সাগরে নয় বছর ভেসে আমেরিকার চিঠি পৌঁছালো ফ্রান্সে
১২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৬
আগস্ট ২১, ২০১০ সাল। আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ম্যাক্স ভ্রেডেনবার্গ তখন দশ বছরের বালক। একটা চিঠি লিখে, বোতলে ভরে, রকপোর্টের লং বিচ থেকে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন আটলান্টিক মহাসাগরে। এই চিঠি কারো হাতে পৌঁছাবে, আর কোনো না কোনো দিন উত্তর পাবেন, সেই আশায় চিঠিতে নিজের বাড়ির ঠিকানা জুড়ে দিয়েছিলেন। তার চাওয়া ছিল খুব সামান্য, প্রাপক যেন তার ব্যাপারে জানতে পারে, এতটুকুই।
অবশেষে তার আশা পূরণ হলো। প্রাপক যে শুধু তার কথা জানলো তাই নয় তিনি তার চিঠির উত্তর পেলেন। কিন্তু তার জন্য ম্যক্সকে দীর্ঘ নয় বছর অপেক্ষায় কাটাতে হলো।
অপেক্ষায় অপেক্ষায় ১৯ বছর বয়সী কলেজ ছাত্র ম্যাক্স বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলেন চিঠিটার কথা। চিঠির উত্তর আসে ম্যাক্সের বাড়ির ঠিকানায়। তার বাবা চিঠি পেয়ে ম্যাক্সকে জানান। তাও ম্যাক্স মনে করতে পারছিলেন না। পরে ফ্যামিলি চ্যাটে তার লেখা চিঠি আর তার উত্তরের ছবি পাঠান ম্যাক্সের বাবা। তখন ম্যাক্সের মনে পড়ে তার শৈশবে ঘটানো সেই ঘটনার কথা।
‘বাবা মা আমাদের সব স্মৃতিই সংরক্ষণ করে রাখেন, তাই প্রথমে চিঠিটা আমি তেমন আমলে নেইনি, কিন্তু প্রাপকের কাছ থেকে পাওয়া উত্তর সম্বলিত চিঠিটা দেখে বিস্ময়ে আমার হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল’।
অক্টোবর ১০, ২০১৯। চিঠিটা বোতলে ভাসতে ভাসতে ফ্রান্সে গিয়ে পৌঁছেছিল। কন্টিস আর মিমিজানের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে চিঠিটা উদ্ধার করেন জি ডুবোইস নামে একজন। তিনি ম্যাক্সকে লিখে পাঠান, ‘মাত্র ৬০০০ কিলোমিটার আমাদের ব্যবধান, কিন্তু এতটুকু আসতেই চিঠিটার নয় বছর লেগে গেলো। এখন তুমি আর সেই দশ বছরের বালকটি নেই, তোমার বয়স ১৯’।
ম্যাক্স ভ্রেডেনবার্গ যেনো বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি কস্মিনকালেও ভাবেননি কেউ তার বোতলে ভাসানো চিঠিটা খুঁজে পেয়ে, তাকে উত্তর লিখে পাঠাবে। তিনি এখন ভেবেছেন ওই পত্র লেখকের সাথে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তুলবেন।
‘এমন ঘটনা মনে হয় না, আমার জীবনে আর কখনও ঘটবে’