায়ক অভিনয় করেছিলেন। এবার ওপার বাংলা থেকে হোক। শুভকে নেয়ার এটাও একটা কারণ বলতে পারেন।
যখন পোস্টার রিলিজ পাবে তখন বুঝতে পারবেন কেনো তাকে নিয়েছি! শুভর লুক টেস্ট হয়ে গেছে। মাসখানেক পর কোনো বিশেষ দিনে পোস্টার প্রকাশ করব।


আরও পড়ুন :  বিলবোর্ড টপচার্টে জোনাস ব্রাদার


পশ্চিমবঙ্গে আরিফিন শুভর এখনো ‘ফেসভ্যালু’ তৈরি হয়নি। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িকভাবে সফল হওয়া নিয়ে একটা আশঙ্কা থেকে যায়। এ বিষয়ে কি বলবেন?
এটা ব্যবসায়িক ছবি নয়। এটা যৌথ প্রযোজনার ছবিও না যে বাংলাদেশে মুক্তি দেবো। ছবিটি ব্যবসা করুক বা না করুক সেটা মূখ্য নয়। কাস্টিংটাই মূল বিবেচ্য। আমি মনে করি ছবিটি দেখার পর মানুষ শুভকেই ‘অপু’ বলে মনে করবে। তাছাড়া আমি বলতে চাই, ‘অভিযাত্রিক’ একটি আন্তর্জাতিক ছবি, যেটি নির্মিত হচ্ছে বাংলায়। সুতরাং ছবিটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সার্কিটে প্রদর্শিত হবে।

ছবির সঙ্গে বলিউডের মধুর ভান্ডারকর জড়িত আছেন। তিনি এই ছবিটি নিবেদন করছেন। তার ভূমিকা নিয়ে পরিষ্কার জানতে চাই।
দেখুন, শুধু ছবি বানালেই তো হবে না। ছবিকে একটি বড় সংখ্যক দর্শকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যেহেতু ‘অভিযাত্রিক’ আন্তর্জাতিক সিনেমা হতে যাচ্ছে সেহেতু তার সাহায্য প্রয়োজন। মধুর ভান্ডারকর, গৌরঙ্গ ফিল্মস (ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান) কায়রো চলচ্চিত্র উৎসবের ভারতীয় প্রতিনিধি। যার ফলে তাদের আন্তজার্তিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে পরিচিতি আছে। মধুর ভান্ডারকর আছে বলেই আমাদের ছবিটি মুম্বাইয়ে বড় আকারে প্রিমিয়ার হবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রিমিয়ার হবে। এরকম আরও অনেক পরিকল্পনা আছে। আর এই পরিকল্পনার খুঁটিটি হচ্ছে মধুর ভান্ডারকর।
মধুর ভান্ডারকর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক। শুধু তাই নয়, তিনি ভারত সরকার প্রদত্ত চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত। তিনি নিজে একজন পরিচালক হয়েও অন্য একজন পরিচালককে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন। এটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। এছাড়া মুম্বাইয়ের বেশকিছু বিখ্যাত পরিবেশক সংস্থা এগিয়ে আসছে। যাতে এই ছবিতে আন্তর্জাতিক পরিসরে নিয়ে যেতে পারি।

শুটিং কবে নাগাদ শুরু হচ্ছে?
চলতি বছর মে-জুন মাসে শুটিং শুরু করব। তারপর বাইরের কিছু চলচ্চিত্র উৎসব ঘুরে এসে মুক্তি দেবো। সেটা হতে পারে শীতের সময়।

বাংলাদেশে মুক্তি দেয়ার কথা ভাবছেন ?
কথাবার্তা চলছে। জানেন তো অনেক জটিলতা আছে। সেগুলোর মুখোমুখি হতে হবে। পরিচালক হিসেবে আমি তো চাইবই যেন বাংলাদেশে মুক্তি পাক। শুভ চেষ্টা করছে।

সারাবাংলা/আরএসও/পিএ/পিএম


আরও পড়ুন :  যৌন হেনস্তার কথা প্রকাশ্যে বলবেন না সানা!


আরও দেখুন :

জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে ছবি বানাতে চাই, প্রযোজক পাচ্ছি না : তৌকির আহমেদ

অপু অভিযাত্রিক আরিফিন শুভ শুভ্রজিৎ মিত্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর