Wednesday 15 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জমে উঠেছে আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসব


১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৫:৪৬ | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:২০

এন্টারটেইনমেন্ট করেসপনডেন্ট:

‘মামার বাড়িতে পালিত হওয়া অসহায় এক তরুণী। মামার পরিবারে মেয়েটির লাঞ্চনা-গঞ্জনার শেষ নেই। মেয়েটি হঠাৎ লটারীতে প্রচুর টাকা পেয়ে যায়। এ সময় মামার পরিবারে তার আদর যত্নও বেড়ে যায়। কিছুদিন পরেই সংবাদ আসে যে লটারি মিথ্যে। মেয়েটির ভাগ্যে আবার দুর্ভোগ নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত সে বিদ্রোহ করে বাড়ি থেকে কাঁচের দেয়াল ভেঙ্গে বেড়িয়ে পড়ে।’

এই গল্প জহির রায়হানের কালজয়ী সিনেমা কাঁচের দেয়ালের। ছবিটি আজ (বৃহস্পতিবার) প্রদর্শিত হয়েছে আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসবে। কেবল এই ছবিটিই নয়, বাংলা ভাষার স্বর্ণালী ও সমকালের কুড়িটিরও বেশি সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে এবারের উৎসবে।

আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসবকে ঘিরে বেশ উচ্ছ্বাস দেখা গেলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। আয়োজক সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের পক্ষ থেকেও চালানো হচ্ছে ব্যাপক প্রচারণা। ফলে এবারের আয়োজনের প্রায় প্রতিটি শোতেই দর্শক সমাগম হচ্ছে প্রচুর। বেশীর ভাগ শো যাচ্ছে হাউসফুল। বসন্ত বরণ ও ভালবাসা দিবসে দর্শকেরা সিনেমা দেখেছেন জুটি বেঁধে। তবে দর্শকেরা সবচেয়ে বেশি ভিড় করেছেন বাংলাদেশী সিনেমা গহীন বালুচর ও যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘নবাব’ দেখতে। বসতে না পেরে অনেকে মাটিতে বসেও ছবি দুটি দেখেছেন।

উৎসবে ছবি দেখতে এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া রাত্রি। এবারের আয়োজন নিয়ে দারুণ সন্তুষ্ঠ এই সিনেমাপ্রেমী। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাভাষার সিনেমা নিয়ে এমন আয়োজন যেন আরো বড় পরিসরে হয়। গণমানুষের চিন্তা এবং রুচির বদল করতে সিনেমা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এমন আরো আয়োজন হলে এদেশে ভালো সিনেমা তৈরীর প্রবণতা বাড়বে। দর্শকও তখন সিনেমা দেখতে আগ্রহবোধ করবে।’

বিজ্ঞাপন

রসায়ন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ সপরিবারে এসেছিলেন আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসবে। নিজের ক্যাম্পাসে এমন আয়োজন অভিভূত করেছে তার পরিবারকে। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেমা নিয়ে এমন আয়োজন সত্যিই প্রসংশনীয়। আমাদের সময় এমন আয়োজন হতো না, তাই হয়তো আমার কাছে এতোটা ভালো লেগেছে। এছাড়া ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এই আয়োজনটি বেশ অর্থবহ মনে হয়েছে আমার কাছে।’

এবারের আয়োজন নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট আয়োজক সংগঠন? সংগঠনটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৌরভ বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি আয়োজনেই ভালো কিছু করার চেষ্টা থাকে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভালো সাড়াও পাওয়া যায়। তবে এবারের আয়োজনটি অন্য যেকোন বছরের তুলনায় বেশ ভালো হয়েছে। প্রায় প্রতিটি শোতেই ব্যপক দর্শক সমাগম হচ্ছে। বিশেষ করে সমসাময়িক বাংলাদেশী সিনেমাগুলো নিয়ে এবার ঈর্ষনীয় দর্শক আগ্রহ ছিলো।’

১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনকে স্মরণ করে ১৭ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আয়োজন করা হয় আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসব। আয়োজনটির পেছনে পুরো শ্রমটাই দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ। ২০০২ সালে প্রথম আয়োজনেই সাধারণ ছাত্রদের কাছ থেকে ব্যপক সাড়া পায় সংগঠনটি। এরপর আর একবারের জন্য তাদেরকে থামতে হয়নি।

শুরু থেকে উৎসবটির নাম ছিলো ‘চলচ্চিত্রে বাংলার মুখ’। ভাষা আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০০২ সালে শুরুর উৎসবে ‘ভাষা আন্দোলনের ৫০ বছর’ শিরোনামটিও যুক্ত ছিলো। পরবর্তীতে ২০০৭ সাল থেকে উৎসবটির নাম পাল্টে রাখা হয় ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসব’।

প্রসঙ্গত, ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র উৎসবের’ চলতি আসরের প্রধান সহযোগি হিসেবে আছে সারাবাংলা ডট নেট

বিজ্ঞাপন
চলচ্চিত্র উৎসবের চতুর্থদিনের আয়োজন

সারাবাংলা/টিএস/পিএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর