কফি — নামটার ভেতরেই আছে এক মায়া, এক গন্ধ, এক চুমুকের গল্প! কিন্তু জানেন কি, এই কফির শুরুটা কোথা থেকে?
ইথিওপিয়ার ‘কেফা’ নামের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রথম জন্ম নেয় কফি গাছ। সেখান থেকেই নাম— ‘কফি’ বা ‘Kaffa’! কথিত আছে, এক গরুপালক কালদি দেখেছিলেন তার গরুগুলো এক বিশেষ ফল খাওয়ার পর সারারাত নাচছে! আর সেই ফলই ছিল কফির বীজ।
এরপর সেই ফল আর তার চুমুক ছড়িয়ে পড়ে ইয়েমেন, মক্কা, মদিনা, কায়রো, দামাস্কাস — অবশেষে পৌঁছে যায় ওসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্তানবুলে।
১৫৫৪ সালে দুই সিরীয় ব্যবসায়ী ইস্তানবুলে খুলেছিলেন প্রথম ‘কাহ্ভেহানে বা কফি হাউজ। সেখান থেকেই শুরু — এক নতুন সামাজিক অধ্যায়। এই কফি হাউজগুলো হয়ে ওঠে রাজনীতি, সাহিত্য, দর্শন ও সঙ্গীতের মিলনস্থল। অটোমান সমাজে কফি ছিল শুধু পানীয় নয়, ছিল বুদ্ধি ও ভাবনার জ্বালানি!
এক কাপ কফি আমাদের শরীরেও সৃষ্টি করে নানারকম জাদু…
কফিতে থাকা ‘ক্যাফেইন’ স্নায়ুতন্ত্রকে জাগিয়ে রাখে।
ক্লান্তি দূর করে, মনোযোগ বাড়ায়, মাথা পরিষ্কার রাখে।
তবে অতিরিক্ত কফি হৃদস্পন্দন বাড়াতে পারে, ঘুমে বাধা দেয়।
তাই দিনে ২–৩ কাপই যথেষ্ট।
দার্শনিকরাও কফির প্রেমে পড়েছিলেন। ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ার প্রতিদিন নাকি ৫০ কাপ পর্যন্ত কফি পান করতেন! আর কান্টের দিন শুরুই হতো এক কাপ কফি দিয়ে। তাদের বিশ্বাস ছিল — কফি মস্তিষ্কে চিন্তার আলো জ্বালায়। কফি হাউজই তখন ইউরোপে ‘চিন্তার কেন্দ্র’ —যেখানে জন্ম নেয় বিপ্লব, বিতর্ক আর নতুন ভাবনা।
আজও কফি শুধু পানীয় নয় — এটি সম্পর্কের সেতু, চিন্তার সঙ্গী, একাকীত্বের সাথি, আর অনেক সময়— অনুপ্রেরণার উৎস।