ঈদ আনন্দে পানি ঢালবে মেঘ
৪ জুন ২০১৯ ০১:১৮
ঢাকা: ঈদুল ফিতরে সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। তবে শুষ্ক থাকতে পারে রংপুর ও রাজশাহী জেলা।
পূর্বাভাস বলছে, ঈদের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, এই বৃষ্টি জুনের ৯ তারিখ পর্যন্ত থেমে থেমে চলতে থাকবে। মূলত বর্ষাকে আগাম অভ্যর্থনা জানাতে জুনের ১৫ তারিখ পর্যন্ত দেশের আবহাওয়া কিছুটা শীতল থাকবে। ঢাকায় বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ (মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুন) মাসে তাপপ্রবাহ ছিল। বর্ষা (মধ্য জুন থেকে মধ্য আগস্ট) ঋতুতে আবহাওয়া শীতল থাকবে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ষায় তাপপ্রবাহ ফিরে আসার সম্ভাবনা কম। এই সময় বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর মেঘ উড়ে এসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়াতে পারে। বর্ষা শুরুর আগেই যা শুরু হয়ে গেছে। বৃষ্টির পাশাপাশি অনেক জায়গায় অস্থায়ী ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, জুনের প্রথমার্ধের মধ্যে সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) বিস্তার লাভ করবে। তবে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই মাসের ১-২টি মৌসুমী নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে।
মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু জায়গায় স্বল্প মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। অন্যান্য জায়গায় নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ থাকবে।
এপ্রিলের উল্লেখযোগ্য ঘটনা
গত ২৫ এপ্রিল সকাল ৬টায় ভারত মহাসাগর ও এর পাশে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ২৬ এপ্রিল দুপুর ১২টায় সেটি নিম্নচাপ ও মধ্যরাতে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। ২৭ এপ্রিল দুপুর ৩টায় দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও এর পাশে ভারত মহাসাগর এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণিতে পরিণত হয়। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি পরবর্তীতে আরও উত্তর-উত্তরদিকে এগিয়ে ঘণীভূত হয়। ৩০ এপ্রিল সকাল ৯টায় একই এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।
যেমন ছিল মে মাস
ঘূর্ণিঝড় ফণি গত ৩ মে দুপুর ভারতের উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে। এরপর স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও উত্তর-উত্তরদিকে এগিয়ে ৪ মে সকাল ৬টায় বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা অঞ্চল এবং এর পাশের এলাকায় অবস্থান নেয়। সকাল ৯টায় ঘূর্ণিঝড় আকারে ফরিদপুর-ঢাকা অঞ্চলে অবস্থান করে। এরপর এটি আরও উত্তর-উত্তর দিকে এগিয়ে দুর্বল হয়ে পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ অঞ্চল এবং এর পাশের এলাকায় প্রথমে স্থল নিম্নচাপ আকার নেয়। পরে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়।
পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বায়ু প্রবাহের সংযোগ এবং বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে জলীয় বাষ্পের যোগান বেড়ে যাওয়ায় ১২-১৫ এবং ২২-২৫ মে সারাদেশে দমকা হওয়া বয়ে যায়, বৃষ্টি এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হয়। দেশের কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণও হয়। ১-২, ৬-১৪, ১৬-২২, ২৬-২৯ মে খুলনা বিভাগ এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। ১০ ও ১১ মে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে এ মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
মে মাসে (১ থেকে ২৯) সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে শতকরা ২৫ দশমিক ২ ভাগ কম বৃষ্টি হয়েছে। তবে রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ছিল স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত।
সারাবাংলা/টিএস/এটি