ফিলিস্তিনে মানবিক বিপর্যয়, বৈশাখে গাইবে না ঋষিজ
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৩৪
গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর প্রতিষ্ঠা করেন ‘ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী’। সংগঠনটি ১৯৮৩ সাল থেকে সংগঠনটি পহেলা বৈশাখে গণসংগীতের অনুষ্ঠান করে আসছিল। মাঝে শুধু ২০২০ সালে করোনার কারণে তাদের এ আয়োজনটি বন্ধ হয়ে ছিল। প্রতিবারের মতো সেবার শিশুপার্কের সামনে মঞ্চ সাজিয়ে বাবরি চুল ঝাঁকিয়ে বিপ্লবী গান শোনাতে পারেননি এই কণ্ঠসৈনিক।
পরের বছর (২০২১), সেই করোনা ভাইরাসের কাছে জীবনটাই তুলে দিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন কিংবদন্তি ফকির আলমগীর। তবুও ‘ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী’ তথা ফকির পরিবারের সদস্যদের আগ্রহে প্রতি পহেলা বৈশাখে শিশুপার্কের সামনে আয়োজন করে আসছে ‘নব আনন্দে জাগো’ নামের অনুষ্ঠানটি। কিন্তু এবার আর সেটি হচ্ছে না বলেই নিশ্চিত করেছে সাংস্কৃতিক সংগঠনটি ও ফকির পরিবারের সদস্যরা।
ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড: ফকির মাশুক আলমগীর জানান, ফিলিস্তিনে চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে শিশুপার্কের সামনে এবছর কোনও অনুষ্ঠান করবে না ‘ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী’।
ফকির আলমগীরের পুত্র মাশুক আলমগীর বলেন, ‘ফিলিস্তিনে চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে একাত্মতা প্রকাশের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে পূর্ণ উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠান আয়োজন করা আমাদের বিবেচনায় সংবেদনশীলতার পরিপন্থী হবে। আব্বা বেঁচে থাকলেও নিশ্চয়ই এমন সিদ্ধান্তই নিতেন। কারণ তিনি ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য গান গেয়েছেন।’
ফকির আলমগীর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শিল্পী। তারও আগে থেকে তিনি শ্রমজীবী মানুষের জন্য গণসংগীত করে আসছিলেন। স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রেখেছেন ফকির আলমগীর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এরমধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
১৯৮২ সালের বিটিভির ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেছেন ফকির আলমগীর। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা (১৯৭৬), গণসংগীত চর্চার আরেক সংগঠন গণসংগীত শিল্পী পরিষদের সাবেক সভাপতি।
সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদক দিয়ে সম্মানিত করে। ২০২১ সালের ২৩ জুলাই তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
সারাবাংলা/এজেডএস