বঙ্গবন্ধুকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার উৎসর্গ সোহেল রানার
১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:১৬
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯-এ আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন সোহেল রানা। তিনি অভিনেত্রী সুচন্দার সঙ্গে যৌথভাবে পুরস্কারটি পেয়েছেন। পুরস্কারটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করেছেন।
সোহেল রানা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রথম ছবি ‘ওরা ১১ জন’ আমি প্রযোজনা করেছিলাম। সে ছবি দেখে বঙ্গবন্ধু মুগ্ধ হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তিনি আমাকে বলেছিলেন, চলচ্চিত্রের জন্য এভাবে কাজ করে যেতে। তার জন্যই আমার আজকের এত বড় প্রাপ্তি। তাই তাকে এ পুরস্কার উৎসর্গ করছি।
কিংবদন্তি এ নায়ক, পরিচালক, প্রযোজক আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তির জন্য তার সঙ্গে কাজ করা সকল পরিচালক, প্রযোজক, ক্যামেরাম্যান, লাইটম্যান, প্রোডাকশন বয়, সহশিল্পীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘একটা সময় গিয়েছে আমি সকাল ৮টায় বেরিয়েছি, ফিরেছি রাত ১০টায়। যার ফলে আমার স্ত্রীকে তার প্রাপ্য সময় কখনই দিতে পারিনি। এরজন্য কোনদিন সে আমার কাছে কোন অভিযোগ করেনি। আজকে সবার সামনে আমি তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
‘কেউ যখন জিজ্ঞেস করতো আপনার ছেলে কতটুকু হয়েছে আমি তখন হাত দিয়ে দেখাতাম এতটুকু হয়েছে। কারণ তার সঙ্গেও আমার খুব কমই দেখা সাক্ষাত হতো।’
পুরো বক্তব্য জুড়ে আবেগাপ্লুত ছিলেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘আমার ৪৬ বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে মনে হচ্ছে এটিই শেষ পুরস্কার। আমার জীবনের চলচ্চিত্র নিয়ে প্রথম পুরস্কার ছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে। মনে আশা ছিল এবারও তার হাত থেকে পুরস্কারটি নিব। কিন্তু করোনার কারণে সে আশা পূর্ণ হলো না।’
তিনি প্রধানমন্ত্রী সব সময় চলচ্চিত্রের অসহায় শিল্পীদের পাশে থাকেন জানিয়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে বলেন, ‘আমি চাই আমিসহ যারা আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বা সামনে পাবেন তাদের প্রত্যেককে যেন ভিআইপি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের যেন কমপক্ষে ২ বছরের জন্য সিআইপি ঘোষণা করা হয়।’
তিনি সিআইপি অর্থ ‘কালচারালি ইমপোর্টেন্ট পার্সন’ হিসেবে বলেন।
তিনি তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, ‘চলচ্চিত্রের সব ধরনের শিল্পী, পরিচালক ও কুশলীদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা করার অনুরোধ করছি। আপনি যদি নির্দেশ প্রদান করেন, আমি মনে করি বিএফডিসির মহাব্যবস্থাপকের মাধ্যমে এটি করা হলে সাধারণ কোনও শিল্পী, কর্মচারী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত না খেয়ে থাকবেন না।’
রোববার (১৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। এবার ২৬টি ক্যাটাগরিতে ৩৩টি পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সারাবাংলা/এজেডএস
আজীবন সম্মাননা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বঙ্গবন্ধু সোহেল রানা