এবারের ঈদটি ভিন্ন মাহিয়া মাহির। তার জীবনে এসেছে সন্তান ফারিশ। সন্তান, ক্যারিয়ার ও পুলিশের মামলা নিয়ে সারাবাংলার ঈদ আয়োজনে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আহমেদ জামান শিমুল।
সিনেমায় না, বাস্তবে মা হলেন। মাতৃত্বের এ অনুভূতিটা কেমন?
এটা এমন একটা অনুভূতি যেটা বোঝানো যাবে না। একটা নতুন জীবন। ওর জন্মের আগে আমার জীবনটা একরম ছিল, এখন আরেক রকম। আমি অন্য একটা মানুষ ছিলাম, এখন আরেকটা মানুষ হয়ে গেছি। একজন মা হয়ে গেছি। আগের জীবনের চেয়ে এটা অনেক মজার একটা জীবন। আলহামদুলিল্লাহ্, আমি এ জীবনটা চেয়েছি।
আপনার সন্তানের জীবনের প্রথম ঈদ। তার জন্য আলাদা কোনো উপহার কিনছেন কি?
ওতো অনেক ছোট। ওর জন্য অনেক শপিং করা হয়েছে। মাত্র তো ১৬ দিন বয়স হলো (সাক্ষাৎকার গ্রহণের দিন পর্যন্ত)। ঈদ উপলক্ষে তিন জন একরকম কিছু পরার ইচ্ছে আছে। তাছাড়া ও এতোই ছোট যে ওর গায়ে ঠিকঠাক হয়, এমন কিছু সহজে পাচ্ছি না। তবে ফারিশের কারণে এ ঈদটা আমাদের জন্য স্পেশাল। ফারিশ স্রষ্টার বিশেষ উপহার আমাদের জন্য। ও যদি সুস্থ থাকে তাহলে ওকে নিয়ে ঈদের দিন ঘুরার ইচ্ছে রয়েছে।
সন্তানের মুখ প্রথম দেখার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তারপরও আমরা শুনতে চাই…
ওর তো আরও পরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। নিয়মিত চেকআপের জন্য ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়ার পরে বলেছিল, ‘আজকেই ডেলিভারি হবে’। তখন খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। খুব মন খারাপ হচ্ছিল—আমি চাই নি তখনই হোক। কারণ একটা মানসিক প্রস্তুতি থাকে—পরিবারের সবার সঙ্গে দেখা করে আসা, দোয়া নেওয়া, ওর জন্য আলাদা করে শপিং করা। আমি ওর জন্য কোনো শপিং করতে পারি নি। ওর বাবা করছে, ও যখন হাসপাতালে। আমার এর আগে কোনো সার্জারি হয়নি। সব কিছু মিলিয়ে খুব ভয় লাগছিল। কিন্তু ওকে যখন দেখেছি, তখন সব পরিবর্তন হয়ে গেল মুহূর্তে। অনেক ভালো লেগেছিল।
ওর নাম কী রেখেছেন?
তার পুরো নাম অনেক বড়—মোহাম্মদ মোসাইব আরোশ সামসুদ্দিন ফারিশ সরকার। ডাকনাম ফারিশ। এ নামটা সবাই মিলে দেওয়া। যার যেটা পছন্দ সবগুলো এক জায়গায় রেখে নামটা রাখা হয়েছে। কারও মন খারাপ যাতে না হয়।
প্রতিটা বাবা-মার তার সন্তানকে নিয়ে আলাদা স্বপ্ন থাকে। অনেকে তো সন্তানকে কী বানাবে তাও আগে থেকে ঠিক করে রাখে। অনেক আবার তাকে স্বাধীনতা দিয়ে রাখে। আপনার কী ইচ্ছে?
ওর যেটা মন চাইবে সেটাই হবে।

সন্তান জন্মদানের জন্য একটু বিরতি নিয়েছিলাম অভিনয় থেকে: মাহিয়া মাহি
আপনি নিশ্চয় জানেন, হিন্দি ছবি আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ তৈরি হয়ে গিয়েছে। আপনার এ নিয়ে বক্তব্য কী?
আমি মনে করি হিন্দি ছবি আসা উচিত—আমাদের হলগুলোর জন্য। প্রচুর সিনেমা দরকার হলগুলো বাঁচিয়ে রাখার জন্য। সেদিক দিয়ে ওটার পক্ষে। কিন্তু আমি কখনই একতরফা আসার পক্ষে না। আমাদের দেশের সিনেমাটাও যাতে বাইরের দেশে মুক্তি পায়। সেটা আমি চাইবো।
আপনার বিরুদ্ধে হওয়া পুলিশের মামলায় জামিনে রয়েছেন। মামলাটি এখন কী অবস্থায় রয়েছে?
আমাকে আশস্ত করা হয়েছে। পুরো ব্যাপারটা দেখা হচ্ছে, কী কারণে কী হলো। আমার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীর মত ধরে আনা হয়েছিল।
আপনি নাকি বিমানবন্দর থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন?
বিমানবন্দর থেকে কীভাবে, কোথায় পালাবো? আমি তো বাইরে থেকে দেশে আসছি। মানুষ তো দেশ থেকে বাইরে পালিয়ে যায়।
রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে উপনির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেনও। ২০২৪ এর নির্বাচনেও কি মনোনয়ন চাইবেন?
এটা দেখা যাক। পরিবেশ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে।
অভিনয়ে আবার নিয়মিত হওয়া নিয়ে কী পরিকল্পনা করছেন?
সন্তান জন্মদানের জন্য একটু বিরতি নিয়েছিলাম অভিনয় থেকে। সে বিরতিটা শেষ হলেই ফিরবো।
সেটা কতদিনের? ব্যাপারটা এমনকি আপনার যখন মনে হবে এবার ফেরা যায়, তখন ফিরবেন? নাকি অন্য কোনো পরিকল্পনা রয়েছে?
এখন তো ফারিশের ফিডিং চলছে। ওর যাতে কষ্ট না হয়—এরকম সময় আসলেই অভিনয় আবার শুরু করবো।
ওটিটি নাকি সিনেমা দিয়ে ফিরবেন?
অবশ্যই সিনেমা। তবে এখানে বলে রাখি, ওটিটি বা সিনেমা যেটাই হোক, যেটার চিত্রনাট্য ও চরিত্র যদি মনে হয় কামব্যাক হিসেবে ভালো হবে, সেটা দিয়ে ফিরবো।