বুবলি-আদর রসায়নের ‘তালাশ’ গুনছে মুক্তির দিন
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:৫৪
ক্যান্টিনের সামনের চেয়ারে বসে আছেন বুবলি। অপেক্ষা করছেন আদর আজাদ চৌধুরীর জন্য। একটু পরে আদর আসলেন। এসেই এক চেয়ারে বসে আরেক চেয়ারে পা তুলে দিলেন। বসেই বুবলির সঙ্গে রাগি স্বরে কথা বলা শুরু করলেন। বুবলিও কিছুটা উত্তেজিত হয়ে উত্তর দিলেন।— এরকম একটি দৃশ্যের শুটিং চলছিল এফডিসির ক্যান্টিনের সামনে। সৈকত নাসির পরিচালিত ‘তালাশ’ ছবির শেষ দিনের শুটিংয়ে এমন একটি দৃশ্যে শট দিচ্ছিলেন বুবলি ও আদর আজাদ চৌধুরী।
ছবিতে আদর একজন সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার। তিনি গায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চান। কিন্তু সঙ্গীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্রেক দিতে চায় ভাইরাল শিল্পীদের। আর আদরকে সুরকার হিসেবেই পেতে চায় তারা। এরকম একটি ঘটনার সঙ্গে বুবলির ভাই জড়িত। সেই বিষয় নিয়েই তাদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলছিল।
সূর্য ডুবতে থাকায় পরিচালক শিল্পীসহ পুরো টিমকে তাড়া দিচ্ছিলেন শট শেষ করার। কারণ সূর্যের আলো চলে গেলে এ দৃশ্য আর ধারণ করা যাবে না। কিন্তু পাঁচ মিনিটের মতো শুটিং আটকে থাকল আদরের ফোনের কভার খুঁজে পেতে। সহকারী খুঁজে পেতে দেরি করায় নিজেই দৌড়ে গিয়ে কভারটি নিয়ে আসেন। কভারটি নিয়ে দেরির কারণ হলো, সেটি না হলে ছবির দৃশ্যের কন্টিনিউটি থাকতো না।
এই দৃশ্য ধারণ শেষে সারাবাংলার সঙ্গে কথা হয় পরিচালক ও শিল্পীদের।
‘ছবির গল্পে একটা মিজিক্যাল দল থাকে। যাদের সংগ্রাম, বন্ধুদের ভেতরের মান-অভিমান, বিচ্ছেদ আবার একটা সময় গিয়ে একে অপরকে মিস করা- সবই থাকবে আমাদের সিনেমায়। একটা সময় ছিল একজনের আরেকজনকে ছাড়া চলতোই না, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে আর সেই বিষয়টা থাকে না। হঠাৎ একদিন মনে পড়ে, তারা একসঙ্গে বহু পথ চলেছে। বলতে পারেন, এটি অনেকটাই হিউম্যান সাইকোলজির মিশ্রণে কনটেন্ট।’— এভাবেই ছবির কাহিনি বর্ণনা করছিলেন সৈকত নাসির।
ক্লিওপেট্রা ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত ছবিটির কাহিনি পরিচালকের সঙ্গে যৌথভাবে লিখেছেন আসাদ জামান। এক কথায় ছবিটিকে রোমান্টিক সাইকোলজিক্যাল ড্রামা বলতে চান পরিচালক।
ছবিতে ‘নায়রা’ হিসেবে দেখা যাবে বুবলিকে আর আদরকে সুমন হিসেবে। নিজের অভিনীত চরিত্র সম্পর্কে বুবলি শুধু জানান, তাকে ‘অন্যরকম’ একটি চরিত্রে দেখা যাবে। কেমন অন্যরকম তা ছবি মুক্তির আগে বলতে চান না তিনি।
‘ক্যাসিনো’ দিয়ে পরিচালক সৈকত নাসিরের সঙ্গে জার্নিটা শুরু করেছিলেন বুবলি। এটি তার সঙ্গে দ্বিতীয় ছবি। বুবলি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সৈকত নাসির দক্ষ একজন পরিচালক। দেখা যাচ্ছে, প্রয়োজনে নিজেই স্ক্রিপ্টের পরিবর্তন করছেন, আবার শিল্পীদের বেশ সহজভাবে দৃশ্যগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে তার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বেশ দারুণ।’
‘তালাশ’-এ আদরের পাশাপাশি আসিফ অভিনয় করছেন বুবলির বিপরীতে। তাদের দুজনের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আদরের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি সে দারুণ একজন শিল্পী। খুব ভালো অভিনয় বোঝে এবং করে। আর আসিফ তো র্যাম্পে কাজ করে। সেও অনেক ভালো করেছে।’
ইতোমধ্যে তিনটি ছবিতে অভিনয় করেছেন আদর। বুবলির সঙ্গে ‘তালাশ’-এ অভিনয় প্রসঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পুরো টিমই দক্ষ। সেখানে বুবলির মতো একজন গুণি ও জনপ্রিয় একজনের সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার জন্য সৌভাগ্য বলব।’
পরিচালক জানালেন, ছবির সম্পাদনার কাজ শেষ পর্যায়ে। কিছুদিনের মধ্যে ডাবিংয়ের কাজ শুরু করবেন। তাদের টার্গেট মধ্য নভেম্বরে ছবিটি সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়ার।
খুব বেশিক্ষণ পাওয়া গেল না ‘তালাশ’ টিমকে। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতা শেষ করে তারা চলে গেলেন মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্সের ভেতরে। সেখানে অন্য একটি দৃশ্যের জন্য সেট প্রস্তুত ছিল। পরিচালক ‘থ্রি, টু, ওয়ান, জিরো, অ্যাকশন’ বলে শট নেওয়া শুরু করলেন। আর এদিকে আমরা অন্য সেটে নতুন খবরের খোঁজে।
সারাবাংলা/এজেডএস