Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অনেক কিছু ছাড় দিয়ে কাজ করছি: বুবলি

আহমেদ জামান শিমুল
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:২৬

করোনার পর পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন জনপ্রিয় নায়িকা বুবলি। শেষ করলেন সৈকত নাসির পরিচালিত ‘তালাশ’-এর শুটিং। ছবির সেটে বসে কথা বলেছেন সারাবাংলার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র নিউজরুম এডিটর আহমেদ জামান শিমুল।

 

তালাশে আপনার অভিনীত চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাই।

তালাশের শুটিং সব শেষ। এখন শুধু ডাবিং বাকি। এতে আমাকে একদম অন্যভাবে দেখবেন। খুব বেশি কিছু বলবো না। এতটুকু বলতে চাই— খুব সুন্দর একটি গল্পের ছবি। সৈকত নাসির খুব যত্ন করে এটি পরিচালনা করেছেন। আমার মনে হয়, দর্শকদের ভালো লাগবে।

ভিন্নভাবে বলতে কতটুকু বিভিন্নভাবে দেখা যাবে?

মাত্রাটুকু তো বলতে পারছি না। কিন্তু এ ধরনের চরিত্র বা গল্পে আমার আগে কাজ করা হয়নি। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট বা ২০ মিনিটের ছবির গল্প আমি খুব একটা বলতে চাইছি না। কষ্ট করে সিনেমা হলে যেতে হবে। এত সুন্দর করে ছবিটা বানানো হচ্ছে, তা দর্শকদের বড় পর্দায় দেখলেই ভালো লাগবে।

এ ছবিতে আপনার সঙ্গে আদর আজাদ চৌধুরী ও আসিফ অভিনয় করেছেন। তাদের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

আদর আজাদ চৌধুরীর সঙ্গে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা ভালো। খুব ভালো একজন অভিনেতা। কাজের প্রতি খুব আন্তরিক, নিবেদিতপ্রাণ এবং সিনেমার প্রতি বেশ পজেটিভ একজন মানুষ। আমাদের শিল্পীদের মধ্যে এ জিনিসগুলো খুব দরকার। তিনি খুব সম্ভাবনাময়ী। আশা করছি অনেক ভালো করবেন।

আর আসিফও আছেন আমার বিপরীতে এ ছবিতে। উনি র‍্যাম্পে কাজ করেন। এখানেও ভালো করেছেন।

এটাকে কিসের ‘তালাশ’ বলবো।

এ পর্যন্ত সৈকত নাসির পরিচালিত তালাশই থাকুক। যেখানে বুবলি, আদর আজাদ ও আসিফ আছে। আমাদের পুরো টিমকেই আপাতত তালাশের মধ্যে রাখি।

বিজ্ঞাপন

তারপরও যদি জিজ্ঞেস করি, প্রেম, রোমান্স, থ্রিল— কী ধরনের গল্প এটি?

এটি আসলে রোমান্টিক থ্রিলার গল্প। এর মধ্যে উত্তেজনা আছে। সবকিছু মিলিয়ে বেশ আকর্ষণীয়।

এখানে সঙ্গীতের কোন ব্যাপার আছে কিনা, যেটা আমরা শুটিংয়ে দেখলাম।

থ্রিলার, সাসপেন্স থাকলেও এটি মূলত মিউজিক্যাল ফিল্ম। মিউজিকের কিছু ভেরিয়েশন দেখা যাবে এতে।

 

সৈকত নাসিরের সঙ্গে দুটো ছবি— তালাশ, ক্যাসিনো। কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

খুব ভালো। উনি বেশ সম্মান দিয়ে কাজ করেন। তিনি শুধুমাত্র পরিচালনা করছেন তা না, একটা সংলাপ কী হবে, একজন টেকনেশিয়ান কোথায় কী করছে, ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল কী হবে— সুন্দর করে সবকিছু দেখা শোনা করেছেন। দুটো ছবি মিলিয়ে তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভালো। তার সঙ্গে কাজে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি আমি।

১ অক্টোবর ‘চোখ’ মুক্তি পাচ্ছে। কী মনে হয় কেমন সাড়া পাবেন?

শাপলা মিডিয়ার ব্যানারে ছবিটি আসছে। আসিফ ইকবাল জুয়েলের পরিচালনায় প্রথম ছবি এটি। আমার বিপরীতে আছেন নীরব ও রোশান। শহীদুজ্জামান সেলিম ভাইয়াও আছেন। খুব সুন্দর একটা টিমে কাজটা হয়েছে। কিন্তু আমাদের কিছু লিমিটেশন ছিল যখন কাজটা করি। তখন করোনার প্রকোপ অনেক বেশি ছিল। সে জায়গা থেকে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে এটা বেশ আনন্দের খবর। এখন আস্তে আস্তে করে সিনেমা হল খুলছে। দর্শকরা আসবেন কী আসবেন না সেটা পরের ব্যাপার। তারা জানছে হলগুলো খুলছে। তারা যে কোন সময় যে কোন ছবি দেখতে পাবে— এ খবরটা আসলে বেশি পজেটিভ। আমি চাই দর্শকরা হলে আসুক।

এখানে চোখ কি মনের কথা বলবে নাকি অন্যকিছু?

চোখ দিয়ে তো বহু কিছুরই বহিঃপ্রকাশ হয়। কিন্তু চোখ দিয়ে তো আমরা ভালোবাসাটাই দেখি আগে। একটি মানুষের চোখ কী বলছে— সুখের কথা বলছে নাকি দুঃখের কথা বলছে নাকি প্রেমের কথা বলছে। সবকিছুর প্রকাশ নিয়েই সিনেমাটি।
দেড় বছর পর আপনার কোনো ছবি মুক্তি পাচ্ছে। চিন্তিত বা বিচলিত কি?

বিজ্ঞাপন

আমার সবশেষ ছবি ছিল ‘বীর’। ওই ছবি মুক্তির পরপরই করোনা মহামারী শুরু হয়ে যায়। সিনেমা হলগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। আনন্দের সংবাদ হচ্ছে, চোখ মুক্তির ঘোষণার সাথে সাথে আমরা অনেকগুলো ছবি মুক্তির ঘোষণা পেয়েছি। এটা ঈদের মতোই একটা আনন্দ। বিচলিত ঠিক না। দর্শকরা একটু একটু করে অভ্যস্থ হচ্ছে। সবাই একটা নিউ নরমালে প্রবেশ করেছি। এ দুই বছরে আমাদের অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এখন আমরা হলে যাবো— সেটাই অভ্যস্থ হতেও একটু সময় লাগবে। সময়টা চ্যালেঞ্জিং হলেও আনন্দ লাগছে।

 

হল মালিকদের সমিতির হিসেব মতে ৬০টির মত হল খোলা রয়েছে। আবার করোনার সময়ে ওটিটির জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ওটিটি সিনেমার জন্য হুমকি কিনা?

১৯৯৮ সালের শেষ দিক দেশে হল বন্ধ হওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশ বা ইন্ডাস্ট্রি ছোট হলেও মার্কেটটা অনেক বড়। বিনোদনের বড় মাধ্যমটিই হচ্ছে সিনেমা। সবাই মিলে যদি ভালো পরিকল্পনা করে ভালো সিনেমা দিতে পারি তাহলে দর্শকরা আসবে। কারণ তারা দেখতে চায়। আমরা যতই বলি, দর্শকরা তাদের জায়গা থেকে তুলনা করে ফেলছে— হলিউড, বলিউডে এটা হচ্ছে, ওটা হচ্ছে বা আমাদের দেশে এরকম হচ্ছে। কিন্তু সে জায়গায় বাজেট অনেক বড় একটা ফ্যাক্ট। বাজেটটা আমরা ওইসব দেশের মতো আমরা পাচ্ছি না। কিন্তু আমাদের এখানে অনেক মেধাবী পরিচালক-প্রযোজক আছে— যারা লগ্নি করতে চায়। শিল্পীরা আছেন যারা ভালো কাজ করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের শিল্পীদের বাইরে দেশের ওটিটিতে গিয়েও তাদের জয়জয়কার।

আর ওটিটি আসলে সময়ের দাবি। আগে শুধু বিটিভি ছিল, এখন অনেক চ্যানেল। ইউটিউব ছিল না, এখন সবার হাতে হাতে। সিনেমা আসলে বড় পর্দার জন্য, ওভাবেই বানানো হয়। বড় পর্দা থাকা উচিত। ওটিটি ও সিনেমা সমান্তরালভাবেই এগোবে বলে মনে হচ্ছে।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, চোখের প্রচারণায় আপনাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

আমার জায়গা থেকে আমি কিন্তু শতভাগ প্রচারণার চেষ্টা করছি। ছবিটা যে ১ অক্টোবর আসবে, এটা কিছুদিন আগেই জানলাম। আমার এখন যে শুটিংগুলো সেগুলো এক দেড় মাস আগে থেকেই দেওয়া ছিল। সোশ্যাল মিডিয়াতে আমার পেইজের এডিমনরা ও আমি মিলে ‘চোখ’ নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি, গত এক-দুই সপ্তাহ ধরে। বিভিন্ন মিডিয়ার সঙ্গে ছবিটি নিয়ে কথা বলছি। এছাড়া প্রযোজনা সংস্থা থেকে ভিন্ন কোন পরিকল্পনা থাকে অবশ্যই সহায়তা করবো।

একটা ছবিতে পরিচালকের পাশাপাশি, ডিওপি, যে মানুষটা পানি দেন— সবাই প্রয়োজনীয়। তেমনি পোস্টারও। কারণ প্রথম দর্শন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেটা কিন্তু নায়ক-নায়িকারা তৈরি করবেন না। আমি আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা কিছু ফ্যানমেইড পোস্টার তৈরি করছে। তারা তাদের দিক থেকে খুব সুন্দর পোস্টার তৈরি করছে। প্রতিটা বিভাগ যদি অ্যালার্ট থাকে তাহলে ভালো। আমার মনে হয়, এটা শুধু নায়ক-নায়িকার ছবি না।

ভক্ত-দর্শকরা যদি আপনার সাম্প্রতিক কোন কাজ দেখে মনে করে যে বুবলিকে তারা আগে দেখেছে, সে বুবলি পায়নি। তাহলে বিষয়টিকে কীভাবে দেখবেন?

সাম্প্রতিক সময়ে আমার কাছে অনেকগুলো কাজের প্রস্তাব এসেছিল, যেগুলো এখন অন্যরা করছে। অনেকগুলো হয়তো ভালো। কিন্তু আমি নূন্যতম কোয়ালিটি মেইনটেইন করার চেষ্টা করি। যেহেতু বড় একটা ধাক্কা গেছে, তাই আমাদের এখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত এখানেও বড় বাজেটের কাজ হচ্ছে না। বলিউডও দেখেন, তারা বাজেটসহ অনেক কিছু কমিয়ে এনেছেন। আমি আমার দর্শকদের ভালোবেসে ও শ্রদ্ধার সঙ্গেই বলছি, সবাই অর্থনৈতিকভাবে একটা বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সেখানে সিনেমা যারা করছেন, সেটা অল্প বাজেটেই হোক— সাধুবাদ জানানো উচিত। আমরা অনেক কিছু ছাড় দিয়ে কাজ করছি। না হলে তো হবে না।

বিজ্ঞাপন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনার মাথায় কি থাকে। যেহেতু আপনাদের দেখেই মানুষ পণ্যটা কিনে।

আমি মূলত সিনেমার মানুষ। তবে বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রথম যে কথাটা মাথায় আসে সেটা হচ্ছে দায়বদ্ধতা। সবগুলো পণ্য যদি আমি সন্তুষ্ট হয়েছি, এরপর কাজ করেছি।

সারাবাংলা/এজেডএস

চোখ তালাশ বুবলি

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর