ক্রাক প্লাটুনের গেরিলাদের অসমাপ্ত তালিকা
৩ জুন ২০২৩ ১৬:২৮
ক্র্যাক প্লাটুন মানে হার না মানা অদম্য গেরিলা যোদ্ধাদের অসীম সাহসিকতার গল্প। মুক্তিযুদ্ধে হানাদারদের দখলে থাকা ঢাকায় নিরাপদে থাকা হানাদারদের বুকে কাঁপন ধরিয়েছিলেন ক্রাক প্লাটুনের গেরিলারা।
মার্চে শুরু হওয়া অবর্ণনীয় আগ্রাসনের পর তখন পাকিস্তানী সেনাবাহিনী সবেমাত্র জেঁকে বসেছে সারা দেশে। লাখ লাখ নিরীহ মানুষকে বিনা কারণে অবলীলায় গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। একটা পিঁপড়াকে যেমন বিনা কারণে ইচ্ছে হলেই দুই আঙ্গুলের মাঝে টিপে ধরে মেরে ফেলি আমরা, বিন্দুমাত্র অনুশোচনাও হয় না তাতে, ঠিক সেইভাবে পাকিস্তানি সেনারা ইচ্ছে হলেই যাকে-তাকে যখন তখন গুলি করে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলছিল।
অনুশোচনা তো দূরে থাক, বরং এটা ছিল তাদের কাছে খুব উত্তেজনাকর এক খেলার মতো। বিড়াল যেমন ইঁদুরকে খেলিয়ে খেলিয়ে শিকার করে, তেমন এক খেলা। তরুন কিংবা যুবকদের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল অজানা গন্তব্যে, যারা যাচ্ছিল, তারা আর ফিরে আসছিল না।
ঢাকা ছিল পাকিস্তানীদের মূল ঘাঁটি, ভয়ংকর আতংকে নীল হয়ে থাকতো এ শহরের মানুষগুলো, রাস্তায় চলতে গিয়ে ভয়ে জমে থাকতো, রাস্তার মোড়ে মোড়ে টহলরত মিলিটারি জিপ থেকে হঠাৎ তাদের ডাকা হবে, জিজ্ঞাসাবাদের নামে লাঞ্ছণা-গঞ্জণা আর গালাগালি চলতে থাকবে, খৎনা হয়েছে কিনা কাপড় খুলে দেখাতে হবে, কপাল ভালো থাকলে মিলিটারি বুটের জোড়া লাথি বা রাইফেলের কুঁদো দিয়ে মুখ বরাবর দু ঘা খেয়েই বেঁচে যাওয়া যাবে সে মুহূর্তের জন্য। আর কপাল খারাপ হলে বন্দুকের নলের মুখে নিয়ে যাওয়া হবে একটু দূরে, তারপর কয়েক মুহূর্ত ঠা ঠা গুলির শব্দ। একটু আগে যারা বেঁচে ছিল, তারা হুট করে প্রাণহীন লাশ হয়ে পড়ে থাকবে শিয়াল-কুকুরের খাবার হবার জন্য, অথবা ভেসে যাবে নদীতে। এটাই ছিল তখনকার দৈনন্দিন ঘটনা।
সেই তীব্র ভয় আর আতংকের উপত্যকায় জুনের দিকে হঠাৎ করেই কয়েকটা অসম দুঃসাহসী ছেলেকে রুখে দাঁড়াতে দেখা গেল। অবিশ্বাস্য দ্রুত তাদের চলাফেরা, নির্লিপ্ত তাদের মুখায়ব; ১৯-২০ বছরের এই অকুতোভয় বঙ্গশার্দুলকে দেখে ‘ভয়’ নামক শব্দটা লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে অভিধানের পাতায় মুখ লুকালো। পুরো ঢাকা শহরে হিট অ্যান্ড রান পদ্ধতিতে একের পর এক ভয়ংকর গেরিলা আক্রমন চালাতে লাগলো এরা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্তরাত্মা কেঁপে গেল, শহরের প্রতিটা জায়গায় প্রায় প্রতিদিন আচমকা একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণে আর অ্যামবুশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী হতভম্ব হয়ে গেল, তাদের আতংক আর ভয়ের সীমা-পরিসীমা রইলো না।
চোখে সানগ্লাস, ঠোঁটে সিগারেট, হাতে স্টেনগান– আধুনিক মডেলের একটা গাড়ি থেকে নেমেই মুহূর্তের মধ্যে নীরবে পজিশন নিতো ওরা। রাজপুত্রের মতো চেহারা আর আধুনিক স্টাইলিশ বেশভূষা দেখে বোঝার উপায় থাকতো না কী ভয়ংকর দুর্ধর্ষ এরা, ঢাকা শহরটা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য একেবারে নরক বানিয়ে তুলেছিল এই বাচ্চা ছেলেগুলো। এদের আক্রমনের তীব্রতায় একসময় সাক্ষাৎ আজরাইল হিসেবে কুখ্যাত পাকিস্তানী হায়েনাগুলো ভয়ে কেমন যেন ইঁদুরের বাচ্চা হয়ে গেল। সারাদিন কোনোরকমে আতংকে নীল হয়ে টহল দিয়ে গেলেও সন্ধ্যার পর রাতের টহলে তাদের আর হ্যাজাক বাতি দিয়ে খুঁজেও পাওয়া যেতো না। হাতি দিয়ে টেনেও বের করা যেত না হাইওয়ানগুলোকে, ‘বিচ্ছু’দের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সিঁটিয়ে গিয়ে গর্তের ভেতর ঢুকে যেতো কাপুরুষের দল।
ঢাকার মানুষগুলোর কাছে ওরা বিচ্ছু নামে পরিচিত ছিল। আর ওদের কমান্ডার দু নম্বর সেক্টর আর কে ফোর্সের কিংবদন্তী সেনানায়ক মেজর খালেদ মোশাররফ ওদের দলটাকে ডাকতেন ক্র্যাক প্লাটুন নামে। তার আর কি দোষ? জুনের প্রথম সপ্তাহে মেলাঘরে গেরিলাদের প্রথম পর্বের ট্রেনিং শেষ হয়ে যাবার পর তাদের ঢাকায় পাঠাবার আগে তিনি বলেছিলেন, জুনের প্রথম সপ্তাহে জাতিসংঘ আর বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা ঢাকা আসবেন ক্র্যাকডাউনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে কিনা দেখতে। যদি তাদের সন্তুষ্ট করতে পারে পাকিস্তানীরা, তবে নতুন করে ঋণ আর সহায়তা পাওয়া যাবে বিশ্বমোড়লদের কাছ থেকে, যা দিয়ে নতুন করে অস্ত্র আর গোলাবারুদ কিনবে পশুগুলো। তাই ঢাকার পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক নয় এবং এখানে যুদ্ধ চলছে সেটা বুঝিয়ে দিতে শহরের বাইরে আর আশে-পাশে র্যান্ডমলি কিছু গ্রেনেড ও গুলি ছুঁড়তে হবে। গ্রেনেড আর গুলি ছুঁড়েছিল ওরা ঠিকই, তবে সেটা ঢাকার আশেপাশে নয়, একেবারে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের লবিতে আর জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলের গাড়িতে!
ভাবা যায়? যেটাকে রীতিমত দুর্গ বানিয়ে পাহারা দিচ্ছে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত অসংখ্য সেনা, সেখানে গিয়ে ধীরে সুস্থে অবলীলায় এরা গ্রেনেড ছুঁড়ে, কয়েক পশলা গুলি করে আবার নির্বিঘ্নে ফিরে এসেছে! এই খবর যখন হেডকোয়ার্টারে বসে বিবিসিতে শুনলেন খালেদ, স্তব্ধ কণ্ঠের খেদোক্তি ঝরল তার গলায়, ‘দিজ আর অল ক্র্যাক পিপল!! বললাম, ঢাকার বাইরে বিস্ফোরণ ঘটাতে আর ওরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এসেছে!’
সেই থেকেই শুরু, মুক্তিবাহিনীর মাত্র এই ১৭ জন গেরিলাই কাঁপিয়ে দেয় পুরো ঢাকা শহর। এশিয়ার সেরা যুদ্ধবাজের দাবীদার এবং হাজার হাজার প্রশিক্ষিত আধুনিক সৈন্য নিয়ে গড়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হঠাৎ উড়ে আসা গ্রেনেড আর আঁৎকা অ্যামবুশে পড়বার ভয়ে ইঁদুরের বাচ্চায় পরিনত হয়। বিশেষ করে পুরো জুলাই জুড়ে চালানো বেশ কয়েকটা ভয়ংকর অপারেশনের পর এক পর্যায়ে ভয়ের চোটে সন্ধ্যার পর পাকিস্তানীদের নিয়মিত টহলে বের হওয়াও বন্ধ হয়ে গেল। সবসময় এক ভয়ংকর আতংক পিছু তাড়া করে বেড়াত তাদের, একযোগে ঢাকার সবকটা অঞ্চলে অপারেশন চালানোয় প্রচণ্ড আতংকিত হয়ে ওরা ভাবতো, হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা বোধহয় ওদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। ভয়ে আরও আতংকিত হতো ওরা। এই অসামান্য বীরত্বগাঁথা চলতেই থাকে, এক পর্যায়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এদের থামাতে দ্বারস্থ হয় তাদের এ দেশীয় পোষা বরাহকূলের, যাদের নাম আলবদর।
ক্র্যাক প্লাটুনে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ঠিক কনভেনশনাল আর্মির প্ল্যাটুনের মত ছিল না। তারা এতটা ক্র্যাক কিংবা মুক্তির প্রশ্নে অবিচল এবং দৃঢ়চেতা ছিল যে ঢাকায় পাকিস্তানী আর্মিদের শক্ত ঘাঁটি থাকা সত্ত্বেও নাড়িয়ে দিয়েছিল তাদের আত্মবিশ্বাস। তাও একবার দুবার নয়, ৯ জুনের প্রথম অপারেশন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার আগের দিনটি পর্যন্ত শ’খানেক সফল আক্রমণে। ঢাকায় অনেকগুলো সফল অপারেশনের নায়ক ছিল আমাদের বর্তমান প্রজন্মের রোমান্টিসিজমে ভরা ক্র্যাক প্লাটুনের বীর সদস্যরা। এই অসামান্য সাহসী গেরিলা দল ক্র্যাক প্লাটুনকে ঢাকায় গেরিলা অপারেশনের জন্য পাঠানো হয়েছিল একাত্তরের ৩ জুন। শুরু হয়েছিল ঘুরে দাঁড়িয়ে পাল্টা আক্রমণের এক অনবদ্য উপাখ্যান!
কিন্তু আজ পর্যন্ত রহস্যেঘেরা আর তরুণ প্রজন্মের প্রবল আগ্রহের এই দুর্ধর্ষ যোদ্ধাদের কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা সম্ভব হয় নি। প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে জুনে যে ১৭ জন তরুণ এবং দৃঢ়চেতা মুক্তিযোদ্ধা ঢাকায় এসেছিল তারা হলেন-
১. আলী আহমেদ জিয়াউদ্দিন (বীরপ্রতীক)
২. মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম)
৩. গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক)
৪. আহমেদ মুনীর ভাষণ (একাত্তরের বুদ্ধিজীবী শহীদ মুনীর চৌধুরীর বড় ছেলে)
৫. আনোয়ার রহমান অনু
৬. মাহবুব আহমেদ শহীদ (প্লাটুন সেকেন্ড ইন কমান্ড)
৭. ফতেহ আলী চৌধুরী
৮. আবু সায়ীদ খান
৯. আবদুস সামাদ (বীরপ্রতীক)
১০. শ্যামল
১১. তারেক এম আর চৌধুরী
১২. শাহাদাত চৌধুরী
১৩. রেজা
১৪. প্রকৌশলী সিরাজ ভুঁইয়া
১৫. জব্বার
১৬. নাজিবুল হক ও
১৭. ইফতেখার।
২৯ অগাস্ট ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্যরা ছিলেন প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষিত এই আরবান গেরিলারা। পরবর্তীতে ঢাকার আশপাশ থেকে এই গণবাহিনীতে আরও অনেক গেরিলা যোগ দেয়। দুই পর্যায়ে সর্বমোট প্রায় শ’খানেকের মত বীর গেরিলার নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে এ পর্যন্ত।
ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম সংগঠক ও কয়েকজনের সাক্ষাৎকারের তথ্য থেকে বা দেয়া তথ্যানুযায়ী এই তালিকা সম্পন্ন করা হয়েছে। তালিকাটি এখনো অসম্পূর্ণ এবং বলা যায় ত্রুটিপূর্ণ। উইকিপিডিয়ায় এই তালিকা মাত্র ৩৩ জনের।
২৯ অগাস্টের আটক এবং পরবর্তীতে শহীদ হয়েছিল যারা তাদের একটা তালিকা করেছি আমরা-
১. শহীদ শফি ইমাম রুমি (বীর বিক্রম)
২. শহীদ আব্দুল হালিম চৌধুরী জুয়েল (বীর বিক্রম)
৩. শহীদ আবু বকর (বীর বিক্রম)
৪. শহীদ আলতাফ মাহমুদ (গীতিকার ও সুরকার)
৫. শহীদ বদিউল আলম বদি (বীর বিক্রম)
৬. শহীদ সেকান্দর হায়াত
৭. শহীদ হাফিজুর রহমান (সেতারবাদক ছিলেন)
৮. শহীদ মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ
৯. শহীদ আবদুল্লাহ হেল বাকী
২৯ অগাস্ট ১৯৭১ সালে বেশীরভাগ গেরিলা ধরা পড়ে যান। গেরিলা আব্দুস সামাদ ’৭১ সালের ২৯ আগস্ট ধরা পড়েন। ধরা পড়া গেরিলাদের মধ্যে আবদুস সামাদ ছিলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি। এর আগে সকাল ১১টায় ধরা পড়েন গেরিলা সদস্য বদিউল আলম বদি (বীর বিক্রম)। মগবাজারের নিয়ন সাইনের মালিক সামাদ ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম যোদ্ধা হওয়ায় তার কাছ থেকে তথ্য বের করবার জন্য এক পর্যায়ে তার ইস্কাটনের বাসা থেকে স্ত্রী এবং তার এক ছোট্ট কন্যাশিশুকে ধরে নিয়ে আসে পাকিস্তান আর্মি। স্ত্রী-সন্তানকে বাঁচাতে নিজের ব্লাড ব্রাদারদের স্যাক্রিফাইস করেন সামাদ। বলে দেন গেরিলাদের ঠিকানা, সঙ্গে গিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দেন তাদের। ফলে একে একে ধরা পড়েন রুমি, জুয়েল, আজাদ, আলতাফ মাহমুদ, হাফিজ, বকর… সবমিলিয়ে প্রায় ১৫ জন। যাদের মাঝে উপরের তালিকার ৯ জন আর কখনো ফিরে আসেননি।
এছাড়াও প্রথম পর্যায়ের বাকি গেরিলারা হলেন-
১০. হাবিবুল আলম (বীরপ্রতীক)
১১. শাহাদাত চৌধুরী (পরবর্তীতে সাংবাদিক ও বিচিত্রা সম্পাদক- তার দুই ভাই ফতেহ আলী চৌধুরী ও মোরশেদ চৌধুরীও গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন)
১২. মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম)
১৩. আলী আহমেদ জিয়াউদ্দিন (বীরপ্রতীক)
১৪. কাজি কামাল উদ্দিন (বীর বিক্রম)
১৫. কামরুল হক স্বপন (বীর বিক্রম)
১৬. ফতেহ আলী চৌধুরী (তার দুই ভাই শাহাদাত চৌধুরী ও মোরশেদ চৌধুরীও গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন)
১৭. আবুল মাসুদ সাদেক চুল্লু
১৮. ইশতিয়াক আজিজ উলফাত
১৯. গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক)
২০. তৈয়ব আলী (বীরপ্রতীক)
২১. আবদুস সামাদ (বীরপ্রতীক)
২২. আবু সাঈদ খান (‘ফিরে দেখা একাত্তর’ গ্রন্থের লেখক)
২৩. সাদেক হোসেন খোকা
২৪. খালেদ আহমেদ
২৫. মো. হানিফ
২৬. নিলু– ১
২৭. নিলু- ২
২৮. আহমেদ মুনীর ভাষণ
২৯. শ্যামল
৩০. নাজিবুল হক
৩১. রুপু
৩২. আবু সালেহ মো. শহীদুলাহ খান বাদল (বর্তমানে ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের প্রকাশক)
৩২. রেজা
৩৩. জব্বার
৩৪. ইফতেখার
৩৫. প্রকৌশলী সিরাজ ভুঁইয়া
৩৬. ড. তারেক মাহফুজ
৩৭. মুজিবর রহমান
৩৮. পুলু
৩৯. মোস্তফা কামাল বকুল
৪০. এএফএমএ হ্যারিস
৪১. হিউবার্ট রোজারিও
৪২. আবুল ফজল সিদ্দিক মনু
৪৩. আকরাম হোসেন মল্লিক ভুলু
৪৪. ডা. মোরশেদ চৌধুরী (তার দুই ভাই শাহাদাত চৌধুরী ও ফতেহ আলী চৌধুরীও গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন)
৪৫. আতিক
৪৬. ওয়াসেফ
৪৭. আনোয়ার রহমান অনু
৪৮. মেসবাহ জাগিরদার
৪৯. মোক্তার
৫০. জিন্নাহ
৫১. কুলি রশিদ (কমলাপুরের কুলি সর্দার)
৫২. শহীদ (ধলপুর)
৫৩. অপু (গোপীবাগ)
৫৪. এমএ খান (‘ম্যাক’ নামে পরিচিত ছিলেন)
৫৫. ফাজলি ( পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম ব্যান্ড ‘Windy Side of Care’ এর লিড গিটারিস্ট)
৫৬. মতিন
৫৭. তারেক এম আর চৌধুরী
৫৮. মাহবুব আহমেদ শহীদ (প্লাটুন সেকেন্ড ইন কমান্ড)
৫৯. মোমিনুল হাসান
৬০. প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম
৬১. আবুল বারাক আলভী
৬২. জহিরুল ইসলাম (একাত্তরের গেরিলা বইয়ের লেখক)
৬৩. জহির উদ্দিন জালাল (বিচ্ছু জালাল নামে সমধিক পরিচিত)
৬৪. মাযহার
৬৫. লিনু বিল্লাহ
পাকিস্তানী হানাদারদের রেইডের পর প্রায় একমাস পর প্রথম পর্যায়ের কিছু গেরিলাসহ দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রায় আরও কিছু বীর গেরিলার সমন্বয়ে ক্র্যাক প্লাটুন পুনরায় ঢাকা শহরের পার্শ্ববর্তী মানিক নগর, মাদারটেক, বাসাবো, বাড্ডা, উত্তরখান প্রভৃতি এলাকায় গেরিলা অপারেশন শুরু করে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকেই এই গেরিলারা পুনরায় সংগঠিত হন। দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্র্যাকপ্লাটুনের যোদ্ধাদের তালিকা-
৬৬. মনোয়ার হোসেন মানিক
৬৭. মাহফুজুর রহমান আমান
৬৮. মকবুল-ই-এলাহি চৌধুরী
৬৯. শরিফ
৭০. নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু
৭১. আজম খান
৭২. রাইসুল ইসলাম আসাদ
৭৩. ওয়ালি মোহাম্মদ অলি
৭৪. হেলাল উদ্দিন
৭৫. মো. ইকবাল ইকু
৭৬. আগা হোসেন শরিফ
৭৭. ড. মেজবাহ উদ্দিন হাসমি
৭৮. সামসুজ্জামান ফরহাদ
৭৯. আমিনুল ইসলাম নসু
৮০. নুরুল হক বাবুল
৮১. আব্দুল্লাহ আল হেলাল
৮২. ইফতেখার আলম টুটুল
৮৩. মতিন – ৩
৮৪. ক্যাপ্টেন কাসেম আনসারি
৮৫. মাসুদুর রহমান তারেক
৮৬. ইফতিখার ইসলাম ইফতি
৮৭. নাজিবুল হক সরদার
৮৮. বিদ্যুৎ
৮৯. তাহের
৯০. মোহন
৯১. মুকুট
৯২. নাজিম উদ্দিন
৯৩. কামাল আহমেদ
৯৪. শামসুল আলম খান রেজভি
৯৫. মাশুক আহমেদ
৯৬. আব্দুল কুদ্দুস
৯৭. হাফিজুর রহমান হারুন
৯৮. সামসুজ্জামান তৈমুর
৯৯. হুমায়ুন কবির
১০০. টারজান
১০১. কাজি রেজাউল কবির রিজু
তরুণ প্রজন্মের রোমান্টিসিজমের এই বিখ্যাত আরবান গেরিলাদের পরিচলনায় কয়েকটি বিখ্যাত সফল অপারেশন হচ্ছে-
১. অপারেশন ফ্লায়িং ফ্ল্যাগস
২. অপারেশন হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল
৩. অপারেশন গ্যানিজ পেট্রল পাম্প
৪. অপারেশন দাউদ পেট্রল পাম্প
৫. ক্র্যাকপ্লাটুনের ‘অপারেশন জর্দার টিন’
৬. অপারেশন এলিফ্যান্ট রোড পাওয়ার স্টেশন
৭. অপারেশন যাত্রাবাড়ী পাওয়ার স্টেশন
৮. অপারেশন আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন
৯. অপারেশন সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন
১০. অপারেশন উলন পাওয়ার স্টেশন
১১. অপারেশন ফার্মগেট চেক পয়েন্ট
১২. অপারেশন তোপখানা রোড ইউএস ইনফরমেশন সেন্টার
১৩. অপারেশন অ্যাটাক অন দ্য মুভ
১৪. অপারেশন ডেস্টিনেশন আননোন প্রভৃতি।
তথ্যসূত্র:
গেরিলাদের তালিকাটা ও অন্যান্য তথ্যগুলো ক্র্যাক প্লাটুনের মুক্তিযোদ্ধা ফতেহ আলী চৌধুরীর কাছ থেকে সংগৃহীত।
গ্রন্থ কৃতজ্ঞতা:
১। ব্রেইভ অফ হার্ট- হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক
২। একাত্তরের দিনগুলি- জাহানারা ইমাম
সারাবাংলা/এসবিডিই
ক্রাক প্লাটুনের গেরিলাদের অসমাপ্ত তালিকা ফিচার মুক্তিযুদ্ধ রহমান রা'আদ