Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘হাছন রাজার নাম মুছে ফেলা হয়েছে’: সেলিম চৌধুরী


২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৯:১৮

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:

মরমী কবি এবং বাউলশিল্পী হাছন রাজার জন্মবার্ষিকী আজ (২১ ডিসেম্বর)। ১৮৫৪ সালে জন্ম নেয়া এ মহান পুরুষ দর্শনচেতনার সঙ্গে সংগীতের এক অসমান্য সংযোগ ঘটিয়েছেন। হাছন রাজার গান নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে কাজ করছেন সেলিম চৌধুরী। ২২ ডিসেম্বর রাত ১১টায় বৈশাখী টিভির ‘সময় কাটুক গানে গানে’ অনুষ্ঠানে তিনি হাজির হবেন হাছন রাজার গান নিয়ে। বাংলাদেশে ইদানিংকালের হাছনচর্চা প্রসঙ্গে সারাবাংলার মুখোমুখি তিনি।

 

বিজ্ঞাপন

হাছনচর্চা সীমাবদ্ধ
সুনামগঞ্জ বা বৃহত্তর সিলেটে হাছন রাজার গানের চর্চা আগের মতোই আছে। তবে আমার মনে হয়, দার্শনিক গুরুত্বের দিক থেকে ভাবলে এ গানগুলো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত না। আমরা চাই, তার গান আরও বেশি করে বৃহত্তর বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে চর্চা হোক।

নতুন প্রজন্মের সঙ্গে হাছনের যোগাযোগ
আমাদের এখনকার জেনারেশনের পছন্দ মিউজিক্যাল বেইজড কিছু। হাছন রাজার গানগুলো যদি একটু ওয়েস্টার্ন ফর্মে বা খানিকটা ফিউশন করে পরিবেশন করা যায়, তাহলে নিউ জেনারেশনের কাছে এগুলোর একসেপটেন্স আরও বাড়বে। কারণ তারা এতো স্পিরিচুয়াল বিষয় নিয়ে ভাবার কথাও না। হয়তো ম্যাচুরিটি আসলে বা আরও বয়স বাড়লে ভাববে। নিউ ফর্মে হোক বা ওল্ড ফর্মে, হাছন রাজার গানের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি- আমি যখন স্টেজে কিছু গান ওয়েস্টার্ন ফর্মে গাই, তখন নিউ জেনারেশনের অডিয়েন্সরা অনেক মজা পায়। এটা মিউজিকের কারণে। পরিবেশনের ঢঙের কারণে। অনেকেই হয়তো এটিকে বাঁকাচোখে দেখতে পারে। কিন্তু আমি শুধু মিউজিক চেঞ্জ করি, অবশ্যই কথা এবং সুর ঠিক রেখে।
হাছন রাজার গানের একক অ্যালবাম করেছিলাম একটি। হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন এর প্রধান উদ্যোক্তা। আমরা যখন কাজটা করি, মিন্টু ভাই আমি আর হুমায়ূন স্যার- আমরা কিন্তু সব সময়ই চেষ্টা করেছি গানগুলো যাতে নিউ জেনারেশনের কাছে নিয়ে যাওয়া যায়। যে কারণে আমরা ওয়েস্টার্ন মিউজিক ব্যবহার করেছি, কিন্তু দেশি ফর্মে। হয়তো গিটারটা বাজলো, কিন্তু যে টোনটা বেরুলো সেটা দোতরার। খানিকটা ফিউশনধর্মী।

বিজ্ঞাপন

নতুন পরিকল্পনা
হাছন রাজার গান নিয়ে পরবর্তীতে যে অ্যালবাম করবো, সেখানে দেশি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের চিন্তা করছি। নতুন প্রজন্মকে শোনানোর যে উদ্দেশ্য সেটা তো করেছি, করে যাচ্ছি বিভিন্নভাবে। অনেকে শুনছেও। এখন মনে হয়, একটু রুটে গিয়ে গান করি, আরেকটু দেশি স্টাইলে! সেটারও দরকার আছে।

হাছন রাজা পরিষদের ভূমিকা
২৩ ডিসেম্বর বোধহয় শিল্পকলায় হাসন রাজার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান করবে হাছন রাজা পরিষদ। হাছন রাজার গানগুলো মাঠে-বন্দরে-রুট লেভেলে গায় যারা, যে ঢঙে; ওগুলোর অডিও ভিজ্যুয়াল সংগ্রহ করা দরকার। এটাই এসব পরিষদের প্রথম কাজ হওয়া উচিত। কারণ আর্কাইভ হলো সম্পদ। জাদুঘরের মতো। ভবিষ্যতে হাছন রাজার গান নিয়ে গবেষণার জন্য এগুলো খুব কাজে দেবে।
বছরে এক দু’দিন শুধু অনুষ্ঠান আয়োজন করে তেমন কিছু হয় না। এটারও দরকার আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, যারা রুট লেভেলে গান করছে, হাছনচর্চা করছে, তাদের গানগুলোর অডিও ভিজ্যুয়াল সংগ্রহ করা বেশি জরুরী।

হাছন রাজা [২১ ডিসেম্বর ১৮৫৪ – ৬ ডিসেম্বর ১৯২২]

হাছনের নাম মুছে ফেলা হয়েছে
হাছন রাজা একাডেমি হওয়ার কথা ছিলো সুনামগঞ্জে। শুরু থেকে জমি বরাদ্দ, একাডেমির টাকা বরাদ্দ সবকিছুই হাছন রাজা একাডেমির নামেই করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন উদ্বোধন হয়েছে, নাম চেঞ্জ করে ফেলেছে। নির্মাণ হয়েছে হাছন রাজা একাডেমির নামে, কিন্তু পাল্টে হয়ে গেছে শিল্পকলা একাডেমি। হাছন রাজার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এটা খুব বাজে কাজ হয়েছে।
হাছন রাজার উত্তরসূরীরা অনেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পলিটিক্যাল রাইভালরি থেকে ডিল করতে গিয়ে দ্বন্দ্বটা হয়ে গেছে হাছন রাজার সঙ্গে। যেটা হওয়া উচিত না। এসব কারণে এ মহান ব্যক্তির নামে একাডেমিটা আর হয়নি।
একাডেমি হলে আর্কাইভ, হাসনচর্চা- এসব করা যেতো। শান্তি নিকেতনে তো শুধু রবীন্দ্রনাথের ওপর চর্চা হয় না। নজরুলচর্চা হয়। অন্যান্য কালচারাল কাজ হয়। হাছন রাজা একাডেমি থেকে ও রকম কিছু একটা করা যায় কিনা ভাবছিলাম আমরা। শুধু বাংলাদেশের গান নয়, পাশ্ববর্তী আসামসহ অন্যান্য অঞ্চলের ফোক নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা ছিলো। শুরুতেই নামটা পাল্টে দিয়ে আমাদেরকে ডিমরালাইজড করে দেয়া হয়েছে। আমি নিজেও হতাশ হয়ে গেছি। হাছন রাজা একাডেমি নামটা থাকলে যেভাবে কাজ করতে পারতাম, ওভাবে আর আগ্রহ পাই না। শুরুতেই এক ধরণের শত্রুতা হয়ে গেছে। খারাপ লাগে না?

সারাবাংলা/কেবিএন/পিএম

সেলিম চৌধুরী হাছন রাজা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর