যেভাবে ভবনটি হলো বাংলাদেশের পরিচয়ের প্রতীক
২৮ জানুয়ারি ২০২১ ২০:১৭
জাতীয় সংসদ ভবন, পুরো বিশ্বে দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় আইনসভা ভবনের একটি। বিশ্বস্তরে বাংলাদেশের পরিচয়সূচক প্রতীকী ভবন এটাই। রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে ২১৫ একর জায়গাজুড়ে স্থাপিত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিশ্ব স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন, বাংলাদেশের এই আইনসভা যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি তথা আজকের দিনেই।
শুরুর কথা
বাংলাদেশের বর্তমান সংসদ ভবন কমপ্লেক্সটির পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল ১৯৫৯ সালে। পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তানের (বর্তমান পাকিস্তান) আইনসভার জন্য পাকিস্তানের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় রাজধানী ঢাকার শেরে বাংলা নগরে ভবনটি নির্মানের সিদ্ধান্ত নেয়। ভবনটি নির্মানের জন্য নির্বাচিত করা হয় সে সময়কার পৃথিবীখ্যাত স্থপতি লুই আই কানকে। ১৯৬০ সালে তার দেওয়া প্রাথমিক নকশা অনুমোদনের পর ১৯৬১ সালে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়।
তবে লুই কান আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদ ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের দায়িত্ব পান ১৯৬২ সালের মার্চ মাসে। দায়িত্ব পাওয়ার পর লুই কান ১৯৬৩ সালে পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। সে সময়েই তৈরি হয় কমপ্লেক্সটির মূল নকশা। আর জমিতে কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৬৪ সালে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
ক্রমেই ঐতিহাসিক হয়ে ওঠা এই সংসদ ভবনের নির্মানের পেছনের ইতিহাস না জানলে দীপ্ত এই স্থাপনাটিকে জানা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। পাকিস্তানের আইনসভার জন্য ঢাকার শেরে বাংলা নগরকে বেছে নেওয়াও ছিল সেসময়কার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আইয়ুব খানের একটি রাজনৈতিক পরিকল্পনার অংশ। আইনসভা ভবনের পরিকল্পনার বছর ১৯৫৯ সালেই আইয়ুব খান মালিক ফিরোজ খান নূনের সংসদীয় সরকারকে উৎখাত করে পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো সামরিক আইন জারি করেন।
১৯৬০ সালে সামরিক শাসনের মধ্যেই সেই সেনানায়ক পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে ‘নির্বাচিত’ হন। নির্বাচিত হওয়ার আগেই নীলনকশা করে রেখেছিলেন আইয়ূব খান। পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আইয়ুব জানতেন। বুঝতেন এ নিয়ে ক্রমেই অসন্তোষ দানা বাঁধছে। ভাষা আন্দোলনের প্রভাব এবং পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যের যৌক্তিকতা সম্পর্কেও অবগত ছিলেন তিনি। এ অবস্থায় ধূর্ত আইয়ূব খান পূর্ব বাংলাকে দিলেন দ্বিতীয় রাজধানীর টোপ। অর্থাৎ ইসলামাবাদ হবে প্রধান রাজধানী, দ্বিতীয় রাজধানী হবে ঢাকা।
আর ঢাকাকে দ্বিতীয় রাজধানী ঘোষণা কেবল কাগজে কলমে দেখালেই হবে না। এজন্যে এই সামরিক শাসক ধারণা করেছিলেন ঢাকায় অতিকায় আইনসভা ভবন তৈরি করা হলে তা বাঙালিদের মধ্যে ক্ষমতার অনুভূতি জাগাবে এবং বিনিময়ে আসন্ন নির্বাচনে তিনি তাদের ভোট পাবেন। নিজেকে পুনর্নির্বাচিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে আইয়ুব খান বাঙালিদের বঞ্চনার অনুভূতিকে ধাপ্পা দিতে নতুন কৌশল নেন, তা বলাই বাহুল্য।
এদিকে পূর্ব বাংলায় আইনসভা ভবন স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া তৈরি করলো। পরে অবশ্য নিজের আত্মজীবনীতে আইয়ুব খান উল্লেখ করেছিলেন এটা ছিলো বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানিদের ‘ঘুষ’দেওয়ার রাজনৈতিক নাটক।
বাঙালির সংগ্রামের প্রতীকী ভবন হয়ে ওঠা
এদিকে আবার এই আইনসভা ভবন ক্রমেই বাঙালিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ আর অধিকারের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। প্রাথমিক পর্যায়ের নির্মাণপ্রযুক্তি নিয়ে, পাটের রশিতে বাঁধা বাঁশের মাচার ওপর লুঙ্গি-শাড়ি পরা নির্মাণশ্রমিকেরা যেভাবে এই অতিকায় ভবন গড়ে তুলেছিলেন, ধীরে কিন্তু নিশ্চিতভাবে তারা আসলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে জাতির সংকল্পশক্তিকে প্রদর্শন করছিলেন।
এর মধ্যে লুই কানকে ইসলামাবাদে নতুন একটি পার্লামেন্ট ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানকার সরকারি আমলাতন্ত্র কানের কাছে দাবি করেছিল তিনি যাতে সেই ভবনকে সুস্পষ্টভাবে ‘ইসলামি’ দৃশ্যরূপ দেন। এ ধরনের অন্যায় হস্তক্ষেপে হতাশ হয়ে কান কাজ ছেড়ে দেন। পরে আরেকজন মার্কিন স্থপতি ডারেল স্টোন তুলনায় অনাকর্ষণীয় সেই পার্লামেন্ট ভবন নির্মাণ করেন।
অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে রাজনৈতিক ইসলামের ভূমিকা ছিল না। এ জন্যই কানের কাছে সংসদ ভবনের নির্মাণশৈলীতে ইসলামি স্থাপত্যকলার বৈশিষ্ট্য হিসেবে পরিচিত গম্বুজ ও খিলান অন্তর্ভুক্তির দাবি আসেনি। লুই কান বঙ্গীয় বদ্বীপ, এর নদী, এর বিস্তৃত সবুজ, এর প্রসারিত সমভূমি, এর উঁচু ভিটায় তৈরি ঘরবাড়ি এবং এর ভূমি-জলে মেশানো ভূপ্রকৃতি থেকে সংসদ ভবনের নকশার প্রেরণা খুঁজেছিলেন।
ঢাকায় আসার অল্প দিনের মধ্যেই লুই কান বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকায় ঘুরে বেড়ান এবং এই মৌসুমি জলবায়ুর দেশের জীবন বুঝতে নদীতীরের দৃশ্যাবলির রেখাচিত্র (স্কেচ) তৈরি করেন। ১৯৫০-এর দশকে পড়া চিরায়ত গ্রিক-রোমান ও মিসরীয় স্থাপত্যকলার বিদ্যার সঙ্গে বাংলার স্থানীয় ছাপের মিশ্রণ ঘটাতে তার কোনো অসুবিধাই হয়নি।
এদিকে পূর্ব পাকিস্তানে লুই কানের নকশা থেকে ধীরে ধীরে একটি অবয়ব দৃশ্যমান হতে থাকল এবং মাথা তুলল কংক্রিটের দেয়াল (কোনো কোনো সূত্রের মতে গড়ে দৈনিক পাঁচ ফুট করে)। যতই কানের নির্মিত প্রাসাদ মাথা তুলতে থাকল, ততই জাগ্রত বাঙালিরা তার মধ্যে জাতি হিসেবে গঠিত হওয়ার জন্য অনস্বীকার্য জাতীয় মিথের অস্তিত্ব অনুভব করতে লাগল। শহীদ মিনার যেভাবে ১৯৫০-এর দশকের ভাষা আন্দোলনের চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছিল, সংসদ ভবন তেমনি ষাটের দশকের স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের মানসিকতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল।
মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী নির্মাণকাজ
১৯৭১-এর ২৫ মার্চ যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তড়িঘড়ি করে পূর্ব পাকিস্তানে কানের দপ্তর বন্ধ করা হলো এবং নির্মাণকাজও স্থগিত হয়ে গেল। সেখানে কেবল দাঁড়িয়ে ছিল একটি অর্ধসমাপ্ত রহস্যময় ভবন। তার পরও তা হয়ে ছিল বাঙালিদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের অদম্য প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের সময় একটা পরিহাসময় গল্প চালু ছিল, পাকিস্তানি পাইলটরা ভবনটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মনে করে এর ওপর আর বোমা ফেলেনি!
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সরকার আবারো এর নির্মাণকাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। মূল নকশায় কোনরকম পরিবর্তন না এনেই আবারো এর নির্মাণকাজ শুরু হয়।
১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুস সাত্তার। সেসময়ে প্রথমদিকে এর নির্মাণ ব্যয় ১৫ মিলিয়ন ডলার ধরা হলেও কমপ্লেক্স তৈরিতে মোট ব্যয় হয়েছিল ৩২ মিলিয়ন ডলার।
আশির দশকে দেখা গেল সেই ধ্বংসপ্রতীকই দেশটির অস্তিত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। হাজার টাকার নোটের গায়ে, ডাকটিকিটে, রিকশার অলংকরণে, বিজ্ঞাপনে, সরকারি পুস্তিকায় এবং কতভাবে তার ছবি ব্যবহৃত হতে থাকল! গোটা দুনিয়ার স্থাপত্যশিক্ষায় আমাদের সংসদ ভবনের নকশা কেবল অধ্যয়নই করা হয় না, এর ইতিহাস ও সংশ্লিষ্ট অনেক কিছু নিয়েই গবেষণা হয়।
মূল সংসদ ভবন ও এর পরিকল্পনা
আধুনিকতায় ভরপুর মূল সংসদ ভবনটি কমপ্লেক্সের কেন্দ্রে অবস্থিত। আলাদা নয়টি ব্লক দিয়ে তৈরি। আটটি ব্লকের উচ্চতা ১১০ ফুট, আর মাঝের অষ্টভুজ ব্লকের উচ্চতা ১৫৫ ফুট। এই ভবনের মূল অংশ হচ্ছে সংসদ অধিবেশন কক্ষ যেখানে একইসঙ্গে ৩৫৪ জনের বসার জায়গা করা আছে। রয়েছে ভিআইপিদের জন্য দুইটি পোডিয়াম ও দুইটি গ্যালারী।
অধিবেশন কক্ষে আমন্ত্রিত অতিথি ও গণমাধ্যমের জন্য রয়েছে গ্যালারী। এছাড়াও এই ভবনটির প্রথম তলায় রয়েছে গ্রন্থাগার, তৃতীয় তলায় সংসদ সদস্যদের জন্য লাউঞ্জ এবং উপর তলায় রয়েছে মিলনায়তন।
এছাড়া দক্ষিণ দিকে রয়েছে সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজা আর উত্তর দিকে প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা। অধিবেশন চলাকালে সাউথ প্লাজা সংসদ ভবনের মূল প্রবেশ পথ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা সাংসদ ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যে নকশা ভবনটিকে করেছে অনন্য
মূল সংসদ ভবনে লুই আই কানের স্থাপত্য ক্ষমতার বিশেষ স্বরূপ দেখা যায় যা হচ্ছে আলোর নান্দনিকতা ও সর্বোচ্চ প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার। সূর্যের আলো চারদিকের দেয়াল ও অষ্টভূজকৃতির ড্রামে প্রতিফলিত হয়ে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করে।
লুই কান কৃত্রিম আলোকে সেখানে এমনভাবে বিভক্ত করেছেন যে সূর্যের আলো প্রবেশের ক্ষেত্রে তা কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারে না। স্থপতি আলোর বিচ্ছুরনের ব্যবস্থা করেছেন ভবনের দেয়াল, মেঝে ও সিঁড়ি থেকেও।
লুই আই কান সংসদ ভবনের নকশায় সূর্যের আলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি বৃষ্টি প্রতিরোধেও মনোযোগ দিয়েছেন।
এছাড়া ভবনের বাইরের দিকে বিভিন্ন জ্যামিতিক খিলান ভিতরে বাতাসের চলাচলকে করেছে বাধাহীন।
মুল ভবনের চারপাশে রয়েছে সবুজের সমারোহ। পুরো কমপ্লেক্স এলাকা ঘিরে রয়েছে ইউক্যালিপটাস আর কৃষ্ণচূড়া গাছের সারি। মুল ভবনটিকে ড্রোন ভিও দেখলে মনে হয় যেন পানির ওপর ভেসে আছে এটি।
সারাবিশ্বে সংসদ ভবনের স্থাপত্যশৈলীর প্রশংসিত হয়েছে। পৃথিবীর সব মহাদেশ থেকেই পর্যটকরা আসেন বিংশ শতাব্দীর আধুনিক স্থাপত্যকলায় ঠাঁই পাওয়া লুই আই কানের এই অসামান্য স্থাপত্য দেখতে।
জানি স্থপতি লুই আই কান সম্পর্কে
বিখ্যাত স্থপতি লুই আই কানের জন্ম ১৯০১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন রাশিয়ার অন্তর্গত এস্তোনিয়ার এক ইহুদি পরিবারে। পরিবারের সঙ্গে ১৯০৬ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। পেনসেলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক শেষ করে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া স্থপতি লুই কান ফিলাডেলফিয়ার রিচার্ড মেডিক্যাল ল্যাবরেটরির নকশার পরিকল্পনা করে প্রথম খ্যাতি পান।
বিশ্ববিখ্যাত এই স্থপতি নকশা করেছেন বিখ্যাত সব স্থাপত্যের। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন ছিল তার সবশেষ স্থাপত্য নকশা। ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ মারা যান মহান এই স্থাপত্যশিল্পী।
বাংলাদেশের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নকশা করেছেন লুই আই কান। এছাড়াও তিনি নকশা করেছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, সক ইনস্টিটিউট, ইয়েল আর্ট গ্যালারিসহ বিশ্বের বিখ্যাত সব স্থাপত্য।
লুই কানের পাওনা পরিশোধ ও মূল নকশার হস্তান্তর প্রসঙ্গ
লুই কানের মৃত্যুর নয় বছর পর ১৯৮৩ সালে তার বকেয়া ফি ২ লাখ ১৬ হাজার ৯৬৪ ডলার পরিশোধের বিষয়ে কানের উত্তরাধিকারী প্রতিষ্ঠান ডেভিড উইসডম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি সমঝোতা হয়। তিন কিস্তিতে তা পরিশোধ করার কথা ছিল। এই প্রক্রিয়ার মধ্যস্থতাকারী ছিল হেনরি উইলকট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশ সরকার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৯০ ডলার পরিশোধও করে। দীর্ঘদিন পর বাকি ৬১ হাজার ডলার পরিশোধ করে ২০১৬ সালের সংসদ ভবন কমপ্লেক্সটির মূল নকশা বাংলাদেশে আনা হয়।
২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর মূল নকশার কপি ঢাকায় পৌছে। চার সেট নকশার মধ্যে দুই সেট জাতীয় সংসদে, এক সেট স্থাপত্য অধিদপ্তরে ও একটি ন্যাশনাল আর্কাইভে রাখা হয়েছে।
লুই আই কানের মুল নকশার বাইরে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে ওই এলাকায় নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এসব স্থাপনা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে ২০১৪ সালে মূল নকশা বাংলাদেশে আনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর লুই আই কানের প্রতিষ্ঠান ডেভিড অ্যান্ড উইজডম এর সঙ্গে যোগাযোগ করে পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির আর্কিটেকচারাল আর্কাইভ থেকে মূল নকশা আনার ব্যবস্থা করা হয়। ২০২০ সালে সংসদ ভবনের শপথকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, লুই আই কানের নকশা অনুযায়ী জাতীয় সংসদকে সাজানোর পরিকল্পনা চুড়ান্ত হয়েছে। এবং সেই অনূযায়ী কার্যক্রমও চলছে।
সারাবিশ্বে সংসদ ভবনের স্থাপত্যকলা একটি জ্ঞানকোষ। মুক্তিযুদ্ধের আগেই কান তার অসামান্য স্থাপত্যে বাংলাদেশের জাতিগত পরিচয়কে তুলে ধরেছিলেন। আর তাই জন্ম থেকে যেমন এটি বাংলাদেশের পরিচয়ের প্রতীক হয়ে আছে, তেমনি ভবিষ্যতের আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশের প্রতীক হয়ে থাকবে জাতীয় সংসদ ভবন।
সারাবাংলা/এসএসএস
জাতীয় সংসদ ভবন টপ নিউজ লুই আই কান লুই আই কানের পাওনা সংসদ ভবনের ইতিহাস সংসদ ভবনের নকশা সংসদ ভবনের নকশা ঢাকায়