পৃথিবীর এমন কিছু জায়গা আছে যেগুলোকে দেখলে মনে হয় প্রকৃতি আর বিজ্ঞান একত্রে মানুষের ধৈর্য্য পরীক্ষা করছে। এমনই এক রহস্যময় ও ভয়ঙ্কর স্থান হলো পাকিস্তানের কারাচায় হ্রদ। এটি কেবল একটি হ্রদ নয়, বরং একটি ‘রঙিন জ্বালানি পরীক্ষা’ বা ‘বিষাক্ত লেক’ হিসেবেও পরিচিত।
রঙের খেলা, কিন্তু মৃত্যুর ইঙ্গিত
কারাচায় হ্রদ এতটাই বিষাক্ত যে, এর জলে স্রোত মানে শুধুই বিপদ। হ্রদের জল প্রায়ই উজ্জ্বল সবুজ, নীল বা লাল রঙ ধারণ করে, যা দেখতে যেন রঙিন ক্যানভাস। কিন্তু এই রঙের পেছনে লুকিয়ে আছে উচ্চ মাত্রার ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখানে এমন তেজস্ক্রিয় পদার্থ আছে যা মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে একজন মানুষকে মারাত্মক বিপদে ফেলতে পারে।
একটি হ্রদ যা জীবনের জন্য তৃপ্তি নয়
যারা ভেবেছেন হ্রদ মানেই মাছ-জলখাবার বা নৌকা ভ্রমণ— কারাচায় হ্রদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। এখানে এমনকি গাছপালা বা ছোট প্রাণীও টিকে থাকতে পারে না। হ্রদের আশেপাশের কোনো বস্তুও দ্রুত মরিচা খেতে শুরু করে বা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
বিজ্ঞানের ল্যাব, কিন্তু প্রকৃতির লুকানো বিপদ
কারাচায় হ্রদ মূলত পরমাণু শিল্পের বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য তৈরি। ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে পাকিস্তান সরকার হ্রদটিকে ব্যবহার করেছিল তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাখার জন্য। ধীরে ধীরে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত হ্রদে পরিণত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, হ্রদটির জল ৫০ মিটার দূরত্ব থেকেও তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বিপজ্জনক।
দূর থেকে ভ্রমণ, কাছাকাছি নয়
যদি কারো কৌতূহল জাগে, হ্রদটি দূর থেকে দেখা যায় এবং এর আশেপাশের এলাকায় ফ্লাইওভার বা পর্যবেক্ষণ পয়েন্ট রয়েছে। তবে সরাসরি ছোঁয়া বা জলে নেমে যাওয়া একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ।
মজার সত্যিকারের বিষয়
হ্রদটি এত বিষাক্ত যে, ২০১৬ সালে এক গবেষক জানান, হ্রদের জল এত শক্তিশালী যে, এখানে একটি মেটাল স্পুন কয়েক মিনিটেই গলে যেতে পারে। আবার অন্যরা বলেছিলেন, ‘কারাচায় হ্রদে সাঁতার কাটলে মানুষকে সুপারহিরো হওয়ার সুযোগ আছে, কারণ এটি এমন শক্তি ধারণ করে যা মানুষকে ক্ষয় করতে পারে।’
যারা বিজ্ঞান ও রহস্য উভয়েই পছন্দ করেন, তাদের জন্য কারাচায় হ্রদ হলো এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা। যদিও এটি ভয়ঙ্কর, কিন্তু প্রকৃতির এই বিপজ্জনক চেহারাটিও আমাদের শিখিয়ে দেয় বিজ্ঞান ও কৌতূহলের সীমা মানা জরুরি।