গত কয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থেমে থেমে নেমেছে বৃষ্টি। কেউ কেউ এই ভেজা দিনগুলো উপভোগ করছেন পরম আনন্দে, আবার কারো কাছে এই আবহাওয়া হয়ে উঠেছে দুঃসহ। রাস্তায় বের হয়ে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে ‘কাক’ হওয়াটা যেমন কারো কারো জন্য বিরক্তিকর, ঠিক তেমনি আরেকটি দল আছে যারা এই সময়টাকে মনে করেন এক রোমান্টিক আচ্ছন্নতা।
বিশেষ করে ‘বৃষ্টি প্রেমিদের’ কাছে এই দিনগুলো এক এক রূপকথার মতো— কফির কাপ হাতে জানালার পাশে বসে বৃষ্টির শব্দ উপভোগ, বা প্রিয় গান শুনে হারিয়ে যাওয়া এক অন্য জগতে।
তবে প্রশ্ন হলো— সব সময় তো আর প্রকৃতির খেয়াল মত বৃষ্টি আসে না। কিন্তু ইচ্ছা করলে কি আমরা বৃষ্টির অনুভূতিকে নিজের মত করে নিয়ে নিতে পারি?
উত্তর— হ্যাঁ, পারি। এবং এর উত্তর লুকিয়ে রয়েছে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে।
আজকের দিনে একটা স্মার্টফোনই যথেষ্ট। চাইলেই ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন মিউজিক কিংবা অ্যাপলের স্ট্রিমিং সার্ভিসে সার্চ দিলেই চলে আসে ‘রেইন সাউন্ড’, ‘থান্ডারস্টর্ম বিটস’, ‘রেইনি জ্যাজ’ বা ‘লো-ফাই রেইন ভাইবস’— এর মতো অসংখ্য অডিও ট্র্যাক। যা আপনাকে এনে দেয় একটানা বৃষ্টির শব্দ, অথবা বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে মৃদু সুরের ছোঁয়া।
এই ধারণা এখন আর শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, মিউজিক থেরাপি এখন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। বিশেষ করে সাউন্ড থেরাপি হিসেবে ‘রেইন সাউন্ড’ বা বৃষ্টির শব্দ মানুষের মানসিক প্রশান্তি, ঘুমের সমস্যা ও স্ট্রেস কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
নিউরোসায়েন্সের ভাষায়, প্রাকৃতিক শব্দগুলো ‘হোয়াইট নইজ’ তৈরি করে, যা মস্তিষ্ককে অকারণে উদবিগ্ন হওয়া থেকে বিরত রাখে। তাই অনেকেই এখন রাতে ঘুমানোর আগে ‘বৃষ্টির শব্দ’ চালিয়ে রাখেন, যা এক ধরনের স্নায়বিক শান্তির আবেশ তৈরি করে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, আজকের যুগে বৃষ্টি আর শুধুই প্রকৃতির অনুগ্রহ নয়, বরং ইচ্ছার বশেও সে আসতে পারে—কখনো কানে, কখনো মনে, আবার কখনো শুধুই হেডফোনে।
শেষ কথায়, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আজ আমরা বৃষ্টিকে বানাতে পারছি নিজের মতন করে। মন খারাপ? এক কাপ কফি আর মোবাইলে প্লে করে দিন ‘রেইন সাউন্ড’। দেখবেন, রোদের দিনেও ভিজে যাচ্ছেন আপনি… একান্ত নিজস্ব এক অনুভবে।