এবার সিনেমা হলের প্রণোদনা ঋণ বিতরণে যুক্ত হলো অগ্রণী ব্যাংক
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৩১
সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার কোটি টাকার ঋণ তহবিল গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। শুরুতে রূপালী ব্যাংকের সঙ্গে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমঝোতা চুক্তি হয়। এবার সমঝোতা চুক্তি হয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে।
ব্যাংকটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে তাদের মধ্যকার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে স্বাক্ষর করেন অগ্রণীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. মুরশেদুল কবীর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন (ডিওএস) এর পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, সিনেমা হলের ঋণ বিশেষ তহবিলের আওতায় দেওয়া হচ্ছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি ছাড়া কোনো ব্যাংক এ ঋণ বিতরণ করতে পারবে না। আপাতত রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় হল মালিকরা এ দুটি ব্যাংকে ঋণ আবেদন জমা দিতে পারবেন।
২০২১ সালে৪ ১৪ ফেব্রুয়ারি জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, এ তহবিলের নাম হবে ‘সিনেমা হল মালিকদের অনুকূলে মেয়াদী ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা প্রধানের জন্য পুনঃঅর্থায়ন স্কীম’। এ অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হবে। ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
তহবিলের অর্থ ব্যয় করা যাবে, বিদ্যমান সিনেমা হল সংস্কার, আধুনিকায়ন ও এতদসংশ্লিষ্ট মেশিনারি/যন্ত্রাংশ/প্রযুক্তি ক্রয় এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণের জন্য। বিভিন্ন শর্ত পালন সাপেক্ষে বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্সে বিদ্যমান সিনেমা হলসহ নতুনতাবে নির্মিতব্য সিনেমা হলগুলোও এ ঋণ সুবিধা প্রাপ্য হবে।
১ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে দেওয়া হবে ৫০০ কোটি টাকা। এ টাকা সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হবার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫০০ কোটি বিতরণযোগ্য হবে বলে জানানো হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
প্রথমে প্রতি সিনেমা হলের জন্য ৫ কোটি টাকা সর্বোচ্চ ঋণের কথা বলা হলেও গেল বছরের ৯ ডিসেম্বর জারি করা আরেক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, এ ঋণের পরিমাণ হবে ১০ কোটি টাকা। মেট্রোপলিটন এলাকায় এ সুদের হার হবে ৫ শতাংশ এবং এর বাইরের শহরে এর পরিমাণ হবে সাড়ে ৪ শতাংশ।
ঋণের পরিশোধের মেয়াদ আট বছর। গ্রহিতা প্রথম এক বছর গ্রেড পিরিয়ড হিসেবে পাবেন অর্থাৎ প্রথম বছর তাকে কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। বাকি সাত বছরে সুদসহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এ তহবিল থেকে ঋণ সুবিধার জন্য আবেদন করা যাবে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
একই ভবনে একটি কোম্পানী/ব্যক্তি মালিকানাধীন (একক বা যৌথভাবে) সিনেপ্লেক্স যতসংখ্যক স্ক্রিনবিশিষ্ট হোক না কেন তা আলোচ্য পুনঃঅর্থায়ন স্কীমের আওতায় ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে “একটি ইউনিট” হিসেবে বিবেচিত হবে। এরূপ নতুন “একটি ইউনিট” স্থাপনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা এবং বিদ্যমান “একটি ইউনিট” সংস্কারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা প্রাপ্য হবে।
তবে ঋণ প্রদানের পূর্বে যাচিত ঋণ চাহিদার বিষয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক পর্যালোচনাস্তে নিশ্চিত হতে হবে। ঋণ সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে একটি সিনেমা হল/সিনেপ্লেক্স এর আসন সংখ্যা ন্যূনতম ১০০ হতে হবে।
সিনেমা হল সংস্কার, আধুনিকায়ন ও এতদসংশ্লিষ্ট মেশিনারি/যন্ত্রাংশ/প্রযুক্তি ক্রয় এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ব্যতীত অন্য কোন আতে ব্যবহৃত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সে পরিমাণ অর্থের উপর নির্ধারিত সুদ/মুনাফা হারের অতিরিক্ত দুই শতাংশ অর্থ সুদ/মুনাফাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছ থেকে এককালীন আদায় করা হবে।
ভাড়াকৃত/ইজারাকৃত স্থাপনায় বিদ্যমান/নির্মিতব্য সিনেমা হল/সিনেপ্লেক্স এর মালিকপক্ষের সাথে ভবন মালিকের ভাড়া/ইজারা চুক্তির মেয়াদ প্রদেয় ঋণ পরিশোধের জন্য নির্ধারিত মেয়াদের চেয়ে কমপক্ষে ৫ বছর বেশি হতে হবে। অর্থাৎ ইজারার মেয়াদ কমপক্ষে ১৩ বছর হতে হবে।
সিনেমা হল মালিকদের সংগঠন ‘চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি’র সাধারণ আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল জানান, এখন পর্যন্ত ৩৪টি নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কার প্রস্তাবনা অগ্রণী ব্যাংকে জমা পড়েছে। তারা আসা করছেন এ সংখ্যা শতাধিক হবে।
আরও পড়ুনঃ
সিনেমা হলের জন্য হাজার কোটির তহবিল, সর্বোচ্চ ঋণ ৫ কোটি টাকা
সিনেমা হলে ঋণ সুবিধা বেড়ে ১০ কোটি
‘শিল্প ঋণ’ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে প্রযোজক সমিতির বৈঠক
সিনেমার জন্য ৭০০ কোটি টাকা আসছে!
সিনেমা হলের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত
সিনেমা হলের জন্য প্রয়োজনে হাজার কোটি টাকার তহবিল: তথ্যমন্ত্রী
সারাবাংলা/এজেডএস