অভিনন্দন টিম সারাবাংলা! কেউ কেউ থাকে সেরাদের সেরা
১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:০৬
||মাহমুদ মেনন, নির্বাহী সম্পাদক||
রাত দেড়টা-দু’টায় ফোন কল… ভাই স্টোরিটা পাঠিয়েছি। কোনটা? ওই যে আপনি বলেছিলেন নির্বাচন নিয়ে… ও আচ্ছা… সকালে তুলবো… থ্যাংকস। কিংবা আরও গভীর রাতে ম্যাসেন্জার চ্যাট বক্সে হঠাৎ টক করে শব্দ। সকালের জন্য একটা স্পেশাল পাঠালাম — শিরোনামে, নিউজ মেইলে আছে। বছর জুড়ে গোলাম সামদানির এমন অনেক বার্তায় মধ্যরাতের ঘুম নষ্ট হয়েছে। আমি প্রায়শঃই বলি সারাবাংলার এই কর্মীটি ভূতের মতো কাজ করে। কারণ অ্যাসাইনমেন্টে পৌঁছাতে তার দেরি হয়েছে এমনটা শুনিনি একদিনও। কোনও অ্যাসাইনমেন্ট দিলে বলেছে- আমার কাজ আছে, পারবো না, কিংবা এই কাজটা আমি কি করে করবো, আমার তো এটা নেই, সেটা নেই এসব…. এমন হয়নি কোনও কালে। মিতভাষী গোলাম সামদানীর মুখে সবচেয়ে বেশি শুনেছি- জ্বি ভাই।
তরিকুর রহমান সজীব সারাবাংলার একটু পরের দিকের কর্মী। কিন্তু এলেন, দেখলেন, দায়িত্ব নিলেন, জয় করলেন এটা সজীবের জন্য খাটে। খুব এক খাটুরে কর্মী সারাবাংলা.নেট’র। খবর পরিবেশনের আর্টিকুলেশনটি তার রপ্ত করা। ফলে তার হাতে রিপোর্ট তুলে দিতে রিপোর্টারদের আগ্রহ ভীষণ। কেউ কেউতো ফোন করে অনুরোধও করে… আমার রিপোর্টটা যেনো সজীব ভাই দেখেন। সজীব একজন সদা ইতিবাচক মনোভাবের কর্মী। আর একই সাথে প্রচণ্ড যৌক্তিকও। যতক্ষণ না যুক্তিতে কনভিন্সড ততক্ষণ কোনও কনটেন্ট প্রকাশ করে না। এ ধরনের কর্মী একটি টিমে থাকলে তার আছর (ইতিবাচক প্রভাব অর্থে) টিমের অন্য সদস্যদের ওপর পড়ে… যা টিমকেই করে তোলে যৌক্তিক ও ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন।
সারাবাংলা.নেট’র প্রতিটি সদস্যই সাংবাদিক কিংবা সংবাদমনষ্ক হবে, জেনারেল সেকশনের সঙ্গে যখন প্রথম মিটিং হয়, সেদিনের প্রত্যাশা ছিলো এটি। সে প্রত্যাশা সর্বোতভাবে পূরণ করেছেন ও করে চলেছেন আতাউর রহমান। তিনি সারাবাংলা’র হেড অব ফাইন্যান্স। এবং তিনিই প্রথম অ্যাপয়েন্টেড কর্মী। স্ক্র্যাপ থেকে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়েছে সারাবাংলা। আর তার অন্যতম কারিগর এই আতাউর রহমান। ভীষণভাবে পজিটিভ মনোভাবাপন্ন। আর অমায়িক এই মানুষটির সম্পর্কে একটা কথাই খাটে- হি ইজ অ্যা গুড সোল…। নিজের রুমে কাজের বাইরে বাকি সময়টা নিউজরুমে ঘুরে ঘুরে কাটান। এটা ওটা খবর তার কাছেও আসে, সেগুলো বার্তাকক্ষে শেয়ার করেন। তিনি সবার প্রিয় আতা ভাই। পুরো টিমে একক জনপ্রিয়তার ভোট হলে আমার ধারণা তিনিই জয়ী হবেন।
কবির কানন একটা জোস রিপোর্টার… এ কথাগুলো আমাকে বলে ওর সহপাঠীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি সপ্তাহে একদিন ক্লাস নিতে যাই। সবশেষ যে ব্যাচটির ক্লাস নিচ্ছিলাম সেটি কাননদের ব্যাচ। ওরা বলে- স্যার কবির কাননতো ক্যাম্পাসের হিরো। বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার ডি-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর ব্রেক করাই কেবল নয়, এর পর তার করা একের পর এক রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয়বার পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়। একেই বলে হাতে ছাই মেখে ধরা। কোনও রিপোর্টিং যখন একটি চূড়ান্ত ফল অর্জন করতে পারে তখন সে রিপোর্টকে সেরা বলা চলে। আর রিপোর্টারকে বলা চলে সেরা রিপোর্টার। নিউজরুমের ভাষ্য কবির কানন কেবল বিশ্ববিদ্যালয়েরই নয়, বাইরে অ্যাসাইনমেন্ট দিলেও ভালো করে।
এরিন সারাবাংলার সর্বকনিষ্ঠ কর্মী। ক্যানন ব্র্যান্ডের একটা সেভেন্টি ক্যামেরা হাতে তুলে দিয়ে বললাম, ভিজ্যুয়াল বানাও। এরপর থেকে শুধু চাপের ওপরই রাখি। কিরে কি করেছিস আজ…? টিমে অপেক্ষাকৃত যারা ছোট তারা আমাকে স্যার ডাকে…। এটা বস হিসেবে স্যার নয়, যেহেতু টিমের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে রয়েছে… তাদের দেখাদেখি ওরা কয়েকজন স্যার বলে। আমি ওদের যতটা পারি শেখানোর চেষ্টা করি। আবদুল্লাহ আল মামুন এরিন শিখছে। ভালোই শিখছে। এরই মধ্যে মুগ্ধ হওয়ার মতো কিছু কাজ করেছে। তবে যতটুকু করেছে তার চেয়ে অনেক বেশি ওর আরও করার ইচ্ছা… সেটা বুঝতে পারি। সেরাদের এটাই ধর্ম। এই ছেলেটি যাবে অনেক দূর।
যাত্রা শুরুর মাত্র এক বছরে সারাবাংলা.নেট অনেক পাঠকের মনে সাড়া ফেলতে পেরেছে। খুব ছোট্ট একটি টিম। এর প্রতিটি সদস্যই সেরা… তাদের সেরা পারফরম্যান্সেই আমরা এগুতে পেরেছি, পারছি। তবে সেরাদেরও সেরা তো থাকেই। অভিনন্দন এদের সবাইকে। অভিনন্দন সারাবাংলা.নেট’র প্রতিটি কর্মীকে।
সারাবাংলা/এমএম