Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন: চার শ্রেণিতে হবে ছবির মূল্যায়ন


২০ জুন ২০১৯ ১৫:২৬

চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড পরিণত হচ্ছে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে। এ লক্ষে ‘দ্য সেন্সরশিপ ফিল্মস অ্যাক্ট, ১৯৬৩ (সংশোধিত ২০০৬)’ এর পরিবর্তে প্রণয়ন করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন ২০১৯’- এর খসড়া।

নতুন এই নীতিমালা অনুযায়ী চলচ্চিত্রকে চারটি শ্রেণিবিন্যাসে মূল্যায়ন করা হবে। শ্রেনিগুলো হলো-

ইউএ (UA) (সর্বসাধারণের জন্য উপযোগী)। অর্থাৎ ইউএ সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ছবিটি সব বয়সী দর্শকদের দেখার উপযোগী। এই গ্রেডের চলচ্চিত্র হবে মূলত সামাজিক ও পারিবারিক কাহিনীর। এসব চলচ্চিত্রে এমন কোনো উপদান থাকবে না যা দেখলে পিতা-মাতা বিব্রত বা অসন্তুষ্ট হতে পারেন। এতে হালকা সংঘর্ষ বা রসিকতা থাকতে পারে। এতে কোনো নগ্নতা, যৌনতা, হিংস্রতা কিংবা অশালীন ভাষার ব্যবহার থাকবে না। কাহিনীর প্রয়োজনে ধূমপান বা মাদকে গ্রহণের দৃশ্য দেখাতে হলে সতর্কীকরণ বক্তব্য থাকতে হবে। সহিংসতা বা ভীতিকর দৃশ্য থাকলে তা হতে হবে স্বল্প পরিসরে।

ইউ (U১২-) (১২ বছর বয়স পর্যন্ত) গ্রেডের সিনেমা ১২ বছরের কম বয়সী শিশুরা কেবল পিতা-মাতা বা অভিভাবকের সঙ্গে দেখতে পারবে। এটি মূলত শিশুতোষ চলচ্চিত্র। এতে হালকা ভীতিকর দৃশ্য থাকতে পারে।


আরও পড়ুন :  এ কোন নিরব!


ইউ (১২-১৮) (১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী) গ্রেডের সিনেমাগুলো ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশু-কিশোররা দেখতে পারবে। এ ধরনের চলচ্চিত্রে হালকা ভীতিকর দৃশ্য থাকতে পারে। এছাড়া স্বল্প মাত্রায় সহিংসতা ও রোমান্টিকতা থাকতে পারে।

ইউ (১৮+) (১৮ বছরের বেশি বয়সী) গ্রেডের সিনেমাগুলো ১৮ বছর ও তার বেশি বয়সীরা দেখতে পারবেন। এ ধরনের চলচ্চিত্রে পরিমিত মাত্রায় সন্ত্রাস, ভয়াল দৃশ্য, যৌনতা ও বিধি অনুযায়ী সতর্কীকরণ বক্তব্যসহ মাদকের ব্যবহার থাকতে পারে।

‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন ২০১৯’-এ ১৫ টি ধারা রয়েছে। সেগুলো হলো-

১) সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা ও কার্যকারিতা, ২) সংজ্ঞা, ৩) বোর্ড, বোর্ড কার্যালয় ও আপিল কমিটি গঠন, ৪) চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন, ৫) আপিল, ৬) সার্টিফিকেট সাময়িক স্থগিতকরণ, ৭) চলচ্চিত্রের প্রচার সামগ্রীর অনুমোদন, ৮) সার্টিফিকেট বাতিল করার ক্ষমতা, ৯) অপরাধ, দণ্ড ও আপিল, ১০) বিধি প্রণয়ন ক্ষমতা, ১১) অব্যাহতির ক্ষমতা, ১২) ক্ষমতা অর্পণ, ১৩) আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধা, ১৪) দাপ্তরিক কর্তিৃপক্ষকে শুনানি ব্যাতিত কোনো নিষেধাজ্ঞা বা অন্য কোনো আদেশ নহে, ১৫) রহিতকরণ ও হেফাজত ধারায় বিভিন্ন উপধারার বর্ণনা রয়েছে।

এসব ধারার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো হলো সার্টিফিকেট সাময়িক স্থগিতকরণ, চলচ্চিত্রের প্রচার সামগ্রীর অনুমোদন ও সার্টিফিকেট বাতিল করার ক্ষমতা।

সার্টিফিকেট সাময়িক স্থগিতকরণ ধারার উপধারায় বলা হয়েছে সার্টিফিকেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান যদি মনে করেন যে, একটি সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত সিনেমা বাংলাদেশের ভেতর প্রদর্শন উচিত না, তাহলে তিনি আদেশ জারির মাধ্যমে সাময়িকভাবে সার্টিফিকেট স্থগিত করতে পারেন। যদি কোনো জেলা প্রসাশক মনে করেন যে তার এলাকায় কোনো সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত সিনেমা প্রদর্শন উচিত না, তাহলে তিনি আদেশ জারির মাধ্যমে তার জেলার সিমানার মধ্যে সেই ছবির সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারেন।

চলচ্চিত্রের প্রচার সামগ্রীর অনুমোদন নিতে হবে সার্টিফিকেট বোর্ড থেকে। চলচ্চিত্রের প্রচার সামগ্রী যেমন- পোস্টার, ফটোসেট, বিলবোর্ড, ব্যানার, অফিস ডেকোরেশন, ট্রেইলার, টিজার, গান, সংলাপ যে কোনো মাধ্যমে প্রচারের আগে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।

আইন শৃঙ্খলার স্বার্থে, স্থানীয় চলচ্চিত্র শিল্পের স্বার্থে, অথবা যে কোনো জাতীয় স্বার্থে একটি সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের সার্টিফিকেট আদেশ জারির মাধ্যমে সার্টিফিকেট বাতিল করা যাবে। কোনো সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র যদি ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন ২০১৯’-এর যে কোনো ধারা ভেঙে প্রদর্শন করা হয় সেক্ষেত্রেও সার্টিফিকেট বাতিল করা যাবে আদেশ জারির মাধ্যমে।

‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন ২০১৯’ কবে চূড়ান্ত হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নিজামূল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল (১৯ জুন) এ বিষয়ে একটি সভা হয়েছে। আমাদের লক্ষ আসছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আগেই এই নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা।’

খসড়া নীতিমালায় যা উল্লেখ আছে তার সঙ্গে নতুন কিছু বিষয় সংযোজন হবে বলেও ধারণা দেন নিজামূল কবীর।

তিনি বলেন, ‘যে ছবিটি খুব স্পর্শকাতর বিষয়ের, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে বা যে ছবিটি দেখানো উচিত হবে না বলে সেন্সর কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, দেখা যায় সেই ছবিটি বিদেশে প্রদর্শন হচ্ছে। এই ব্যাপারে সেন্সর সার্টিফিকেশন নীতিমালায় কোনো একটি ধারা বা উপধারা সংযুক্ত হতে পারে।’

তবে কি দেশে সেন্সর না পাওয়া ছবি বিদেশে দেখানো যাবে না?
এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান জানান, সময়ই হলেই এর উত্তর পাওয়া যাবে।

এছাড়া কপিরাইট ছাড়া, নকলের অভিযোগের বিষয়টিও সেন্সর সার্টিফিকেশন নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলেও জানান সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নিজামূল কবীর।

সারাবাংলা/পিএ/পিএম


আরও পড়ুন :  অথচ নুসরাত জাহানের বিয়ের চিত্রনাট্য ছিল অন্যরকম


আরও দেখুন ঃ  আমার জন্মই হয়েছে সঙ্গীতের জন্য: বাপ্পা মজুমদার [ভিডিও স্টোরি]

চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন ২০১৯ সেন্সর বোর্ড


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর