সাত সিনেমা হলে চলছে ‘শিমু’
১১ মার্চ ২০২২ ১৫:১৯
ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সের চারটি শাখাসহ, ব্লকবাস্টার, চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন এবং সাভারের চন্দ্রিমা হলে প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলো রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘শিমু’।
এর আগে স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রথম প্রদর্শনীতে উপস্থিত হয়ে দর্শকদের সাথে কথা বলেন পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছবির প্রধান চরিত্র শিমু চরিত্রে রূপদানকারী অভিনেত্রী রিকিতা নন্দিনী শিমু, আরেক অভিনেত্রী মায়াবী মায়া এবং ছবটির সাথে সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীরা।
দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ছবি দেখে যদি আপনাদের ভালো লাগে, তাহলে আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, অন্য দর্শকদের কাছে আমাদের চেষ্টাকে পৌঁছে দিবেন। তারা যদি হলে এসে ছবিটি দেখে, তাহলে আমাদের সার্থকতা।
শিমু চরিত্রে রূপদানকারী অভিনেত্রী রিকিতা নন্দিনী শিমু বলেন, এ চরিত্রে অভিনয় করা আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিলো। যদি ছবিটি দেখে আপনাদের ভালো লাগে তাহলেই আমাদের সার্থকতা।
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি এক দর্শক। তিনি বলেন, এ ঘটনাগুলো আমরা প্রতিদিন দেখি। কিন্তু আসল পরিবর্তনটা দরকার সমাজে। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে দর্শকদের কাছে এটাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে ও আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে পোশাকশিল্পের যে ভূমিকা আছে তার আলোকে দৃঢ়চেতা নারী পোশাকশ্রমিকদের সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প বলা হয়েছে ‘শিমু’ চলচ্চিত্রে।
‘শিমু’ প্রতিকুলতাকে জয় করে সামনে এগিয়ে চলা প্রতিটি সংগ্রামী মানুষের গল্প। সমতার প্রশ্নে ‘শিমু’ একজন সম্মুখযোদ্ধা। চলচ্চিত্রে রুবাইয়াত হোসেনের পাশাপাশি ছবিটির মূল কুশলীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী। চিত্রগ্রহণে সাবিন ল্যাঞ্চেলিন, শব্দগ্রহণে এলিশা আলবার্ট, এবং শিল্প নির্দেশনায় জোনাকি ভট্টাচার্য্যের নাম উল্লেখযোগ্য।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, নভেরা রহমান, দীপান্বিতা মার্টিন, পারভীন পারু, মায়াবি মায়া, মোস্তফা মনোয়ার, শতাব্দী ওয়াদুদ, জয়রাজ, মোমেনা চৌধুরী, ওয়াহিদা মল্লিক জলি ও সামিনা লুৎফা প্রমুখ। দুটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিতা চৌধুরী ও ভারতের শাহানা গোস্বামী।
প্রথম ছবি মেহেরজান (২০১১) এবং দ্বিতীয় ছবি আন্ডার কনস্ট্রাকশন (২০১৫)-এর পর ‘শিমু’ রুবাইয়াত হোসেনের তৃতীয় ছবি।
চলচ্চিত্র ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ বা ‘শিমু’-এর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে ওপেন ডোরস ল্যাব এ অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে। চিত্রনাট্যের জন্য রুবাইয়াত হোসেন জিতে নেন আর্টে ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার।
টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের পর ছবিটি প্রদর্শিত হয় ৬৩তম বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে ছবিটি। ফ্রান্সের সেইন্ট জঁ দ্য-লুজ চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। ইতালির টোরিনো বা তুরিন চলচ্চিত্র উৎসবে পেয়েছে ইন্টারফেদি পুরস্কার এবং ফ্রান্সের এমিয়েন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিয়েছে সেরা দর্শক পুরস্কার ও জুরি পুরস্কারসহ ৩টি পুরস্কার।
২০১৯ এর ডিসেম্বরে ফ্রান্স, ডেনমার্ক, কানাডা ও পর্তুগালের বিভিন্ন সিনেমা হলে বাণিজ্যিকভাবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নামে মুক্তি পায় ছবিটি। এরপর ২০২০ আমেরিকার বিভিন্ন হলে প্রদর্শনের পর ছবিটির বাণিজ্যিকভাবে দেখানো হয় ম্যাক্সিকো, চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক ও জার্মানীর সিনেমা হলে। আর মার্চে বাংলাদেশে মুক্তির পরপরই এপ্রিল চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে জাপানের বিভিন্ন সিনেমা হলে।
বাংলাদেশের খনা টকিজ ও ফ্রান্সের লা ফিল্মস দ্য এপ্রেস-মিডির ব্যানারে নির্মিত শিমু ছবিটির প্রযোজক ফ্রঁসোয়া দক্তেমা ও আশিক মোস্তফা এবং সহ-প্রযোজক পিটার হিলডাল, পেদ্রো বোর্হেস, আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ ও রুবাইয়াত হোসেন। আর ছবিটির পরিবেশনা ও আন্তর্জাতিক বিক্রয় প্রতিনিধি ফ্রান্সের পিরামিড ফিল্মস।
সারাবাংলা/এজেডএস