Wednesday 26 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিষ্টির টানে বিশ্বজুড়ে আজ ‘কেক দিবস’

ফারহানা নীলা স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১২:০৮

সকালে ঘুম থেকে উঠে আজ যেন সবকিছু একটু অদ্ভুত লাগছিল। ফ্রিজ খুলে দেখা গেল— গতরাতের কোনো কেক নেই, তবু ভেতরে ভেসে বেড়াচ্ছে স্পঞ্জ আর ভ্যানিলার মিষ্টি গন্ধ। রাস্তায় বের হয়ে মনে হলো— চকোলেট গ্যানাশ মেশানো বাতাস নাকে লাগছে। আর ফোন হাতে নিতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক কেকের ছবি, রিল, রেসিপি!

মনে হচ্ছে পৃথিবী কি আজ হঠাৎই ডায়েট ভেঙে ফেলেছে? নাকি বেকারিরা ষড়যন্ত্র করে আমাদের হৃদয় গলিয়ে দিতে চায়?

আসলে রহস্যের সমাধান খুব সহজ— আজই সেই দিন—কেক ডে! জন্মদিন না থাকলেও কেক কাটার অনুমতি বৈধ, আর মিষ্টি খেয়ে অপরাধবোধ? সেও আজ একটু ছুটিতে।

কেকের গল্প: দেবতার অর্ঘ্য থেকে জন্মদিনের টেবিলে

বিজ্ঞাপন

কেকের যাত্রা বহু পুরোনো। প্রাচীন মিসরীয়রা দেবতাদের উদ্দেশে মধু-ভরা রুটি উৎসর্গ করতেন— সেই উপহারই কালের পরিক্রমায় রূপ নেয় কেকের প্রথম সংস্করণে। পরে গ্রিক-রোমান যুগে কেক হয়ে ওঠে উৎসবের অপরিহার্য অংশ। মধ্যযুগে ইউরোপে কেক পরিবেশন ছিল অভিজাততার প্রতীক— বাৎসরিক জমায়েত থেকে বিয়েবাড়ি, সবখানেই এর আলাদা আসন।

কেন ২৬ নভেম্বর কেক ডে?

১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বেকারিরা ও ফুডপ্রেমীরা মজা করে এই দিনটিকে ঘোষণা করে National Cake Day। এরপর ইন্টারনেটের দৌলতে এটি আজ পৃথিবীজোড়া এক ‘ফান অবজারভেন্স’— যেখানে মানুষ রেসিপি শেয়ার করে, বেকারি বিশেষ ছাড় দেয়, আর সোশ্যাল মিডিয়া কেকময় হয়ে ওঠে।

মানুষ কেন কেককে এত ভালোবাসে?

বিজ্ঞানীদের মতে, কেক শুধু খাবার নয়—এ এক ধরনের হ্যাপিনেস ট্রিগার!

চিনি দ্রুত এনার্জি দেয়,
চকোলেট/ভ্যানিলার ঘ্রাণ মুড ভালো করে,
কেক সাধারণত খাওয়া হয় ‘হ্যাপি মোমেন্টে’, তাই মনে সুখের স্মৃতি জমা হয়— হয়তো এজনই কেক দেখলেই মানুষের হাসি আটকানো যায় না।

সবচেয়ে জনপ্রিয় ৫ কেক

বিশ্বজুড়ে যে কেকগুলি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়—

চকোলেট কেক — অনাড়ম্বর রাজা,
চিজকেক — মসৃণ আর লাস্যময়,
রেড ভেলভেট — চোখ ধাঁধানো রঙ, নরম স্বাদ,
ব্ল্যাক ফরেস্ট — জার্মানির মিষ্টি মিরাকল,
ফল কেক — শীতের উৎসবের চিরচেনা সঙ্গী,
বাংলাদেশে ভ্যানিলা স্পঞ্জ, ক্রিম রোল আর আধুনিক ফিউশন কেকও দারুণ জনপ্রিয়।

কেক ডে মানে একটু মজা

“ডায়েট শুরু হবে কাল থেকে”—আজকের দিনটির সবচেয়ে ব্যবহৃত ক্যাপশন,
অফিসে ছোট ছোট ‘কেক কাটিং ব্রেক’,
বন্ধুদের দাবি—“আজ কেক খাওয়ান, এটা নৈতিক দায়িত্ব!”,
বাচ্চারা এই সুযোগে কেকের টুকরো চাইতে থাকে দ্বিগুণ উৎসাহে।

ঘরোয়া কেকের মায়া

বেকারি কেক যতই মজাদার হোক, ঘরে বানানো কেকের স্বাদ আলাদা।
ডিম, ময়দা, বাটার, দুধ— মাত্র কয়েকটি উপাদানেই তৈরি হয় নরম স্পঞ্জ।
ওভেন না থাকলেও সমস্যা নেই— পাত্র বা প্রেসার কুকারেই তৈরি করা যায় দারুণ কেক।

কেকে লুকানো আবেগ

কেক শুধু খাবার নয়— এ এক অনুভূতি।
প্রথম জন্মদিনের ছবি, সারপ্রাইজ পার্টি, বন্ধুদের হাসাহাসি, কেক মুখে মেখে ফেলা— সবই কেকের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি।
তাই কেক খাওয়া মানে একটু আনন্দ ছুঁয়ে যাওয়া।

শেষ কথা

২৬ নভেম্বরের কেক ডে মূলত জীবনের ছোট ছোট সুখকে উদযাপন করার দিন। বড় কেক না হলেও আজ নিজের জন্য ছোট একটা স্লাইস তো রাখা যেতেই পারে। শেষ পর্যন্ত— জীবন একটু মিষ্টি হলেই ভালো লাগে!

সারাবাংলা/এফএন/এএসজি
বিজ্ঞাপন

আরো

ফারহানা নীলা - আরো পড়ুন
সম্পর্কিত খবর