চলচ্চিত্রের মন্দ দিন, সুপারস্টারের জন্মদিন
২৮ মার্চ ২০১৯ ১১:০৪
ঢাকাই ছবির সুপারস্টার কে? ভক্ত এবং যারা ভক্ত না এমনকি যারা সিনেমা দেখেন না, তারাও জানেন সুপারস্টারের নাম। দর্শক মহলের সব স্তরে তিনি পৌঁছাতে পেরেছেন বলেই তিনি সুপারস্টার শাকিব খান।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) তার জন্মদিন। কত তম? সেই প্রশ্নে যাবার দরকার নেই। বরং এটা জেনে চমকে যেতে পারেন যে, বিশ বছর ধরে তিনি ঢাকাই ছবির নায়ক হয়ে বিনোদিত করে যাচ্ছেন দর্শকদের।
আরও পড়ুন : তদন্তে নির্ধারিত হবে ‘নোলক’ ছবির ভাগ্য
এই ঢাকাই ছবি তাকে বানিয়েছে শাকিব খান বা সুপারস্টার শাকিব খান। তার জন্মদিনে ভক্তদের মাঝে তৈরি হয় বাড়তি উন্মাদনা। শুধু ভক্তদের মধ্যে বললে ভুল হবে, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মধ্যেও একধরনের চাঞ্চল্য দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভরে যায় প্রিয় নায়ককে জানানো শুভ কামনায়। আর এই ভাবে তিনি চলচ্চিত্রের সুপারস্টার থেকে থেকে কখনো কখনো হয়ে ওঠেন ব্যক্তি সুপারস্টার।
ভক্ত, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মধ্যে শাকিব খানের জন্মদিন নিয়ে আনন্দ থাকলেও শাকিব খানের মনে আনন্দ আছে কি না তা এই মুহূর্তে একটা বড় প্রশ্ন। কারণ শাকিব খান যখন একদিকে কেক কাটছেন তখন অন্যদিকে হয়ত কোনো প্রদর্শক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তার সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেয়ার। কারণ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি ১২ এপ্রিল থেকে হল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
শাকিব খান যে চলচ্চিত্রের জন্য সুপারস্টার সেই চলচ্চিত্রাঙ্গন এখন ঘোর অমানিশায়। সুপারস্টার হওয়ায় সবার নজর বা বাঁকা দৃষ্টি ওই শাকিব খানের দিকেই।
দেশে সিনেমা নির্মাণ কমে যাচ্ছে দিন দিন। সেখানে শাকিব খানের ছবিই একমাত্র ভরসা হয় চলচ্চিত্র প্রদর্শক, পরিবেশক, বুকিং এজেন্টদের কাছে। একথা শাকিব নিজেও জানেন। তাই তিনি চেষ্টা করেন উৎসবে তার অভিনীত সিনেমা রাখতে। কিন্তু এবার থেকে সেটা সম্ভব হবে কি না তা হয়তো তাকে ভাবতে হচ্ছে জন্মদিনের মতো আনন্দের সময়েও। কারণ হল বন্ধ থাকলে আর ছবি চলবে কীভাবে বা কোথায়?
শাকিব খানের তিনটি ছবির কথা এখন সবার মুখে মুখে। বিভিন্ন ইস্যুতে ছবিগুলোর নাম বলতে হচ্ছে বার বার। সেগুলো হলো ‘নোলক’, ‘শাহেনশাহ’ এবং ‘পাসওয়ার্ড’।
পরিচালক-প্রযোজক দ্বন্দ্বে ‘নোলক’ ছবিটির ভবিষ্যৎ এখন নির্ধারিত হবে আদালতে। ‘শাহেনশাহ’ বৈশাখে মুক্তির পরিকল্পনা থাকলেও শেষমেশ তা হবে কি না তা সময় বলবে। আর ‘পাসওয়ার্ড’-এর মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে ঈদে। কিন্তু বুকিং এজেন্ট সমিতি জানিয়েছে তারা কোনো ছবি বুকিং করছে না এবং করবেও না।
অর্থাৎ দেশের প্রেক্ষাগৃহে ভারতীয় উপমহাদেশের ছবি প্রদর্শনের নিয়ম শিথিল না করা হলে ১২ এপ্রিল থেকে বন্ধ থাকবে দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো। ২০১৭ সালের ঈদেও এমন এক যন্ত্রণায় পরেছিলেন শাকিব খান। শাকিব অভিনীত যৌথ প্রযোজনার ছবি প্রদর্শন বন্ধের দাবি ওঠে সেই সময়। অভিযোগ ছিল নিয়ম না মেনে নির্মিত হয়েছে ছবিটি। কিন্তু এবারের সমস্যা আরও গভীরে।
সেবার সিনেমা দেখানোর জায়গা ছিল কিন্তু সিনেমা প্রদর্শন বন্ধের জন্য আন্দোলন হয়েছিল। এবার কম হলেও কিছু ছবি আছে কিন্তু ছবিগুলো দেখানোর জায়গা ঞয়তো থাকবেনা। যদিও অনেকে বলেছেন বিকল্প উপায়ে দেখানো হবে সিনেমা। কিন্তু তা থেকে কোনো ভালো সমাধান তৈরি হবে না।
দম না ফেলতে পারা সময় কাটানো শাকিব খান কখনো হয়ত কল্পনাও করেননি যে, প্রেক্ষাগৃহ বন্ধের ঘোষণা সামনে নিয়ে তার পালন করতে হবে আনন্দের জন্মদিন।
এমন পরিস্থিতিতে শাকিব খান প্রায়ই হয়ে উঠছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের আড্ডার প্রধান বিষয়। সেখানে অনেকে পরামর্শ দিচ্ছেন শাকিব খানকে। গল্পনির্ভর ছবিতে মনোযোগ দিতে শাকিবকে অনুরোধ করেছেন তারা। এতে করে শাকিব দেখাতে পারবেন আরও অনেক বৈচিত্র্য। দর্শকরাও পাবেন নতুন শাকিবকে সেই সঙ্গে নতুন ধরনের ও ঢংয়ের গল্প নিয়ে কাজ করতে সাহস পাবেন তরুণরা।
জন্মদিনে শাকিব খান নিতে পারেন নুতন এই চ্যালেঞ্জ। মন্দ দিনের চলচ্চিত্রাঙ্গনকে নতুন মাত্রায় দেখার প্রত্যয় নিতে পারেন আগামী জন্মদিনে।
সারাবাংলা/পিএ/পিএম
আরও পড়ুন : মারদানি লুকে রানী মুখার্জী