ওস্তাদ জাকির হোসেন আর নেই
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৪৯ | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৩
প্রখ্যাত তবলা বাদক এবং সুরকার ওস্তাদ জাকির হোসেন আর নেই। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জাকির হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে। বলা হয়, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন, সেখানেই মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
উল্লেখ্য, রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে ভারতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাকির হোসেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতের প্রথম সারির সব গণমাধ্যমে জাকির হোসেনের মৃত্যুর খবর প্রচারিত হয়। আনন্দবাজারের খবরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোকবার্তার কথাও জানানো হয়। পরে জাকির হোসেনের স্বজনরা জানান, অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও তিনি মারা যাননি।
জাকির হোসেনের বোন খুরশিদ পিটিআইকে বলেন, ভাইয়ের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তবে তিনি এখনো বেঁচে আছেন। ভারতসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা তার ভক্তসহ সবার প্রতি আহ্বান, তার জন্য প্রার্থনা করুন। গণমাধ্যমগুলোর প্রতি অনুরোধ, দয়া করে আপনারা তার মৃত্যুর ভুল সংবাদ প্রচার করবেন না। তিনি এখনো শ্বাস নিচ্ছেন। এই সংবাদ বিভিন্ন মাধ্যমে দেখা আমাদের জন্য অত্যন্ত বাজে অনুভূতি।
এর আগে, পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছিল, ‘হার্ট এবং ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেওয়ায় দুই সপ্তাহ আগে তাকে সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার অবস্থা খুবই সংকটজনক এবং চিকিৎসকরা খুব একটা আশাবাদী নন। তার পুরো পরিবার ইতিমধ্যেই ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।‘
জাকির হোসেনের বাবা আল্লাহ রাখাও ছিলেন প্রখ্যাত তবলাবাদক। বাবার হাতেই হাতেখড়ি জাকিরের, বাবার পথ অনুসরণ করেই তারও তবলাবাদক হয়ে ওঠা। এ বছরেই ৬৬তম আসরে তিন তিনটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছেন জাকির হোসেন। এর আগেও পেয়েছেন দুটি।
প্রায় ছয় দশকের ক্যারিয়ারে ভারতীয়সহ বৈশ্বিক পরিসরের বিখ্যাত সব সংগীত ও যন্ত্রশিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছেন জাকির হোসেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ইংলিশ গিটারিস্ট জন ম্যাকলফলিন এবং ভারতীয় বেহালাবাদক এল শংকর ও ‘ঘটমের ঈশ্বর’খ্যাত থেটাকুড়ি হরিহর ‘ভিক্ষু’ বিনয়াক্রমকে নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ডদল ‘শক্তি’। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের সঙ্গে জ্যাজ ধারার অনবদ্য ফিউশনের মাধ্যমে এই দলটি জনপ্রিয়তার শিখড়ে পৌঁছে যায়।
ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে অনন্য অবদানের জন্য জাকির হোসেনকে ১৯৮৮ সালে পদ্মশ্রী, ২০০২ সালে পদ্মভূষণ ও ২০২৩ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার।
সারাবাংলা/এএসজি/ইআ