পরিচালকদের হয়রানি: কাঁটাতারে বন্দী হয়ে শিল্পীদের প্রতিবাদ
২৫ আগস্ট ২০২২ ১৬:৩১
সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘হাওয়া’ নিয়ে একের পর এক মামলা হয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে তিন বছর ধরে সেন্সরে আটকা ‘শনিবার বিকেল’। এছাড়া নানাভাবে বর্তমানে চলচ্চিত্র ও নাট্য নির্মাতাদের বিভিন্নভাবে বিভিন্নজন হয়রানি করছে। এর প্রতিবাদে শিল্পীরা কাঁটাতারে বন্দী হয়ে প্রতিবাদ করলেন।
ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিনব প্রতিবাদ জানান। এতে অংশ নেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, মোরশেদুল ইসলাম, তারিক আনাম খান, শম্পা রেজা, আফসানা মিমি, নুরুল আলম আতিক, মাসুম রেজা, কামার আহমেদ সাইমন, অমিতাভ রেজা, পিপলু আর খান, মেজবাউর রহমান সুমন, জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরী, গাউসুল আলম শাওন, ইরেশ যাকের, আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারি মমসহ শিল্প-সংস্কৃতির অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনের বিষয়বস্তু ছিলো ‘বাংলা চলচ্চিত্র বা কন্টটেন্টে সেন্সরশিপের খড়গ: গল্প বলার স্বাধীনতা চাই’। সেখানে শিল্পীরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো:
১. ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. ‘শনিবার বিকেলে’ চলচ্চিত্র কেন সেন্সর ছাড়পত্র পেল না তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই।
৩.বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড বাতিল করতে হবে এবং প্রস্তাবিত চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইনের ক্ষেত্রে সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটি আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৪. প্রস্তাবিত ওটিটি নীতিমালার ক্ষেত্রে সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটি আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ওটিটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
৫. চলচ্চিত্র বা কনটেন্টবিষয়ক কোনওোমামলা দায়ের করার আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (যেমন : খসড়া ওটিটি নীতিমালায় প্ল্যাটফর্মগুলোতে আলাদা কমিশন বোর্ড তৈরির প্রস্তাব আছে, এ জাতীয় কোনও কর্তৃপক্ষের) সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে।
সম্মেলনে অভিনেতা তারিক আনাম খান বলেন, ‘কাঁটাতারের মধ্যে কথা বলছি, এ অভিজ্ঞতা প্রথম। আমরা এখন কোনোকিছু নির্মাণ করতে গেলে আগে ভাবি কী দেখানো যাবে, কী দেখানো যাবে না। আমি ক্ষুব্ধ ও শঙ্কিত। এটা দেখানো যাবে না, ওটা করা যাবে না, এভাবে কোনোদিন নতুন এগোবে না।’
নির্মাতা মোরশেদ ইসলাম বলেন, ‘আমি সেন্সর বোর্ডর মেম্বার ছিলাম ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত। সেখানে অদ্ভুত সব নিয়ম আছে। সার্টিফিকেশন আইন আরও জঘন্য। এর মুক্তি কোথায় জানি না। এটা ষড়যন্ত্রের অংশ। শনিবার বিকেল সিনেমাটি দেখেছি। হলি আর্টিজেনের সঙ্গে হয়তো দর্শকরা এর কিছু মিল পাবেন। কিন্তু এটায় যে পরিমিতিবোধ আছে, তাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে না। সব সিনেমা মুক্তভাবে বানাতে চাই আমরা। কিন্তু ভাবতে হচ্ছে কতটুকু দেখাব, কতটুকু দেখাব না।’
শনিবার বিকেল নিয়ে ফারুকী বলেন, ‘জানি না, কেন সেন্সর পাচ্ছে না আমার সিনেমাটি। অপেক্ষা করছি সাড়ে তিন বছর। সরকারকে বলতে চাই শিল্প হলো হেডলাইটের মতো, এটা জ্বালানো থাকলে সরকার বুঝতে পারবে কোনদিকে যেতে হবে, তার সামনে কী। না হলে আঁধারে থাকতে হবে।’
সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্মাতা, শিল্পী-কলাকুশলীরা গোলটেবিল আলোচনা এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে চান শিল্পীরা।
সারাবাংলা/এজেডএস