সন্তান জন্মের পর কেটকে নিখুঁত দেখাচ্ছিল,যা মোটেই স্বাভাবিক না
২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৫৪
মূল লেখাঃ অ্যামি জয়েস।।
ব্রিটিশ রাজবধু কেট মিডলটন খুব সুন্দর ঝকঝকে জামা পরে তকতকে মুখে আন্তরিক হাসি নিয়ে হাত নাড়াতে নাড়াতে হাসপাতাল থেকে বের হচ্ছেন। কোলে তার সদ্য জন্ম নেয়া তৃতীয় সন্তান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভিডিওটি বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক ট্রলও বের হয়েছে। যেখানে রাজবধূ এবং বাকি মেয়েদের প্রসবপরবর্তী অবস্থা নিয়ে যথেষ্ট হাসাহাসি করা হয়েছে।
কেটের বাড়ি ফেরার ছবিটি দেখলে কেউই ভাবতে পারবেনা যে সন্তান জন্ম দেবার সময়টি কী ভয়ানক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয় প্রতিটি মেয়েকে। এমন কি কেটকেও সেই সময় পার করতে হয়েছে। ব্রিটিশ রাজপরিবারের মেয়েদের জন্যে অবশ্যই বিষয়গুলো আলাদা। তার আরামের জন্যে এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই সে খুব সহজেই হাতের নাগালে পেয়ে গিয়েছে। এছাড়াও ক্যাথরিনের জায়গায় আপনি হলে আপনিও চাইতেন যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল ছেড়ে নিজের আরামদায়ক ঘরের নরম বিছানায় ফিরে যেতে।
কেটের পরনে যে পোশাকটি দেখছেন সেটি তিনি যে সেদিন পরবেন সেই বিষয়টি হয়তো কয়েক সপ্তাহ কিংবা কয়েক মাস আগে থেকেই ঠিক করা ছিলো। তার জন্যে একজন হেয়ার ড্রেসার এবং মেকাপ আর্টিস্ট তৈরি ছিল। এসব ছাড়াও সবসময় শতভাগ পারফেক্ট আর ঠিকঠাক থাকার জন্যে কেটের মাথার ওপর সবসময় কয়েক মন ওজনের চাপ থাকে । তবুও আমরা অন্তত এটুকু দেখে খুশি হতে পারি যে কেট তার প্রসব পরবর্তী স্ফীত পেটটি অন্তত ঢেকে রাখার চেষ্টা করেন নি!
তারপরও সব মিলিয়ে কে বেচারি কেট এর মত হতে চায়? সন্তান জন্মের ঠিক পরপরই কার ইচ্ছে করে একটা নরম কাপড় বাদ দিয়ে মটমটে নতুন কাপড় পরতে? নিজের মত করে বাথটাবে পড়ে থাকার বদলে কার ইচ্ছা করে ওই সময়টাতে হেয়ার স্টাইলিশ বা মেকআপ আর্টিস্টের সামনে গিয়ে বসতে? নিজের শরীর থেকে একটা বাচ্চা বের করার অমানুষিক কষ্টের কয়েক ঘন্টা পরে কার ইচ্ছা হয় হাজার হাজার অপরিচিত মানুষের দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে হাত নাড়তে? তাও আবার হাই হিল পরে?
সন্তানের জন্ম দেয়া কোন রূপকথার গল্পের অংশ না। এর সাথে জড়িয়ে আছে মায়ের প্রসব পরবর্তী শারিরীক ও মানসিক ধকলের বিষয়টি যা আমরা প্রায় কখনোই খেয়াল রাখিনা। সেইন্ট মেরি হাসপাতালের সামনে তোয়ালেতে মোড়া শিশু কোলে হাস্যোজ্জ্বল ক্যাথরিনের ছবি আমাদের সেই বেখেয়ালি সংস্কৃতির পালে আরও হাওয়া দিলো।
অ্যামি জয়েস- লেখক ও সম্পাদক, অন প্যারেন্টিং
[লেখাটি ২৩ এপ্রিল ২০১৮ তে ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত হয়। ভাবানুবাদঃ জান্নাতুল মাওয়া]